গুজরাত দাঙ্গার পরও বিজেপি-কে সমর্থন করেন মমতা, দাবি কৃষ্ণা বসুর বইয়ে
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের বধূ কৃষ্ণা বসু তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ১৯৯৯ সালে জিতেছিলেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী পরিচালিত এনডিএ সরকারের শরিক। ২০০২ সালে গুজরাতে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়। বিরোধীরা নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর দিকে আঙুল তোলে। বলা হয়, কেন্দ্রের বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার চাইলে গুজরাতে দাঙ্গার মোকাবিলা করতে পারত। কিন্তু করেনি। তাই লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।
'অ্যান আউটসাইডার ইন পলিটিক্স' বইয়ে কৃষ্ণা বসু এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন দিল্লিতে দলীয় সাংসদদের একটি গোপন বৈঠকে ডাকেন। বলেন, এনডিএ সরকারকে কিছুতেই বিপদে ফেলা যাবে না। অটলবিহারী বাজপেয়ীর কুর্সি যাতে অক্ষত থাকে, সেটা দেখতে হবে। তাই অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অর্থাৎ গুজরাত দাঙ্গার বিষয়টি সমর্থন করে ভোট দিতে হবে। এ কথায় সব সাংসদরা সায় দেন। কৃষ্ণাদেবীর দাবি, তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কথাকে পাত্তাও দেননি।
এর আগেই রটেছিল, ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার পর নরেন্দ্র মোদী যখন ফের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তাঁকে ফুল পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন প্রশ্ন হল, তখন যদি নরেন্দ্র মোদীকে তিনি শুভেচ্ছা জানাতে পারেন, তা হলে এখন তাঁর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে অসুবিধা কোথায়? দ্বিতীয়ত, আদালত যখন নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে, তখন তাঁকে 'দাঙ্গার মুখ' বলে বর্ণনা করাটা হাস্যকর নয় কি? পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ভণ্ডামি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেস এবং বামেরা এ বিষয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে কৃষ্ণা বসুর ছেলে সুগত বসুকে সেই যাদবপুর কেন্দ্র থেকেই ভোটে দাঁড় করিয়েছেন মমতা। শুধু যাদবপুরই নয়, সর্বত্রই রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে এই মুহূর্তে মমতার অতীতের ভূমিকা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।