তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট-ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে এল 'মিম'! সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মমতা
তৃণমূলের অশনি সংকেত বয়ে আনছে মিম। মমতার বাংলায় প্রবেশ করছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মিম। তারা শুধু প্রবেশই করছে না, গত পাঁচ দিনে তিন লক্ষেরও বেশি সদস্যপদ সংগ্রহও করেছে তারা।
তৃণমূলের অশনি সংকেত বয়ে আনছে মিম। মমতার বাংলায় প্রবেশ করছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মিম। তারা শুধু প্রবেশই করছে না, গত পাঁচ দিনে তিন লক্ষেরও বেশি সদস্যপদ সংগ্রহও করেছে তারা। ইতিমধ্যেই মিমের পক্ষে থেকে হুঙ্কার ছাড়া হয়েছে, ২১টি জেলায় তারা কার্যালয় খুলবে। ২৯৪টির মধ্যে ২২০টি কেন্দ্রে তারা আধিপত্য বিস্তার করবে।
সংখ্যালঘু ভোটে আড়াআড়ি বিভাজন
বাংলায় সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত এলাকায় আসাদউদ্দিন ওয়েসির অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসালিমিন সংক্ষেপে মিমের সমর্থন রয়েছে। এতদিন বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট যেত তৃণমূলের ঝুলিতেই। এবার সেই ভোটে আড়াআড়ি বিভাজন ঘটিয়ে দিতে চলেছে হায়দরাবাদের মিম। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে তণমূল কংগ্রেস।
বাংলায় প্রবেশ করেই সদস্য সংগ্রহ
এআইএমআইআইএম বা মিম বাংলায় প্রবেশ করেই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে পড়েছে। মিমের দাবি, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় তারা দলীয় কার্যালয় খুলছে। অন্যান্য রাজ্যেও তারা কার্যালয় খুলবে শীঘ্রই। রাজ্যের ২২০টি বিধানসভা কেন্দ্রকে তারা পাখির চোখ করছে। আর মিমের এই লক্ষ্যে তৃণমূল এই ২২০টি কেন্দ্রে মুসুলম ভোট হারাতে পারে।
৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ সাড়া
সংসদে সিএবি নিয়ে ভোটাভুটির দিন তৃণমূলের আট সংসদ সদস্যের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে মিম প্রত্যাঘাত করেছে মমতার দলকে। সিএএ-তে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছে। আর এই বার্তাতেই ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ সাড়া দিয়েছে। দাবি, বাংলার বেশিরভাগ ব্লকে মিমের সদস্যদের উপস্থিতি দৃশ্যমান।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিজেদের দিকে টানতে
মিমের পক্ষে থেকে জানানো হয়েছে, দার্জিলিংয়ে সম্প্রতি আমাদের ইউনিটটি চালু করেছি। মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর জেলায় কমপক্ষে ৫৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে আমাদের উপস্থিতি রয়েছে। মিমও বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি এবং এনপিআর ইস্যুতে প্রচার চালিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করবে।
মিমের রাজনীতিতে বাংলায় বিজেপির সুবিধা
মিমের এই রাজনীতি বাংলায় বিজেপিকে সহায়তাই করবে। যদি মিম ২ থেকে ৩ শতাংশ মুসলিম ভোট নিজেদের দিকে টেনে নিতে পারে, তবে অনেক আসনেই তৃণমূলকে কাত করে দেবে বিজেপি। হিন্দু ভোটারদের একটি বড় অংশ বিজেপির প্রতি তাদের আনুগত্য বজায় রেখেছে। তাই মিমমের ভোট কাটাকাটিতে বিজেপি মাইলেজ পেয়ে যাবে বাংলায়।
তৃণমূল বিজেপির বি টিম, বলছেন ওয়েইসি
মিম এনআরসি-সিএএ-এনপিআরের বিরোধিতার পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাবে এই বলে যে, তৃমূল ১০ বছরে সংখ্যালঘুদের দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখতে পারেনি। বাংলার মানুষ মমতার আসল চেহারা বুঝতে পেরেছে। এরা লোকসভা সিএবি-কে সমর্থন দিয়েছে ভোটদান থেকে বিরত থেকে। এতেই পরিষ্কার বিজেপির বি টিম কে।
মিমের বঙ্গে প্রবেশ ঘুম কাড়বে তৃণমূলের
২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন সখ্যা বেড়েছে। ২০১৪-তে মাত্র দুটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এবার তারা ১৮টি আসন লাভ করে। আর তৃণমূলের লোকসভা আসন ৩৪ থেকে কমে ২২-এ নেমে যায়। তারপর যদিও উপনির্বাচনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল, তথাপি মিমের বঙ্গে প্রবেশ ফের তাদের ঘুম কেড়ে নেবে।
মানুষ বুঝতে পেরেছে মিমের পোশাকে বিজেপি
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এআইএমআইএমকে ভীতির কারণ হিসাবে বিবেচনা করছে না। তৃণমূলের দাবি, মানুষ বুঝতে পেরেছে বিজেপি মিমের পোশাকে বাংলায় এসেছে। বাংলার ভোটাররা বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করেছে। তিনটি আসনের সাম্প্রতিক ফলাফলে তা প্রতিফলিত হয়েছে বেল জানান। তাই মিমকে এনে রাজনৈতিক সমীকরণ ঘেঁটে দেওয়ার একটা প্রয়াস চালাচ্ছে মাত্র।