টার্গেট উত্তর প্রদেশ, ছটপুজোর শুভদিনে বারাণসীতে পা রাখছেন মমতা
টার্গেট উত্তর প্রদেশ, ছটপুজোর শুভদিনে বারাণসীতে পা রাখছেন মমতা
'দেশ কি নেত্রী ক্যায়সি হো, মমতা দিদি জ্যায়সি হো', এই আওয়াজকে সত্যি করতে এবার কোমর কষেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যেই ছটপুজোর দিন মোদীর বারাণসীতে পা রাখছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-র ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল বিজেপিকে। আগে মোদী নিজের গড় বারাণসী সামলাক তারপরে বাংলা দখলের কথা বলবে। সেই চ্যালেঞ্জই কি এবার বাস্তবে রূপ দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নইলে হঠাৎ করে উত্তর প্রদেশের বারাণসীতেই বা যাবেন কেন। বিরোধী ঐক্যই যদি টার্গেট হত তাহলে লখনউয়ে আগে পা রাখতে পারতেন।
বারাণসী যাচ্ছেন মমতা
বৃহস্পতিবারই গোটা যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে ফিরতে না ফিরতেও আরও বড় কর্মসূচি হাতে নিয়ে ফেলেছেন। ছটপুজোর দিন উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে যাবেন তিনি। ইতিমধ্যেই উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুই বড় নেতা যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। তারপরেই বারাণসী সফরের কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বারাণসীকে টার্গেট করে ফেলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির টুইট পাল্টা টুইটে সরগরম হয়েছিল রাজনৈতিক মহল। তখনই তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে টুইটে লিখেছিল পারলে বারাণসী রক্ষা করে দেখাক মোদী। সেই চ্যালেঞ্জকে টার্গেট করেই এবার এগোতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য খড়দহে প্রচারে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন শুধু গোয়া এবং ত্রিপুরা নয় যোগীর উত্তর প্রদেশ এবং মেঘালয়েও পা রাখবে তৃণমূল কংগ্রেস। ৩ মাসের মধ্যে গোয়া দখলের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। আর বিপ্লবদেব সরকারের পতন কেবল সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করেছেন তিনি।
একমাত্র তৃণমূলই পারে
২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধী ঐক্যের সুর তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে হারাতে সব অবিজেপি দলগুলিকে একজোট হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। দিল্লিতে গিয়ে এই নিয়ে দফায় দফায় একাধিক অবিজেপি দলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক। সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন তৃতীয় ফ্রন্ট যদি তৈরি হয় তাহলে তার নেতৃত্ব দেবেন কে সোনিয়া গান্ধী না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন নেতৃত্ব যিনিই দিন ঐক্যটা জরুরি। দিল্লি েথকে ঘুরে আসার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখে শোনা যাচ্ছে অন্য সুর। প্রকাশ্যে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই বলতে শুরু করেছেন বিজেপিকে ভারত ছাড়া করার ক্ষমতা কংগ্রেসের নেই। কংগ্রেস বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এটা একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই করতে পারে। কাজেই তৃণমূল কংগ্রেসই পারবে বিজেপিকে ভারত ছাড়া করতে। এবং ২০২৪-এ বিজেপিকে ভারত ছাড়া করবে তৃণমূল কংগ্রেসই। সেকারণেই েদশে আওয়াজ উঠেছে দেশ কি নেত্রী ক্যায়সি হো, মমতা দিদি জ্যায়সি হো।
ভিন রাজ্যে পা রাখছে তৃণমূল
দার্জিলিং সফরে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তিনি গোয়া যাবেন। গোয়াতে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসে ভাঙন ধরাতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। মহালয়ার দিন গোয়ায় রাজনৈতিক কার্যালয় খুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার একে একে দলে আসতে চাইছেন অনেকে। সূত্রের খবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফরের সময় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে পারেন বলিউড অভিনেত্রী বর্ষা উসগাঁওকর। বর্ষা উসগাঁওকরের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় গোয়ার একা বড় অংশের হিন্দু ভোটার তৃণমূল কংগ্রেসে হয়ে কাজ করবে। কারণ গোয়ায় ৬৫ শতাংশ হিন্দু রয়েছে। বর্ষা উগসাঁওকরের বাবা গোয়ায় একাধিকবার মন্ত্রী পদে ছিলেন। একাধিকবার বিধায়ক হয়েছিলেন। তাই রাজনৈতিক পরিবারের কন্যা বর্ষা উসগাওকর। এদিকে আবার শোনা যাচ্ছে নফিসা আলি এবং লাকি আলিও যোগ দিতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়ায় সংগঠনের কাজ দেখার দায়িত্বে রয়েছেন ডেরেক ওব্রায়েন। তিনি গত একমাস ধরে গোয়ায় টিম সাজিয়ে বসে রয়েছেন।
একা লড়াইয়ের বার্তা মমতার
বিরোধী ঐক্যের সুর থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তাঁর গলায় শোনা যাচ্ছে অন্যসুর। এখন একপ্রকার একা লড়াইয়ের পথেই হাঁটতে চাইছেন তিনি। মমতা নিেজ বলেছেন একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই পারে বিজেপিকে হারাতে। সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছে তারা। ২০২১-র ভোটে বাংলায় বিজেপির শোচনীয় হার এক কথায় বিজেপির রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিয়েছে। গোটা দেশে বিজেপির জয়যাত্রা হঠাৎ করে থমকে গিয়েছে বাংলায়। মোদী, শাহ-নাড্ডা মিলেও কিছু করে উঠতে পারেননি। রাজনৈতিক সমীক্ষা একেবারে ফেল করে গিয়েছে ২০২১ সালের ভোটে। বিহারে যেটা করে উঠতে পারেনি আরজেডি। কান ঘেসে বেরিয়ে গিয়েছিল বিজেপি-জেডিইউ জোট। বাংলায় সেটা করে দেখিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তাই নতুন মাত্রায় গোটা দেশে বিজেপি হাঠাও অভিযানে মেতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেকারণেই এবার দেশের একাধিক রাজ্যে পালিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস।