রাজ্যে কাজের সুযোগ তৈরী করুন মমতা, তবেই শেষ হবে কাটমানি-র দৌরাত্ম্য
ইদানিং দলের নেতা-কর্মীদের সাধারণ মানুষের থেকে 'কাটমানি' খাওয়ার বিরুদ্ধে সাবধান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইদানিং দলের নেতা-কর্মীদের সাধারণ মানুষের থেকে 'কাটমানি' খাওয়ার বিরুদ্ধে সাবধান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির সঙ্গে আপোস না করে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। পদক্ষেপটি ইতিবাচক কিন্তু এই লড়াইতে জয় পাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। বা আরও গুছিয়ে বললে, শুধু যুদ্ধ ঘোষণা করলেই এই দুর্নীতির থেকে রেহাই পাওয়া অসম্ভব। কারণ সিন্ডিকেট-তোলা-কাটমানি এখন রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছে আর সেটা তৃণমূলের শাসন কায়েম হওয়ার আগেই।
'কাটমানি' নিয়ে থাকলে ফেরত দিন বলে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিলেও এই পথে সমাধান দূর অস্ত। মাঝখান থেকে যেটা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বল পেয়ে সাধারণ মানুষ যে বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন, তা অচিরেই এক বড় আইনের সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। গণপ্রহারের ঘটনা ঘটতে পারে; নির্দোষের প্রাণও যেতে পারে।
প্রথমত, মমতাকে একটি সঠিক প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে এই সমস্যার মুলে আঘাত করতে হবে। তদন্ত করে এবং কড়া আইনের সাহায্যে এই প্রবণতাকে দমন করতে হবে। আর দ্বিতীয়ত, রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। যদ্দিন না সেটি করা হচ্ছে, ঘুষ-কাটমানি-তোলাবাজির প্রকোপ থেকে পশ্চিমবঙ্গে কারওরই নিষ্কৃতি নেই।
কাজ চাই সবার আগে, তবেই দু'নম্বরি আয় থামবে
রাজ্যে বেকারি সমস্যা এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে দিনে দিনে যে মানুষের রোজগারের সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন। অথচ নানা সরকারি প্রকল্প শুরু করে মমতার জনপ্রিয়তাবাদের ঘোড়া ছুটলেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির নীলনকশা নেত্র আজও তৈরী করতে পারলেন না। শিল্পায়নের পথ কী হবে, কিভাবে বাড়বে কাজের সুযোগ, কিভাবে আটকানো যাবে 'ব্রেন ড্রেন' -- এর কোনও খতিয়ান এখনও দেখা গেল না রাজ্য সরকারের তরফে।
নির্বাচনে জিতে বিজেপিও সিঙ্গুরে শিল্প চাইছে, ৮ বছরে মমতা কী ভাবলেন সিঙ্গুর নিয়ে?
সিঙ্গুরে ফের আসুক শিল্প -- এই স্লোগানে হুগলির নবনির্বাচিত সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সরব হলেও মমতা দলের পক্ষ থেকে গত এক দশকে টাটার বিকল্প কিছুর খোঁজ সিঙ্গুরে পাওয়া যায়নি। ঘুরে ফিরে সেই সরকারের অনুগত হয়ে বেঁচে থাকা। ওতে দিন গুজরান কোনওমতে হলেও আর্থিক কোনও সমাধান যে হয় না, সেটা বোধহয় নেত্রী আজও বুঝে উঠতে পারলেন না। এই অর্থনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের ফলে আজও চলছে কাটমানি-ঘুষের অনন্ত অত্যাচার।
আর কবে রাজ্যের অর্থনৈতিক ভাগ্য ফেরানোর কথা ভাববেন নেত্রী?