মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন মমতা! বিজেপির কাছে হেরে তিনি হলেন অভিমানী
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে চাই না।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে চাই না। দলকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু দল আমাক সঙ্গে সহমত হয়নি। বাংলায় বিজেপির কাছে লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চেয়ার বড় নয়
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার কাছে চেয়ার বড় নয়। আমার কাছে মানুষ সব থেকে বড়। আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দল অনুমতি দেয়নি। কিন্তু আমি বীতশ্রদ্ধ। যেভাবে রাজ্যকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। উল্টে টাকা ছড়িয়ে ভোটে জেতা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই আমার এই প্রতিবাদ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিমান
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভোটের জন্য পাঁচ মাস কোনও কাজ করা যায়নি। উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে আছে। নির্বাচন কমিশন-সহ বিভিন্ন সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে টাকা ছড়িয়ে ভোটে জিতছে একটা দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিমান, এখন তো মনে হচ্ছে, একটু বেশি করে ফেলছি। তাই এখন দলটা বেশি করে করব।
উন্নয়ন কি দুর্বলতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, উন্নয়ন করেছি, মানুষের সঙ্গে থেকেছি, কিন্তু মানুষ সেই উন্নয়নকে দুর্বলতা ভেবেছে। ভোটের সময় যাঁরা টাকা ছড়িয়েছে, তাঁরাই জিতেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার চেয়ারের প্রতি কোনও মোহ নেই। একাধিকবার রেলমন্ত্রীর পদ ছেড়ে চলে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের জন্য কাজ করতে, চেয়ারের কোনও প্রয়োজন নেই আমার। বরং আমার চেয়ারের প্রয়োজন না থাকলেও, চেয়ারের প্রয়োজন আছে আমাকে। তাই দলের অনুরোধে এখনও আমি মুখ্যমন্ত্রী।
সিট কমলেও ভোট বেড়েছে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, সিট কমলেও ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। কিন্তু এবার পুরোপুরি সেটিং করে ভোট হয়েছে, তাই হিসেব মেলেনি। বিজেপি বলেছিল ২৩টি আসন পাবে। বলেছিল ৩০০ আসন পাবে। বাংলায় ২৩টি না পেলেও পেয়েছে ১৮টি। তবে বিজেপির হিসেব মিলে গিয়েছে। এই হিসেব মিলেছে সেটিংয়ের জন্যই, তা জলের মতো পরিষ্কার।
সাম্প্রদায়িকতার বিষে জয়
তাঁর কথায়, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে জিতেছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ভোট। তবুও বাংলায় নিজেদের টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। আমি বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি মানি না। যে টাকা খরচ করেছে, যে কোনও দুর্নীতিকে তা হার মানায়।
উন্নয়নের কোনও দাম নেই
মমতা এদিন অভিমান করে বলেন, উন্নয়নের কোনও দাম নেই। এক-একটা পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে, তাতেই ভোট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আগে থেকেই খবর ছিল প্রোগ্রামিং করে ভোট হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থাকে করায়ত্ত তো করা হয়েছেই, একইসঙ্গে বাম ভোটকেও রামে রূপান্তরিত করতে সেটিং হয়েছে।