শান্তনুর ভোলবদলে ক্ষুব্ধ মতুয়ারা! একুশের আগে নাগরিকত্ব ইস্যুতে বদলাচ্ছে সমীকরণ
শান্তনুর ভোলবদলে ক্ষুব্ধ মতুয়ারা! একুশের আগে নাগরিকত্ব ইস্যুতে বদলাচ্ছে সমীকরণ
মতুয়ারা নাগরিক না নাগরিক নন- তা নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্বের মধ্যে ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপির সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ২০১৯ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এখন একুশের আগে হঠাৎ ভোলবদলে মতুয়ারা ক্ষুণ্ণ সাংসদের প্রতি।
অমিত শাহ আসার আগে ভোলবদল শান্তনু ঠাকুরের
শান্তনুর কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে ব্রাত্য রেখে নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় মতুয়া সমাজ ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে। কিন্তু দু-বছর হতে চলল, কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই সেই নাগরিকত্ব প্রদানের ব্যাপারে। ঠাকুরনগরে অমিত শাহ আসার আগে ভোলবদলে শান্তনু ঠাকুর বলছেন, আমি এমন প্রতিশ্রুতি দিইনি ২০২১-এর ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু হোক।
মতুয়াদের প্রতিশ্রুতি পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বিজেপি
শান্তনু ঠাকুরের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বর্তমান দাবিতে মতুয়া সমাজ ক্ষুণ্ণ। বনগাঁ ও রানাঘাটে মতুয়ারা বিজেপিকে জয়ী হতে সাহায্য করেছিল। এখন তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ বিজেপি। মতুয়ারা ভোটের পর থেকেই চাপ সৃষ্টি করছিল, কিন্তু মোদী সরকার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সিএএ ও এনসি নিয়ে স্পিকটি নট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীদের আন্দোলনের ফলে।
নাগরিকত্ব আইন, শান্তনুর বিবৃতিতেই ক্ষুব্ধ মতুয়ারা
শনিবার বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইন লাগুর জন্য তাঁরা কোনও সময়সীমা বেঁধে দেননি। কেন্দ্র তার সুবিধামতো নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করবে। শান্তনুর এই বিবৃতিতেই ক্ষুব্ধ মতুয়া সমাজ। কিছুদিন আগে পর্যন্ত মতুয়া সমাজের দাবির সঙ্গেই সুর মিলিয়ে চলছিলেন শান্তনু। অমিত শাহ আসার আগে হঠাৎ তিনি সুর বদল করলেন।
বিজেপির অন্য নেতাদের সুরেই সুর মেলাচ্ছেন শান্তনু
বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন শান্তনু এই মতুয়াদের নগারিকত্ব প্রদান ইস্যুতে। তিনি অমিত শাহের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন। বেসুরো শান্তনুকে বাগে আনতে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে মুকুল রায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পর্যন্ত বৈঠক করেন। শেষে তাঁর মানভঞ্জন হয়। এবার তিনি বিজেপির অন্য নেতাদের সুরেই সুর মেলাচ্ছেন।
এখনই লাগু হচ্ছে না সিএএ! অমিতের বিবৃতির পর
শান্তনু এতদিন দাবি করছিলেন, সিএএ কবে লাগু হবে, কবে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবে, তা অবিলম্বে জানালে হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বোলপুরে ব়্যালিতে এসে অমিত শাহ জানিয়ে দেন, সিএএ লাগু করার মতো পরিবেশ দেশ নেই, তেমন কোনও সহায়ক আইনও নেই। তাই এখনই লাগু হচ্ছে না সিএএ। এরপরই শান্তনু আওয়াজ তোলেন অমিত শাহ ঠাকুরনরে এসে স্পষ্ট করুন বিষয়টি।
শান্তনুর বিবৃতি সিএএ নিয়ে, মতুয়ারা উগরে দিলেন ক্ষোভ
শান্তনুর সেই দাবির জেরেই অমিত শাহ ৩০ জানুয়ারি ঠাকুরনগরে সভা করবেন বলে নিশ্চিত করেন। কিন্তু দিল্লি বিস্ফোরণের জেরে সেই সভা স্থগিত হয়ে যায়। তা ফের ১১ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে। তার আগে শান্তনু বিবৃতি দিয়েছেন সিএএ লাগুর দিনক্ষণ নিয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি বলে। এরপরই মতুয়া সমাজ ক্ষোভ উগরে দেয় সাংসদের বিরুদ্ধে।
বিজেপি ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে মতুয়াদের
শান্তনু ঠাকুর শুধু বিজেপি সাসংদ নন, তিনি মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি, তিনি কেন মতুয়াদের দাবি থেকে সরলেন তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে মতুয়া সমাজ। শান্তনুর ভোলবদলে ক্ষোভ বেড়েছে ঠাকুরনগরে। মতুয়ারা বলতে শুরু করেছে, বিজেপি ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে শুধু ব্যবহার করতে চাইছে, সমস্যার সমাধান তাঁরা করতে চান না।
মতুয়ারা সবাই নাগরিক, মতুয়াদের ভুল বোঝানো হয়েছে
এদিকে তৃণমূল দাবি করেছে, মতুয়াদের ভুল বোঝানো হয়েছে। মতুয়ারা সবাই নাগরিক। তাঁরা নাগরিক না হলে তাঁরা ভোটাধিকার পেলেন কী করে, আর কী করেই বা রেশন কার্ড পেলেন। নাগরিকত্বের লোভ দেখিয়ে মতুয়াদের ভোট নেওয়া হয়েছে। মতুয়ারা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাঁরা বুঝেছেন তাঁদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রয়েছেন, তিনিই থাকবেন।
দিব্যেন্দু কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন! মোদীর সভার আগে দিলীপ ঘোষ কী জানিয়ে রাখলেন