For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ক্ষমতার অধিকারী হয়েও মাটিতে পা বিধায়কের! টোটোতেই মানব সেবায় মনোরঞ্জন ব্যাপারী

তাঁর জীবনটা খুব একটা সহজ ছিল না। খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন। একটু ভাতের জন্যে অনেক কিছুই করতে হয়েছে জীবনে। একটা বড় সময় কেটেছে তাঁর অন্যের ভার বহন করেই। অর্থাৎ রিক্সা চালিয়েই। দিনের পর দিন রিক্সা চালিয়েছেন।

  • |
Google Oneindia Bengali News

তাঁর জীবনটা খুব একটা সহজ ছিল না। খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন। একটু ভাতের জন্যে অনেক কিছুই করতে হয়েছে জীবনে। একটা বড় সময় কেটেছে তাঁর অন্যের ভার বহন করেই। অর্থাৎ রিক্সা চালিয়েই। দিনের পর দিন রিক্সা চালিয়েছেন।

কিন্তু সময় কি সবসময় এক ভাবেই চলে? আর তা চলে না বলেই একেবারে মাটির মানুষটিকে তুলে এনে বিধায়ক বানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিধায়ক হয়েও একটুও বদলাননি তিনি। একটা শাসকদলের বিধায়ক। অনেক ক্ষমতাই তাঁর হাতে। কিন্তু তাতে কি? পা এখনও মাটিতেই রেখেছেন বলাগড়ের মনোরঞ্জন ব্যাপারী।

ছোট থেকেই লড়াইটা ছিল বেশ কঠিন

ছোট থেকেই লড়াইটা ছিল বেশ কঠিন

জীবন আর পাঁচটা মানুষের মতো মোটেই ছিল না মনোরঞ্জন ব্যাপারীর। ছোট থেকেই অনেক আন্দোলনের সাক্ষী থাকতে হয়েছে তাঁকে। বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম হলেও মাত্র তিন বছর বয়সে দেশভাগের কারণে তাঁর পরিবার বাংলাতে চলে আসে। বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবিরে জায়গা হয় তাঁদের। কখনও বাঁকুড়া তো কখনও আবার জেলার বিভিন্ন পান্তে রাত কেটেছে। ছোট থেকেই কাজের জন্য ছুটতে হয়েছে তাঁকে। দেশের প্রান্তে নানাণ কাজ করেছেন। অমানুষিক পরিশ্রম, বর্ণবিদ্বেষমূলক অপমানের মধ্যে দিয়ে তাঁকে বড় হতে হয়েছে। আর এর মধ্যে নকশাল আন্দোলনও শ্রমিক নেতা শংকর গুহনিয়োগীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। জড়িয়ে পড়েন নকশাল আন্দোলনের সঙ্গেও। যার ফলে জেলও খাটতে হয়। আর সেই জেলের মধ্যেই পড়াশুনা শুরু।

রিক্সা চালাতে শুরু করেন

রিক্সা চালাতে শুরু করেন

রাজনৈতিক কারণে জেল হলেও পরে ছাড়া পেয়ে যান মনোরঞ্জন। হাল ছাড়েনি। বরং শক্ত হাতে ধরেছেন জীবনটাকে। কিন্তু পেটের ক্ষিদে তো আর কিছু মানে না। আর তাই বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত করেছেন নিজেকে। কখনও কুলি তো আবার কখনও রান্নার কাজও করেছেণ। তবে শেষমেশ কলকাতার বুকে রিক্সা চালকের কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন রিক্সা টেনেই দিন কেটেছে। কিন্তু সময় বদলায়। আর তাই একদিন সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীকে কাছে পান তিনি। মনোরঞ্জনবাবুর রিস্কাতেই ওঠেন তিনি। আর সেটাই বোধহয় তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।

রিক্সা চালক থেকে দলিত লেখক

রিক্সা চালক থেকে দলিত লেখক

মহাশ্বেতা দেবীর হাত ধরেই সাহিত্যিক জীবনে উত্থান মনোরঞ্জন ব্যাপারীর। একের পর এক বই প্রকাশিত হয় তাঁর। ব্যাপারীর বিখ্যাত সৃষ্টি ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন তাঁর দলিত জীবনের কাহিনি নিয়ে লেখা। অন্য ভুবন, বৃত্তের শেষ পর্ব
জিজীবিষার গল্প, চণ্ডাল জীবন সহ একাধিক সাহিত্যের সৃষ্টিকর্তা তিনিই। এখনোও পর্যন্ত ২১ টি বইয়ের রচয়িতা তিনিই। কিন্তু জীবন বদলায়নি। একই ভাবে রয়ে গিয়েছে। তবে আজীবন বামপন্থী মানসিকতার মানুষ এই মনোরঞ্জন ব্যাপারি। আর তাঁকেই এবার তৃণমূলের টিকিট দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনায়াশেই যেতেন তিনি

