শুভেন্দুর স্লোগানই বিজেপি বধের অস্ত্র করে তুললেন মমতা! জমজমাট ২১-এর ভোট লড়াই
সময়মতো প্রতিপক্ষ নির্বাচন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) সঠিকভাবেই করতে পারেন। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে যে বিজেপিই তাঁৎ প্রধান প্রতিপক্ষ তা এদিনের পুরশুড়ার সভা থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu adhikari) নাম না করলেও তাঁর দেওয়া স্লোগান এদিন শোনা গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে।


লড়াই শুভেন্দুর সঙ্গেই
শুভেন্দু অধিকারী দল ছেড়েছিলেন ১৯ ডিসেম্বর। তারপর থেকে একাধিক কর্মসূচি তিনি নিয়েছিলেন নন্দীগ্রামে। তবে তৃণমূল নেত্রী জানুয়ারির প্রথমের নন্দীগ্রামের কর্মসূচি বাতিল করে ১৮ জানুয়ারি সেখানে যান। আর ২০১৫-র ডিসেম্বরের পর প্রথমবার সেখানে গিয়েই জানিয়েদেন তিনি নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবেন। জানান, ভবানীপুর তাঁর কাছে বড় বোন আর নন্দীগ্রাম মেজ বোনের মতো। এরপরেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলতে শুরু করেন, এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপায় ছিল না। পাল্টা শুভেন্দু অধিকারী জানান, নন্দীগ্রাম থেকে মাননীয়াকে ৫০ হাজার ভোটে হারাতে না পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।

হরে কৃষ্ণ হরে হরে, তৃণমূল ঘরে ঘরে
১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে অধিকারী পরিবারের গড় বলে পরিচিত কাঁথিতে রোড শো করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই রোড শো থেকে নয়া স্লোগান তোলেন তিনি। কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে বিজেপি ঘরে ঘরে। তিনি তখন বলেছিলেন, প্রেমের ঠাকুর চৈতন্যদেবকে স্মরণ করেই তিনি এই স্লোগান তৈরি করেছেন। পরবর্তী সময়ে রাজ্য বিজেপির তরফে এই স্লোগানে অনুমোদন দেওয়া হয়। যেই কারণে শুভেন্দু অধিকারী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি।
এদিন পুরশুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও প্রায় একই ধরনের স্লোগান শোনা যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হরে কৃষ্ণ হরে হরে, তৃণমূল ঘরে ঘরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্লোগান শোনার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ শুরু হয়ে যায়। শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা মন্তব্য করেন, দাদার স্লোগান কপি করতে দেখা গিয়েছে মাননীয়াকে।

শুভেন্দুর আরও স্লোগান 'ধার'
বিজেপির যোগ দেওয়ার দিন থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা হিবেসে বেছে নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ভাইপো বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। আর তার সংগঠন যুব তৃণমূলও তাঁর নিশানায়। যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রের বাড়িতে ততদিনে সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে এবং ওই নেতা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে ডিসেম্বরেই শুভেন্দু অধিকারী শুরু করেছিলেন, লাল চুল কানে দুল, তার নাম যুব তৃণমূল। যুব তৃণমূল নেতাদের চালচলনকে কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, পায়ে আট হাজার টাকার জুতো, হাতে দুটো আইফোন, হাতে সোনার মাকরি, ১০ টা আঙুলে ১৮ টা আংটি, গলায় গরুর দড়ির মতো সোনার মোটা চেন, চোখে বিদেশি সানগ্লাস। সঙ্গে ফরচুনা গাড়ি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী লাল চুল, কানে দুল স্লোগানকেই ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, লাল চুল, কানে দুল পরে বাইকে কেউ এলে হাতা খুন্তি দিয়ে ধুয়ে দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পুরশুড়ায় বলেন, গ্রামে বহিরাগতদের ঢুকতে দেবেন না। প্রসঙ্গত বাইরের রাজ্য থেকে বিজেপির সংগঠনের নেতারা এই রাজ্যে আসায়, সেইসব বিজেপি নেতাদের বহিরাগত তকমা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

বিজেপির সঙ্গে বাম কংগ্রেসকেও নিশানা
এদিন পুরশুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সঙ্গে রাজ্যের বাম ও কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেছেন। বলেছেন, বিজেপির পাশাপাশি বাম, কংগ্রেসকে একটিও ভোট নয়। সঙ্গে তিনি বলেছেন, হরে কৃষ্ণ হরে রাম, বিদায় যাও বিজেপি-বাম।
ভিক্টোরিয়ায় অপমান ভুলব না, রাজনৈতিক পথে জবাব পাবে বিজেপি, পুরশুড়ার সভা থেকে হুঁশিয়ারি মমতার