গুরুংয়ের 'ফতোয়া'য় পাহাড় ছেড়ে ঘরমুখী পর্যটকেরা, আশঙ্কার মেঘ পাহাড় পর্যটনে
মমতার কড়া অবস্থানে গুরুং পিছু হটেছে বলে সমায়িকভাবে মনে হলেও, গুরুং পাহাড়ে সরকারি অসহযোগ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। তার প্রভাবে সাংঘাতিক ক্ষতির মুখে পর্যটন শিল্প।
একদিনের বনধ শেষে মোর্চার মনোভাবে অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিলেন। এবার বোধ হয় মেঘ কাটল। অন্ধকার সরে আলো জ্বলে উঠল পাহাড়ে। আর অশান্তি নয়। মমতার কড়া অবস্থানে লেজ গুটিয়েছে মোর্চা বাহিনী! কিন্তু সেটা যে গুরুংয়ের পাল্টা চাল, বোঝেননি অনেক পর্যটকই। তাই ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে থেকে গিয়েছিলেন অনেকেই। এবার গুরুংয়ের হুঙ্কারে পালাই পালাই রব উঠেছে পাহাড়ে। ফলে বিশাল ক্ষতির মুখে পর্যটন শিল্প।
যদিও মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং ঘোষণা করেছিলেন, পর্যটন শিল্পকে এই বনধের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ পরিষেবা চালু থাকবে, দোকানপাট খুলবে, হোটেল পরিষেবাও চালু থাকবে। পর্যটকদের কোনও সমস্যা করা হবে না তাঁদের সরকারি অফিস বন্ধের কর্মসূচিতে। কিন্তু সেই ঘোষণাই সার। মোর্চার জঙ্গি আন্দোলনের ভয়ে কেউ এখন পাহাড়মুখো হতে চাইছেন না। যাঁরা রয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা এখন পাহাড় থেকে ফিরতে পারলেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন।
গুরুং মুখে পর্যটকদের আশ্বস্ত করলেও, প্রকারান্তরে 'ফতোয়া' জারি করেছেন। বলেছেন, পাহাড়ে আন্দোলন আরও তীব্র হবে। তাই গোলমালের আশঙ্কা করে রবিবার থেকেই বুকিং বাতিলের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। তাঁদের কথায়, দু'পক্ষেরই কেউ নমনীয় নয়। তার প্রভাব পড়ছে পর্যটন ক্ষেত্রে। স্থানীয় দলকে যেমন জবরদস্তি করার রাস্তা থেকে সরে আসতে হবে, তেমনই রাজ্য সরকারকে দেখতে হবে যাতে অশান্তি না ছড়ায়। কিন্তু তা না হওয়ায় পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসা বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা কাজল শি সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন পাহাড়ে। কিন্তু অশান্ত পাহাড় থেকে বুকিং বাতিল করে বাড়ি ফিরছেন। এরকম অনেকেরই হোটেল বুকিং ছিল আরও তিন-চারদিনের। কিন্তু কেউই আর ঝুঁকি নিচ্ছে না। প্রায় ৯০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে হোটেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। ট্যুর অপারেটার্সদের অভিমত, এইভাবে পাহাড়ের পর্যটন শিল্পকেই শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এখনই সরকারের উচিত এই বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া।