মুকুলের অভাব বোধ তৃণমূল কংগ্রেসের! বিজেপিতে পরিসর পাচ্ছেন না মুকুলও, জল্পনা তুঙ্গে
মুকুলের অভাব বোধ তৃণমূলের! বিজেপিতে পরিসর পাচ্ছেন না মুকুলও, জল্পনা তুঙ্গে
তৃণমূল কংগ্রেস তাহলে এতদিন পর বুঝতে শুরু করেছে মুকুল রায় তাঁদের দলে অপরিহার্য ছিল। মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পর তৃণমূল দাবি করেছিল মুকুলকে হারিয়ে কোনও ক্ষতি হবে না দলের। এমনকী তাঁকে গুরুত্ব দিতেও রাজি ছিল না তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু ২০১৯-এ মুকুল-ফ্যাক্টর বুঝি্য়ে দিয়েছে তাঁর গুরুত্ব।
মুকুলকে নিয়ে জল্পনা ও তৃণমূল
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরাজয়ের পর থেকেই তৃণমূল বুঝতে পারে, মকুলকে ছেড়ে দেওয়া তাঁদের ক্ষতি হয়েছে। মুকুলের হাত ধরে অনেক অনুগামী বিজেপিতে চলে গিয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে ভোটে। তারপর থেকেই মুকুলকে নিয়ে জল্পনা ছড়াতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ মুকুলের!
করোনার আগে থেকেই রাজনৈতিক মহলে একটা প্রচার রয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মুকুল রায়। তা নিয়ে প্রচার এমন পর্যায়ে যায় যে, মুকল রায়কে সাংবাদিক বৈঠক করে বলতে হয়, তিনি বিজেপিতেই আছেন, বিজেপিতেই থাকবেন। কিন্তু জল্পনার পারদ কমেনি।
মুকুল রায় এবং তৃণমূল- ভাবাচ্ছে।
তৃণমূল তারপরও কুণাল ঘোষের মতো একদা মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের দিয়ে জল্পনার বাতাবরণ তৈরি করে রেখেছে। কুণাল ঘোষ সর্বদাই মুকুল রায়কে টার্গেট করে একটা না একটা এমন মন্তব্য করে যাচ্ছেন যে, মুকুলকে নিয়ে ভাবতে হচ্ছে সবাইকেই। মুকুল রায় এবং তৃণমূল- উভয়ের কাজকর্মই পাঠককূলকে ভাবাচ্ছে।
আগের মতো রণং দেহি মুর্তি উধাও
সম্প্রতি প্রশ্ন উঠছিল, তৃণমূলের বিরুদ্ধে আগের মতো রণং দেহি মুর্তিতে তো দেখা যাচ্ছে না মুকুল রায়কে। করোনার সময় থেকেই মুকুল একেবারেই নীরব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কারও বিরুদ্ধে গর্জে উঠছেন না মুকুল রায়। মুকুল রায় নিজেকে আড়াল করেই রেখেছিলেন একটু, কিন্তু তা করোনা থেকে সাবধানতা অবলম্বন করেই, ব্যাখ্যা তাঁর।
মুকুল রায় ও বিজেপি, একটু দূরত্ব
করোনাকালে মুকুল রায়কে তৃণমূলের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হতে দেখা যায়নি। মুকুল রায়কে সেভাবে দেখা যায়নি বিজেপির কোনও অনুষ্ঠানেও। সম্প্রতি কৈলাশ বিজয়বর্গীয় রাজ্যে আসার পর মুকুল রায়কে দু-একটি কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে জঙ্গলমহলে গিয়ে খানিকটা সরব হন মুকুল রায়।
তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব মুকুলের
মুকুল রায় যে বিজেপিতে থেকেও তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন, তার ফলও পেলেন হাতেনাতে। সম্প্রতি তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় চার্জশিটে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নাম থাকলেও, মুকুল রায়ের নাম অভিযুক্ত হিসেবে রাখা হয়নি। তাঁকে রাখা হয়েছে সন্দেহভাজন বলে। তৃণমূল তাঁর প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূলেরও নরম মনোভাব মুকুলের প্রতি
আসলে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়ে এসে মুকুল রায়ের অগ্রগতি রুদ্ধ করে দিলেও মুকুলের অভাব পরিপূর্ণ হওয়া নয়। তাই তৃণমূলের একটু নরম মনোভাব তৈরি হয়েছে মুকুল রায়ের প্রতি। আবার বিজেপিতে কাজের পরিসর পাচ্ছেন না মুকুল রায়। তাই নিজেকে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। মুকুলবাবু নিজেও বেশ অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
মুকুল ও মমতা অভাব বোধ করছেন
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুকুল রায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- উভয়েই উভয়ের অভাব বোধ করছেন। কোথাও একটা শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে। তৃণমূল বুঝতে পারছে- মুকুল রায় কত বড় ভূমিকা পালন করেছেন দলে। তা পূরণ করতে প্রশান্ত কিশোরের মতো ভোট কৌশলীকে আনতে হয়েছে। আর মুকুল রায় আগের মতো স্বাধীনতা পাচ্ছেন না কাজে। আর যাই হোক তিনিই তো ছিলেন সেকেন্ড ইন কম্যান্ড!
প্রশান্ত কিশোরের মাস্টারস্ট্রোক! 'আইটি-স্ট্রং' বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ 'নবীশ' তৃণমূলের