কন্যাশ্রীর দফতরে ফোন করে নিজের বিয়ে আটকাল নাবালিকা
কন্যাশ্রীর দফতরে ফোন করে নিজের বিয়ে আটকাল নাবালিকা
বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের অমরুলগাছা গ্রামের ঘটনা। বৃহস্পতিবার বছর ১৭ এর নাবালিকা ছাত্রী তুহিনা খাতুনের সঙ্গে বছর ২০ এর বসিরহাটের এক যুবকের সাথে বিয়ে হচ্ছিল শাস্ত্র মতে। বিয়ের আয়োজন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আনাগোনা থেকে শুরু করে মেয়ের মেহেন্দি সব হয়ে গিয়েছে। শুধু বর আসার অপেক্ষা। বিয়ের সানাই বাজছে।
ইতিমধ্যে সেই ছাত্রী নিজের সহপাঠীদের সহযোগিতায় কন্যাশ্রী দপ্তরে ফোন করে তার অপ্রাপ্ত বয়সে জোর করে বিয়ে দেওয়ার কথা জানায় সেই সময় দুপুর বারোটা নাগাদ কন্যাশ্রী দপ্তরের আধিকারিক প্রণব মুখার্জি হাসনাবাদ ব্লকের বিডিও অরিন্দম মুখার্জীর সহযোগিতা নিয়ে হাসনাবাদ থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সটান আমরুলগাছা গ্রামে নাবালিকা ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যান। বিয়ের আসর আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা।
বাল্যবিবাহ রোধে লাগাতার কাজ করে চলেছে হাসনাবাদ ব্লক। কেন নাবালিকা ছাত্রীকে বিয়ে দিচ্ছেন এমনই প্রশ্ন করা হয় ছাত্রীর বাবা জনাব আলী সরদারকে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি, সরকারি প্রকল্প রয়েছে শিক্ষা থেকে শুরু করে কন্যাশ্রী ও রুপশ্রী থাকা সত্ত্বেও কেন মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছেন? এর পড়াশোনার দায়িত্ব সরকার নিচ্ছে। এই কথা শোনার পরে বাবা ও পরিবারের লোকেরা এক জায়গায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানান আগামী দিনে তার মেয়েকে আরও পড়াশুনা করাবেন। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন পাশাপাশি রুপশ্রী সুবিধা পাবেন।
সব মিলিয়ে যতক্ষণ মেয়ে সাবালিকা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা মেয়েকে বিয়ে দেবেন না। পাশাপাশি নাবালিকা ছাত্রী বলেন আমি চকপাটলি হাইস্কুলে ২০২১ এ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। আমি পড়াশোনা করতে চাই। এই ঘটনা শোনার পর একদিকে গ্রামের মানুষ যেমন বাহবা দিচ্ছে ছাত্রীর এই সিদ্ধান্তকে। অন্যদিকে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে সহপাঠীরাও সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছে। সরকারি আধিকারিকরা বাবার জনাব সর্দারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে নেন।