দোলের আগে করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে মায়াপুরকেও
দোলের আগে করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে মায়াপুরকেও
এবার করোনা ছড়িয়েছে নবদ্বীপের মায়াপুরেও। নোবেল করোনা ভাইরাস যখন দিল্লি শহরজুড়ে মৃত্যুর হার বাড়িয়ে চলেছে ঠিক সেই সময় করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে মায়াপুরেও। কারণ দোল উপলক্ষ্যে এখানে অগণিত ভক্তের সমাগম হয়। তাই অন্যান্য বছরের মতো এবার হচ্ছে না দোল উৎসবের আড়ম্বর। এবছর মন্দিরের কাজ সমাপ্ত হওয়ায় বিরাট করে দোল উদযাপনের আশা করা হয়েছিল। তবে তা এবছর সম্ভব হচ্ছে না।
দোল, বসন্তের উৎসব সেই উপলক্ষ্যে প্রতি বছরই যেন লীলা ক্ষেত্র হয়ে ওঠে মায়াপুর। কিন্তু এবারের চিত্রটা অন্য। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক যেনো গোটা চিত্র টাই বদলে দিয়েছে। যে নবদ্বীপে দোল লাগলেই চৈতন্যধামের রূপ বদলে যেতো সেই নবদ্বীপ যেনো এবার যেনো বিবর্ণ। নগরের কোল ঘেঁষে বেয়ে চলা নদীর স্রোতের মতো মানুষের ঢল নামে এখানে। দিন রাত চলে মহোৎসব। মিছিলে খল করতলের তাকে তালে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটে দেশী বিদেশী সকল ভক্তেরা, আমেরিকা আর নবদ্বীপ মিশে একাকার একাকার হয়ে যায়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা লাখো মানুষ অসংখ্য ছোট-বড় মিছিলে ঘুরে বেড়ায় চৈতন্যস্মৃতি বিজড়িত বৃহত্তর নবদ্বীপে। নানা ভাষার বিচিত্র উচ্চারণে কৃষ্ণনামে ভরে যায় আকাশ বাতাস। কিন্তু এবার করোনা আতঙ্কে মাটি সব।
দোল উপলক্ষ্যে চিন থেকে পঁয়তাল্লিশ জন আসার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞার ফলে এসেছেন মাত্র দু'জন। বাকিদের ইচ্ছা থাকলেও আসা সম্ভব হয়নি। আসলে ওই পঁয়তাল্লিশ জনই চিনের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা। তাঁরা দল বেঁধে দোলের সময়ে মায়াপুর ইস্কনের নবদ্বীপ মণ্ডল পরিক্রমায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। কয়েক মাস আগে যখন তাঁরা এ সব পরিকল্পনা করেছিলেন, তখনও করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়নি চিন সহ অন্যান্য দেশ। এছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে প্রতি বছরই আসেন হাজার হাজার বিদেশি ভক্ত কিন্তু এবার আসতে পারছে না কেউই।
এছাড়াও এই দোল উৎসব উপলক্ষে চতন্য দেবের জন্ম ক্ষেত্রে আসেন এরাজ্যেরই বহু মানুষ কিন্তু করোনা আতঙ্কে বিদেশি - বিদেশিনী এড়াতে এবার আসছে না অধিকাংশই। ফলে গোটা দল উৎসবের এবার জল ঢেলে দিল করোনা। পায়ে পায়ে ছুঁয়ে যাওয়া চৈতন্যধামের ভগ্ন দেউল, নদীর পাড়, প্রান্তর, পাড়া গাঁ সবই ফাঁকা।
মায়াপুরের ইস্কন মঠ সূত্রের খবর, 'করোনাভাইরাসের কারণে একের পর এক বিদেশি ভক্তের আসা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। চিনের কেউ আসেননি। জাপান, কোরিয়া, হংকং থেকে কারও আসার কোনও উপায় নেই। শুধু বিদেশি ভক্ত বলে নয়, সামগ্রিক ভাবেই এবারে মানুষের ঢল এখনও পর্যন্ত বেশ কম।'
মায়াপুর ইস্কনের এক আধিকারিক বলেন, 'অন্য বারের তুলনায় এবার আড়ম্বর কম। করোনার সংক্রমণ নিয়ে সারা বিশ্ব আতঙ্কিত। ফলে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চাননি। যে সমস্ত বিদেশি ভক্তরা এসেছেন তারা এই সংক্রমণের আগেই এসেছেন।