মমতার সফট টার্গেট জঙ্গলমহল, বিজেপিকে সরিয়ে জঙ্গলমহলে রাজ করতে পরিকল্পনা
মমতার সফট টার্গেট জঙ্গলমহল, বিজেপিকে সরিয়ে জঙ্গলমহলে রাজ করতে পরিকল্পনা
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফট টার্গেট জঙ্গলমহল। ২০১৯-এ জঙ্গলমহলে ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। হাত থেকে সব আসন বেরিয়ে গিয়েছিল। উড়ে এসে জুড়ে বসে বিজেপি দখল করেছিল জঙ্গলমহল। তারপরই তৃণমূল জঙ্গলমহলে নিজেদের কর্তৃত্ব ফিরে পেতে ছক কষছে। শুধু ছত্রধরকে তৃণমূলে পদ দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি তৃণমূল, এখন আবার বিপুল বিনিয়োগ করে জঙ্গলমহলকে কাছে টানতে চাইছে।
জঙ্গলমহলের মন টানাই লক্ষ্য মমতার
জঙ্গলমহলকে নিয়ে নানাভা্বে ঘূঁটি সাজিয়ে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। বিজেপির বাড়বাড়ন্ত কমিয়ে ফের জঙ্গলমহলকে নিজের দিকে আনাই টার্গেট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই তিনি আদিবাসীদের জন্য নানা প্রকল্প এনেছেন। সামাজিক জনমুখী নানা প্রকল্পের মাধ্যমে জঙ্গলমহলের মন টানাই লক্ষ্য তাঁর।
উন্নয়নের জোয়ার আনতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী
গত ৯ বছরে জঙ্গলমহল অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার খরচ করেছে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকারও বেশি। উন্নয়নের কাজে জঙ্গলমহলের একাংশ বাধার সৃষ্টি করলেও বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা অনেকটাই কেটেছ। ফের ২০২১-এর আগে জঙ্গলমহলে উন্নয়নের জোয়ার আনতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মাওবাদীদের পীঠস্থানে উন্নয়নই অস্ত্র
২০১১-তে ক্ষমতায় আসার আগেই জঙ্গলমহলের উন্নতিতে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। মাওবাদীদের পীঠস্থানে পরিণত হওয়া ঝাড়গ্রামকে ‘সন্ত্রাস'মুক্ত করে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হন মমতা। ঝাড়গ্রামের উন্নতিপ্রকল্পে ২,০০০ কোটিরও বেশি খরচ করেন। যার সর্বাধিক সুফল দেখা গেছে আদিবাসী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে।
পর্যটনকে উন্নয়নের সোপান করেছেন মমতা
জঙ্গলমহলের অর্থনীতিকে এগিয়ে দিতে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন মানচিত্রে বিশেষ স্থান দেওয়া হয়েঠছে জঙ্গলমহলকে। জঙ্গলমহলের সন্ত্রাসময় আবহ কেটে গিয়ে বর্তমানে রাস্তা তৈরি হয়েছে বিস্তর। সবুজে ঘেরা পরিবেশে ছুটি কাটাতে আসছেন অনেকেই। পর্যটন হয়ে উঠছে উন্নত। যার জেরে গ্রামীণ উন্নয়নেও এর প্রভাব পড়েছে।
উন্নয়ন আর উন্নয়ন, বরাদ্দবৃদ্ধি সরকারের
সরকারের পক্ষ থেকে ৯.২ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে শবর ও লোধার মতো সম্প্রদায়ের উন্নতির স্বার্থে। পানীয় জল সরবরাহ, শিক্ষার পরিকাঠামোর উন্নতি ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ তৈরি, কৃষিক্ষেত্র এবং ঝাড়গ্রামে শবর-লোধাদের জন্য বাড়ি তৈরি বাবদ প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।
উন্নয়নের লক্ষ্যে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শবর শিশুদের জন্য ফ্রি-স্কুল হোক বা অভুক্তদের জন্য খাদ্যের সংস্থান, সবেতেই এগিয়ে আসছে কলকাতার নামীদামী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। জঙ্গলমহল অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে উন্নয়নের কাজে অহেতুক বাধাবিঘ্ন এড়ানোর লক্ষ্যে আঁটোসাঁটো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিজেপিকে সরিয়ে জঙ্গলমহলে রাজ করতে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নেই জবাব দিতে চাইছেন। উন্নয়ন দিয়েই মন পেয়েছিলেন জঙ্গলমহলের, আবার উন্নয়ন দিয়েই তিনি বুঝতে চাইছেন কেন জঙ্গলমহল মুখ ফিরিয়ে নিল তাঁর দিক থেকে। তাঁর বিশ্বাস, এই উন্নয়ন ভাবনাই আবার প্রাসঙ্গিকতা ফেরাবে জঙ্গলমহলে। বিজেপিকে সরিয়ে জঙ্গলমহলে রাজ করতে সক্ষম হবে তৃণমূল।
মুকুল স্বমূর্তি ধরলেন 'চাণক্যে’র মর্যাদা পেতেই, ২০২১-এর স্বপ্ন দেখা শুরু বিজেপির