মুকুল যে অঙ্কে গড়েছিলেন তৃণমূল, বিজেপির ভিতও সেই অঙ্কে! সেই একই সূত্র প্রয়োগ
তাঁর কাছে একেবারে সোজা অঙ্ক। এ অঙ্ক আগেও কষেষেন। আবারও কষছেন। মুকুল যে এই অঙ্কের খেলায় বিশেষ পারদর্শী! সূত্র যখন জানা, তখন অসুবিধা হওয়ার কথাই নয়। তার প্রমাণ তিনি দিয়ে চলেছেন পরতে পরতে। ২১ বছর আগে তিনি
তাঁর কাছে একেবারে সোজা অঙ্ক। এ অঙ্ক আগেও কষেষেন। আবারও কষছেন। মুকুল যে এই অঙ্কের খেলায় বিশেষ পারদর্শী! সূত্র যখন জানা, তখন অসুবিধা হওয়ার কথাই নয়। তার প্রমাণ তিনি দিয়ে চলেছেন পরতে পরতে। ২১ বছর আগে তিনি যে খেলায় কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন, এখন সেই অঙ্কেই বিজেপির ভিত গড়ছেন বাংলায়।
তিন বিধায়ক ও ৫০ জন কাউন্সিলরকে বিজেপিতে যোগদান করিয়ে মুকুল রায় হুঙ্কার ছেড়েছেন, এমন অবস্থা হবে যে রাজ্যে বিরোধী মর্যাদা পাবে না তৃণমূল। আবার ১২ জন কাউন্সিলরকে যোগদান করিয়ে অর্জুন সিংয়ের হুঙ্কার তৃণমূলকে শেষ করে ছাড়ব। মুকুল-অর্জুনের কথা তুলে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানান, যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, তেমনই দফায় দফায় তৃণমূলকে ভাঙব আমরা। রাজ্যে তৃণমূল শেষ। এবার বিজপি সরকার হবে।
এদিন দিল্লিতে মহা-যোগদান মঞ্চে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে কাউন্সিলরদের যোগদানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় পাঁচ পুরসভায় তৃণমূল সংকটে পড়তে চলেছে। এরমধ্যে চারটি পুরসভায় ইতিমধ্যেই সংখ্যা বিজেপির পক্ষে। আর একটি পুরসভাতেও তৃণমূল ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে পারে।
ঠিক এইভাবেই ধাপে ধাপে কংগ্রেসকে ভেঙে বড় হয়ে উঠেছিল তৃণমূল। তারপর সিপিএমের ৩৪ বছরের শাসনের বিনাশ ঘটিয়ে রাজ্যে এক নম্বর দল হয়ে উঠেছিল তৃণমূল। আর তৃণমূলকে এই জায়াগায় পৌঁছে দেওয়ার নেপথ্য কারিগত ছিলেন মুকুল রায়। তিনিই নিজ হাতে তৃণমূলের সংগঠন সাজিয়ে ছিলেন।
এখন বিজেপিতে গিয়ে মুকুল সেই খেলাটাই শুরু করেছেন। বিজেপির সংগঠন বাড়াতে প্রয়োগ করছেন একই সূত্র। সেই সূত্রের প্রয়োগে সাফল্য মিলবে, তা আগেই জানিয়েছিলেন মুকুল রায়। বলেছিলেন একটা নির্বাচনে খানিক সাফল্যই তৃণমূলকে ভেঙে রাজ্যে বিজেপির উত্তরণের পথ করে দেবেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মমতায় আস্থা হারিয়ে মুকুল-পুত্র যোগ দিলেন বিজেপিতে, দেড় বছরের জল্পনার অবসান ]
সেইমতো লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সাফল্য পেতেই মুকুল রায় বিপক্ষকে ভাঙার সুযোগ পেয়ে গেলেন। যেভাবে একটা একটা করে পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ দখলে এনেছিলেন তৃণমূলের, এখন বিজেপির দখলে আনতে তিনি সেই পদ্ধতিই প্রয়োগ করেছেন। এই মুহূর্তে নিজেকে বিজেপিতে অপরিহার্য করে তুলেছেন তিনি।
দেড় বছর আগে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি ব্যর্থ হচ্ছিলেন একের পর এক নির্বাচনে। নিজের গড়ে তিনি ধাক্কা খেয়েছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের সাফল্যের পরই তাঁর পালে হাওয়া বইতে শুরু করে। তারপর লোকসভা নির্বাচনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি মাত করে দিলেন। ১৮ আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়ে বর্তমানে মুকুল রায়ই বিজেপির হিরো।