বাপ-ব্যাটা না চাইলে পুলিশ ঢুকতে পারত না, ২০০৭-এর ঘটনা তুলে ধরে নন্দীগ্রামে বিস্ফোরক মমতা
নন্দীগ্রামের (nandigram) সভা শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu adhikari) পাশাপাশি শিশির অধিকারীকে (sisir adhikari) নিশানা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) । ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চাল
নন্দীগ্রামের (nandigram) সভা শুভেন্দু অধিকারীর (suvendu adhikari) পাশাপাশি শিশির অধিকারীকে (sisir adhikari) নিশানা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) । ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চালনায় দায় কার্যত তাঁদের ওপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি। পাল্টা শিশির অধিকারী বলেছেন, হারের ভয়েই মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছেন মমতার।
নন্দীগ্রামের দায় ছিল বামেদের
২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চলে। সেই গুলি চালনায় ঘটনায় মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তৃণমূলের তরফ থেকে গুলি চালনার ঘটনায় বাম সরকার এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দায়ী করা হয়েছিল। পরে অবশ্য সিবিআই জানিয়েছিল, পুলিশ বাধ্য হয়েই গুলি চালিয়েছিল। ২০১১-এর পরিবর্তনের বছরে বামেদের ক্ষমতা হারানোর অন্যতম কারণ ছিল নন্দীগ্রাম।
পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গুলিচালনায় অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক সত্যজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস বড়াল, অরুণ গুপ্ত সহ একাধিক আধিকারিকের পদোন্নতি হয়। কয়েকমাস আগে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূলের পতাকাও হাতে তুলে নেন। যা নিয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছেন। কেনই বা গুলি চালনায় অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের পদোন্নতি হল, আর কেনই বা তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
ভোটের আগে শিরোনামে নন্দীগ্রাম
১০ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে একদফা শিরোনামে চলে এসেছিল নন্দীগ্রাম। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আঘাতের পিছনে বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছিলেন। আর এদিন নন্দীগ্রামের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৭ সালের গুলি চালনার কথা তুলে আনেন। তিনি বলেছেন, অনেক হাওয়াই চটি পরে এসেছিল। তিনি বলেছেন, বাপ-বেটা না চাইলে সেইদিন নন্দীগ্রামে পুলিশ ঢুকতে পারত না। কার্যত সেদিনের গুলি চালনায় দায় শুভেন্দু অধিকারী, শিশির অধিকারীদের ওপরেই চাপিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিষয়টি নিয়ে চ্যালেঞ্জও করেন।
বাবার শপথ গ্রহণে যায়নি ছেলে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। প্রসঙ্গত ২০০৯ সালে নির্বাচনে কাঁথি থেকে শিশির অধিকারী এবং তমলুক থেকে শুভেন্দু অধিকারী জয়ী হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইউপিএ মন্ত্রিসভায় শিশির অধিকারীকে মন্ত্রী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সেদিন শুভেন্দু অধিকারীর শিশির অধিকারীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাননি। কেননা তাঁর প্রশ্ন ছিল বাবা মন্ত্রী হলে, তিনি কেন হলেন না।
নন্দীগ্রামের ভোটেও চটি পুলিশ?
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে যেমন ড্রেস ও হাওয়াই চটি পরিয়ে বাইরের লোকেদের ঢোকানো হয়েছিল। তাই ধরা পড়ে গিয়েছিল। সেরকমই এবারেও বিএসএফ-এর ড্রেস নিয়ে আসা হয়েছে। বহিরাগতদের পুলিশের ড্রেস পরিয়ে নামানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মমতার মাথা খারাপ হয়েছে, বললেন শিশির
এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, হারের ভয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে, পাগলের প্রলাপ বকছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, মেদিনীপুরের মাটি শক্ত। তিনি বলেছেন, পুলিশ কর্তাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের বড় পদ পাইয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।