অনায়াশেই যেতেন তিনি

প্রার্থী করা হলেও কোনও মানুষকে কোনও চমকের মধ্যে রাখেননি তিনি। প্রথম দিন থেকেই সাধারণ থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। একেবারে পরিচিত হাফ শার্ট আর গলায় গামছা পড়ে দিনের পর দিন প্রচার করেছেন। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়েও তিনি ছিলেন একেবারে ছিমছাম। রিকশা চালিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন জেলাশাসকের দফতরে। যাত্রী আসনে সাজানো ছিল তাঁর লেখক জীবনের ২১ টি গ্রন্থ। খুব সহজ ভাবেই বলাগড় থেকে জয় ছিনিয়ে আনেন মনোরঞ্জন। আর তারপর থেকেই ছুটেই চলেছেন। মানবসেবাই তো আসল ধর্ম। আর সেই ধর্মেই বিশ্বাসী তিনি। আর তাই করোনা হোক কিংবা ঝড় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন।

আবেগঘন পোস্ট বিধায়কের

আবেগঘন পোস্ট বিধায়কের

কিন্তু এলাকা বড়। আর তাই সবার কাছে পৌঁছতে বেশ কষ্টই হচ্ছে তাঁর। তবে তাঁর কেন্দ্রের সবার কাছে পৌঁছতে হবে। রিকশার বদলে টোটো কিনে নিলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। আর টোটোতে নিজের বসা ছবি ফেসবুকে শেয়ার করলেন বিধায়ক। সেখানে লিখলেন, ''আপনাদের বিধায়ক, আপনাদের সেবক। এতদিনে তার আপনাদের আশীর্বাদে , দয়া আর দানে নিজের একটা বাহন হলো। যে কোন দিন যে কোন সময় এই বাহন বিধায়ককে নিয়ে পৌছে যাবে আপনার দরজায়'' যদিও তাঁর আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে আবেগঘন পোস্ট করেন বিধায়ক। তিনি লেখেন, ''জীবনে প্রথমবার সবচেয়ে অস্বস্তি হয়েছিল সেদিন, যেদিন আমাকে খানিক দায়ে পড়ে রিকশায় চাপতে হয়েছিল। কতকাল রিকশা টেনেছি, সেই আমি রিকশায় বসে যাবো,আর আমাকে টেনে নিয়ে যাবে আমার চেয়ে রোগা, বয়স্ক একজন মানুষ, এতে নিজেকে খানিক অপরাধী বলে মনে হয়েছিল আমার । আজ আমাকে যখন মোটরকারে চাপতে হয়- পঞ্চাশ মাইল লম্বা পঁয়ত্রিশ মাইল চওড়া- যার মধ্যে এগারোটা রেল স্টেশন পড়ে, বলাগড় বিধান সভা এলাকা এত বড়! সেই এলাকায় ঘুরতে হলে, মানুষের দুয়ারে যেতে হলে এটা না করে অন্য কী বা উপায়! পা খারাপ না হলে সাইকেলেই যেতাম। দুটো পায়েই যে নিঃরিপ্লশমেন্ট। তাই দায়ে পড়ে মোটরখারে যাই । কিন্ত আমার মোটরকারে চাপতে খুবই মানসিক কষ্ট হয়। আমাকে যারা ভোট দিলেন ,যাদের দয়ায় আমি বিধায়ক হলাম, সেই সব গরীব গুরবো মানুষ তাদের অনেকের সাইকেল পর্যন্ত নেই। তাদের সামনে মোটরকারে চাপা- নিজেকে অপরাধী করে দেয়। তাই আমি স্থির করেছি আর মোটরকারে চাপবো না। হোক ভাড়ার তবু তো আয়েসী ব্যাপার ! যখন বিধান সভায় যেতে হবে সেটা আলাদা কথা, কিন্ত অঞ্চলে যখন ঘুরবো, ঘুরে বেড়াবো টোটো রিকশায়। আজ আমি বলাগড় থেকে কলকাতা এসেছি যেমন টোটো চাই নিজে তার ডিজাইন বানিয়ে দেবার জন্য। টোটো সেই বাহন যাতে সাধারন মানুষ চড়তে পারে। নিজের টোটো নিজেই চালিয়ে চলে যাবো প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মানুষের ঘর থেকে মুড়ি,আর লাল চা চেয়ে খাবো, খিদে পেলে পাট পাতার ঝোল দিয়ে মেখে খেয়ে নেবো কোন ঘরে দুমুঠো ভাত। ঘুম পেলে শুয়ে পড়বো কোন আম গাছের ছায়ায়। আর শুনবো মানুষের মনের কথা। আগামী পাঁচ বছর এই হবে আমার কাজ।

English summary
Manoranjab Byapari is using toto to serve people being an MLA
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X