২০১৩-র স্মৃতি-তর্পণে মমতাকে নিশানা মুকুলের, জানালেন জঙ্গলমহলের মানুষ ২১-এর ভোটে কী চান
তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক পর্যালোচনা সভা করার এক সপ্তাহ পরে আদিবাসীদের মধ্যে 'পরিবর্তন' স্লোগান তুললেন বিজেপির 'মোস্ট পপুলার' জুটি কৈলাশ ও মুকুল। জঙ্গলমহল দখলে রাখতে তাঁরা এবার আদিবাসীদের মধ্যে প্রচার চালালেন। পুরনো যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে আবার জঙ্গলমহলকে টার্গেট করলেন মুকুল রায়।

জঙ্গলমহলের লোকেরা ভিক্ষা নয়, চাকরি চায়
বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় জঙ্গলমহলের শিলদায় এক সমাবেশে গিয়ে রাজ্য সরকারকে একহাত নেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করেই তিনি নিশানা বলেন, জঙ্গলমহলের লোকেরা ভিক্ষা নয়, চাকরি চায়। কিন্তু রাজ্যে কোনও চাকরি নেই, শুধু ভিক্ষা দিয়েই দায় সারছে সরকার। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও জঙ্গলমহলে আদিবাসীরা মাথার উপর ছাদ নেই।

মুকুল-কৈলাশ ছাড়াও তৃণমূলকে নিশানা ভারতীরও
শুধু মুকুল রায় ও কৈলাশ বিজবর্গীয়ই নন, তাঁদের সঙ্গে জঙ্গলমহল সফরে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন এসপি ভারতী ঘোষ। তিনি এই সমাবেশে বলেন, লোধা ও শবর সম্প্রদায়ের প্রায় ১১ লক্ষ সদস্য তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বাংলায় বিপিএল রেশন পান না।

২০১৩-র স্মৃতি উসকে মুকুলের খোঁচা মমতাকে
মুকুল রায় বলেন, ২০১৩ সালে বলেছিলেন জঙ্গলমহলের যুবকেরা চাকরি চায়। ২০১৩ সালে এই জায়গায় এসে বলেছিলাম লোককে প্রতি কেজি ২ টাকায় চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল। আমার মনে আছে আমি যখন স্টেজে উঠলাম, তখন দু'জন যুবক আমার কাছে এসেছিল এবং বলেছিল তারা চাল নিয়ে সন্তুষ্ট নয়, তারা চাকরি চায়।

গত সাত বছর ধরে মুকুলের কানে বাজছে যে কথা
মুকুল রায় বলেন, ওই কথাটি গত সাত বছর ধরে আমার কানে বাজে। এখনও সেই ভিক্ষা দেওয়ার কাজ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে এমন একটি উন্নয়নও হয়নি শিলদায়। এই শিলদাতেই ২০১৩ সালে বাক স্বাধীনতা হরণের সাক্ষী ছিলাম আমি। স্থানীয় কৃষক শিলাদিত্য জানতে চেয়েছিলেন- কৃষকের কী হবে। তারপর তাঁর জুটেছিল মাওবাদী তকমা।

চাকরি চাই, বাক স্বাধীনতার অধিকার চাই
মুকুল রায় আরও বলেছিলেন, চাকরি চাই, বাক স্বাধীনতার অধিকার চাই। তৃণমূল মানুষকে ভয় দেখাতে পারে। তবে জঙ্গলমহলের মানুষ তাদের মনকে দৃঢ় করেছে। তারা একজন সদর্থক প্রার্থীকেই ভোট দেবে। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে বিজেপি এই জাতীয় লোককেই টিকিট দেবে। আমার জয় নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই ঝাড়গ্রামের চারটি বিধানসভা আসনই বিজেপি জিতবে।

মোদীর তুলনা দিয়ে মমতাকে কাটমানি খোঁচা
বিজয়বর্গীয় বলেন, "প্রধানমন্ত্রী মোদি দরিদ্র আদিবাসীদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কাটমানির সমস্যার কারণে এই স্কিমটি সঠিকভাবে প্রয়োগ করতেই পারেননি। তিনি কথা দেন, জঙ্গলমহলে কোনও আদিবাসী আবাসন প্রকল্প থেকে বাদ পড়বে না। শুধু একবার বিজেপিকে বাংলায় ক্ষমতায় আনুন।

আদিবাসীদের প্রতারিত হওয়ার কথা ভারতীর কণ্ঠে
ভারতী ঘোষ বলেন, আদিবাসীরা তৃণমূল সরকারের আমলে কার্যত প্রতারিত হয়েছেন। জঙ্গলমহলে লোধা-শবর সম্প্রদায়ের প্রায় ১১ লক্ষ সদস্য এপিএল রেশন পাচ্ছেন। তাঁদেরকে বিপিএলের আওতাভুক্ত করেনি রাজ্য। রাজ্য সরকার উপজাতি উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করেছে, তবে সেই বোর্ডে মাঝিদের কোনও প্রতিনিধিত্ব নেই। জঙ্গলমহলে সাঁওতালিদের সমস্ত স্কুল প্যারাটিচারদের দ্বারা পরিচালিত হয়।

দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা, সাবধানতার পাশাপাশি রয়েছে উন্মাদনাও