‘প্রিয়রঞ্জনের অবদান ভুলবে না বাংলা’, বিরোধী সিপিএম সাংসদের মুখেও ঢালাও প্রশস্তি
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির মৃত্যুতে বাংলা হারাল একজন পরিপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ বিরোধী সিপিএমেপ সাংসদ মহম্মদ সেলিমের। তিনি বললেন, প্রিয়রঞ্জনের অবদান ভোলার নয়।
শুধু যে দলে নয়, তাঁর গুণগ্রাহী বিরোধী শিবিরেও রয়েছেন, তা প্রমাণ হয়ে গেল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির মৃত্যুতে। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে সবাই শোকজ্ঞাপন করেন, কিন্তু বিরোধী দলের নেতার সম্পর্কে এত প্রশস্তি শোনা যায় না কোনও সময়েই। এদিন প্রিয়রঞ্জনকে নিয়ে প্রশস্তিতে ভরিয়ে দিলেন সিপিএমের সাংসদ।
[আরও পড়ুন:'তাঁর হাত ধরেই কংগ্রেসে, আজ তাঁর মরদেহে প্রথম মাল্যদান', সন্তপ্ত সাংসদ]
রায়গঞ্জের ভূমিপুত্র প্রিয়রঞ্জন পৃথিবীয় মায়া কাটিয়ে চলে গিয়েছেন পরলোকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকবিহ্বল গোটা বাংলা। জাতীয় রাজনীতিতে আজ প্রিয়কে হারিয়ে শোকসন্তপ্ত। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রয়াণে এদিন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমও জানালেন তাঁর শোকবার্তা।
তিনি বলেন, 'প্রিয়বাবুর মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। তাঁকে আমার অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাঁর স্ত্রী-পুত্র, আত্মীয়-পরিজন, সকল গুণগ্রাহীকে আমার পক্ষ থেকে সমবেদনা জানাচ্ছি। দীর্ঘদিন কাজ করেছি সংসদীয় রাজনীতিতে। তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ছিল। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও তা কখনও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে যায়নি।'
তিনি বলেন, 'তাঁর মতো সুবক্তা, সুদক্ষ সংগঠক, মন্ত্রী, ক্রীড়া সংগঠক, সংস্কৃতিমনা নেতা খুবই বিরল ছিল ভারতীয় রাজনীতিতে। এখন যেমন রাজনীতি হচ্ছে, মাথায় বোম মারা, ঠ্যাং ভেঙে দেওয়ার রাজনীতি, তা তখন ছিল না। তাই চরম প্রতিকূল অবস্থাতেও আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল।'
'তারপর প্রিয়বাবু সংসদীয় ক্ষেত্র থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গ তথা বাংলার জন্য প্রচুর কাজ করেছেন। উত্তরবঙ্গের মানুষ তা কখনও ভুলবে না। রায়গঞ্জের মানুষ, বাংলার মানুষ চিরকাল শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তাঁকে স্মরণ করবে। তাঁর অবদান কোনওদিনই ভোলার নয়।' শোকজ্ঞাপন করে এ কথা বলেন সেলিম।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রিয়রঞ্জনের গড়েই সিপিএমের সাংসদ নির্বাচিত তিনি। প্রিয়-পত্নীকে হারিয়েই তিনি সংসদে গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও প্রিয়রঞ্জনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা রাজনীতির সৌজন্যে দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবে। রাজনীতির উর্ধ্বে যে আরও একটা সম্পর্ক থাকতে পারে, তা-ই এদিন তাঁর শোকবার্তায় তুলে ধরেন সেলিম। বর্তমান রাজনীতির সংকীর্ণতাকেও তিনি আঘাত করেন। বুঝিয়ে দেন রাজনীতি হওয়া উচিত ওই মার্গেরই, যেখানে ব্যক্তি আক্রোশ থাকবে না। হবে মতাদর্শের লড়াই।