তৃণমূল ছ’বছর থাকবে কি, সন্দেহ মুকুলের! শুভ্রাংশুর সাসপেনশন প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ কটাক্ষ
ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলে সরু সুতোর উপর ঝুলছিল মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের ভাগ্য। ভোট মেটার পর ফলাফল সামনে আসতেই তাঁর ভাগ্যও নির্ধারণ হয়ে গেল।
ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলে সরু সুতোর উপর ঝুলছিল মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের ভাগ্য। ভোট মেটার পর ফলাফল সামনে আসতেই তাঁর ভাগ্যও নির্ধারণ হয়ে গেল। তৃণমূল থেকে ছ-বছর সাসপেন্ড হলেন তিনি। তারপরই মুকুল রায়ের কটাক্ষ, তৃণমূল তো ছ'বছর থাকবেই না, আর ছ-বছরের সাসপেন্ড!
এই মন্তব্যের পাশাপাশি তিনি সাবধান করলেন পুত্র শুভ্রাংশুকে। বললেন, প্রকাশ্যে মুখ খোলায় এবার বিপাকে পড়তে হতে পারে শুভ্রাংশুকে। শুভ্রাংশু এই সাসপেনশন প্রসঙ্গে বলেন, দমবন্ধকরা পরিস্থিতি থেকে বাঁচলাম। যেন মুক্ত বাতাসে ফিরে এলাম। একইসঙ্গে তিনি বলেন, বীজপুর, কাঁচরাপাড়া, হালিশহরে আর তৃণমূল থাকবে কি না সন্দেহ।
বারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীর হারের পর শুভ্রাংশু সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, তিনি বাবার কাছে হেরে গিয়েছেন। তাঁর এই অ্যাটিটিউড প্রদর্শনের পরই তৃণমূলের তরফে তাঁকে সাসপেন্ডের কথা ঘোষণা করা হয়। সেই সাসপেনশন নিয়ে বাবার সাথে শুভ্রাংশ কথা বলেন। তখনই মুকুল রায় বলেন, যেকোনও মুহুর্তে হেনস্থার মুখ পড়তে পারে শুভ্রাংশু।
বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের পুত্র তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রংশু রায়কে দল থেকে বরখাস্ত করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বীজপুরের বিধায়ককে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কখনও তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে বিতর্কিত পোস্ট করেছেন, আবার কখনও তিনি বেফাঁস মন্তব্যে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। তাই এতবড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
উল্লেখ্য, দেড় বছর আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলেই। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তাঁর আদর্শ বলে মেনে নিয়েছিলেন। বলেছিলেন দল তাঁকে তাড়িয়ে দিলেও, তিনি সাধারণ কর্মী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলবেন।
পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছিলেন, দলে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করছে না, সবাই সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ শুভ্রাংশু ফের মূল স্রোতে ফিরে আসেন। কিন্তু দলের প্রতি তাঁর আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন থেকই যায়। এরই মধ্যে শুভ্রাংশুর অসুস্থতায় মমতা নিজে দেখতে যান তাঁকে।
তবে লোকসভা ভোটের আগে যে সমস্যা তৈরি হয় শুভ্রাংশুকে নিয়ে তা শেষ হল বহিষ্কারে। দীনেশ ত্রিবেদী হারতেই শুভ্রাংশুকে সরিয়ে দেওয়া হল দল থেকে। উল্লেখ্য, ভাটপাড়া আর বীজপুরে এসেই দীনেশ ত্রিবেদীকে হারতে হয়। তাতেই কোপে পড়েন শুভ্রাংশও। বিশেষ করে হাসিমুখে বাবার কাছে হেরে গেলাম মন্তব্যই বুমেরাং হয়ে গেল এদিন।