পঞ্চায়েতের দিগনির্দেশনা মাত্র ১৮ লাইনের চিঠিতে, বিধায়কদের বার্তা দিলেন মমতা
পঞ্চায়েতের দিগনির্দেশনা মাত্র ১৮ লাইনের চিঠিতে, বিধায়কদের বার্তা দিলেন মমতা
বিধায়কদের চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারি ধর্ম নিয়ে তৃণমূলের কী অবস্থান হবে তা জানিয়ে তিনি চিঠি লিখলেন বিধায়কদের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঝাড়গ্রাম সফরে যাচ্ছেন মমতা, তাঁর আগে বিধায়কদের সারি ধর্ম নিয়ে তাঁর চিঠি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। মাত্র ১৮ লাইনের চিঠিতেই তিনি ভোট প্রচারে দিগনির্দেশনা দিয়েছেন।
সম্প্রতি সারি ধর্ম নিয়ে রাজ্য সরকার চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকরারকে। সেই ইস্যুকে পঞ্চায়েত ভোটে তুলে ধরতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মর্মে বিধায়কদের এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে রাজ্যের প্রচেষ্টার কথা ছত্রে ছত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী সপ্তাহেই ঝাড়গ্রামে যাচ্ছেন, তার আগে প্রচারের প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে।
বিভিন্ন এলাকায় পঞ্চায়েতের প্রচার শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আদিবাসী এলাকায় সারি ধর্মকে ইস্যু করে তৃণমূল প্রচারে জোর বাড়াতে চলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ সারনা ধর্ম ও সারি ধর্মকে বিশ্বাস করেন এবং তা মেনে চলেন। এই দুই ধর্মের স্বীকৃতি রাজ্যের আদিবাসী মা-ভাই-বোনেদের দীর্ঘদিনের দাবি।
আদিবাসীদের এই দাবি কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত কোনও ইচিবাচক ভূমিকা নেয়নি। যদিও আদিবাসী সমাজের এই ভাবাবেগকে রাজ্য সরকার সবসময় সম্মান দিয়েছে। সারি ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতির বিষয়টিকে নিয়ে রাজ্যে সরকারের তরফে ২০২০ সালে প্রথম চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তারপরও একাধিকবার কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তারপর কোনও উদ্যোগ নেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার নীরব থেকেছে।
কিন্তু রাজ্য সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। সেই কারণেই ২০২২-এর ৬ জুলাই রাজ্য মন্ত্রিসভার এই বিষয়ের উপর রাজ্য একটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব পাস করিয়েছে। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের একটি অংশের জন্য সারনা ধর্মের স্বীকৃতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য বিধানসভায় এই মর্মে একটি বিলও আনা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, রাজ্য সরকারের সর্বদা রাজ্যের আদিবাসীদের আশা পূরণ করতে আগ্রহী। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সেই চেষ্টা নেই। তাই আদিবাসীদের দাবিপূরণ হচ্ছে না। রাজ্যের এই প্রচেষ্টার কথা আদিবাসী সমাজের মানুষের কাছে তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে চিঠি লিখে বিধায়কদের সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে আদিবাসী উন্নয়নের জন্য কী কী কাজ করা হয়েছে, ঘরে ঘরে গিয়ে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে। সেই কাজে মন্ত্রী-বিধায়কদের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।