মমতার ১০ ‘টোটকা’ একুশের ভোট-ইস্তেহারে, বাংলা হবে সমৃদ্ধশালী তৃণমূলের হ্যাটট্রিকে
মমতার ১০ ‘টোটকা’ একুশের ভোট-ইস্তেহারে, বাংলা হবে সমৃদ্ধশালী তৃণমূলের হ্যাটট্রিকে
একুশের ভোট ইস্তেহারে কল্পতরু হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কালীঘাট থেকে দলীয় ইস্তেহারে তিনি ১০ অঙ্গীকার করলেন সমৃদ্ধশালী বাংলা গড়তে। গত ১০ বছরে বাংলাকে বিশ্বের দরবারে এগিয়ে দেওয়ার পর তিনি সমৃদ্ধির বাংলা গড়ার প্রয়াস নেবেন আগামী দিনে। সেই লক্ষ্যেই তিনি বাংলার মানুষের দরবারে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কথা জানালেন।
সমৃদ্ধির বাংলা গড়বেন মমতা
দেশের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হল বাংলা। জিডিপি-র আয়তন ১২.৫ লক্ষ কোটি টাকা ও বার্ষিক মাথা পিছু আয় ২.৫ লক্ষেরও বেশি। ৩৫ লক্ষ মানুষকে চরম দারিদ্র থেকে উদ্ধার করাই ভবিষ্যৎ লক্ষ্য মমতার। ২০১১-য় দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষ ছিল ২০ শতাংশ। তা কমিয়ে ৫ শতাংশের নীচে নামানোই লক্ষ্য। বার্ষিক ৫ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। বেকারত্বের হার অর্ধেক করাই টার্গেট।
একুশে ধেয়ে আসতে পারে যে সব ঘূর্ণিঝড়, ১৬৯টি সাইক্লোনের তালিকায় কে করল নামকরণ
সামাজিক সুরক্ষায় ন্যূনতম মাসিক আয়
বাংলার প্রত্যেক পরিবারের ন্যূনতম মাসিক আয় সুনিশ্চিত করার জন্য নতুন প্রকল্প আনা হবে। ১.৬ কোটি যোগ্য পরিবারের কর্ত্রীকে মাসিক আর্থিক সহয়তা দেওয়া হবে। মাসিক ৫০০ টাকা করে জেনারেল ক্যাটেগরিতে পাবেন সাধারণ মানুষ। ফলে বার্ষিক আয় দাঁড়াবে ৬ হাজার টাকা। ১ হাজার টাকা করে পাবেন তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবার। তাদের বার্ষিক ১২ টাকা আয় দাঁড়াবে।
বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তৃণমূলীদের ভিড়, দলে উল্টো স্রোত বইয়ে যাঁরা 'বেসুরো'
যুব শক্তিকে সবল করতে আর্থিক সুযোগ
বাংলার যুবসমাজকে স্বাবলম্বী করতে আরও উদ্যোগ নেবে তাঁর সরকার। সমস্ত যোগ্য পড়ুয়াদের জন্য নতুন প্রকল্প আনা হবে। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়ানো হবে। ১০ লক্ষ টাকা ক্রেডিট লিমিট থাকবে ছাত্র-যুবদের জন্য। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এই ক্রেডিট লিমিট পাবে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা।
বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী কোন দেশের! ভারতের স্থান কত নম্বরে, সমীক্ষা রিপোর্ট
সবার আহার নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা
খাদ্যসাথী প্রকল্পে নতুন ব্যবস্থা আনবে সরকার। এখন আর রেশন দোকানে যাওয়ার দরকার নেই। ১.৫ কোটি পরিবার দুয়ারে মাসিক রেশন পাবেন। বাংলার ৫০টি শহরে ২৫০০ 'মা' ক্যান্টিন খোলা হবে। সেখানে ৫ টাকা করে ৭৫ কোটি মানুষ ভর্তুকিযুক্ত আহার পাবেন। এভাবেই নিত্যনতুন পরিকল্পনায় আহার সুনিশ্চি করার প্রয়াস নেবে মমতার সরকার।
উৎপাদন বাড়িয়ে কৃষক-সুখের অঙ্গীকার
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মাধ্যমে বার্ষিক ১০ হাজার টাকা একর পিছু সহায়তা করবে মমতার সরকার। ৬৮ লক্ষ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে এই সাহায্য করা হবে। নেট বপন ক্ষেত্র ও শস্য ব্যবস্থায় ৩ লক্ষ হেক্টর চাষযোগ্য জমি যোগ করা হবে। ৪.৫ লক্ষ হেক্টরে দু-ফসলি চাষ ব্যবস্থায় দেশে প্রথম স্থানে বাংলা। খাদ্যশস্য ও ৪টি বাণিজ্যিক শস্য তথা চা, পাট, আলু ও তামাক উৎপাদনে প্রথম পাঁচে রয়েছে বাংলা।
শিল্পে বাংলার উন্নয়নে জোর
বাংলাকে শিল্পোন্নত করাই লক্ষ্য মমতার। তিনি বার্ষিক ১০ লক্ষ নতুন এমএসএমই খোলায় জোর দিয়েছেন। সর্বমোট সক্রিয় এমএসএমই ইউনিটের সংখ্যা ১.৫ কোটির বেশি। ২ হাজার বড় শিল্প ইউনিট যোগ হবে বাংলায়। বর্তমান ১০ হাজার শিল্প ইউনিট রয়েছে। আগামী ৫ বছরে ৫ লক্ষ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগ আনার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
সুস্থ সতেজ বাংলা গড়ার লক্ষ্য
আগামী ৫ বছরে উন্নততর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং সুস্থ বাংলা গড়তে স্বাস্থ্যে ব্যয় বরাদ্দ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাজ্য জিডিপি-র ০.৮৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১.৫ শতাংশ করা হবে। ২৩টি জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ ও সম্পূর্ণ কার্যকরী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিকদের জন্য আসন সংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
শিক্ষিত বাংলা গড়তে উদ্যোগী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যের মতো শিক্ষা ব্যবস্থাতেও বিশেষ জোর দিয়েছেন। শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনায় রাজ্য জিডিপি-র ২.৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাশ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এছাড়া ব্লক প্রতি অন্তত ১টি মডেল আবাসিক স্কুল গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েতে তাঁর সরকার। শিক্ষকদের জন্য আসন সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রয়াসও নিয়েছেন।
মাথা গোঁজার ঠাঁই সবাইকে
সবাইকে মাথা গোঁজবার ঠাঁই দিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আরও ৫ লক্ষ স্বল্প মূল্যের আবাসনের পরিকল্পনা রয়েছে। বস্তিবাসীর সংখ্যা ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৬৫ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। আরও ২৫ লক্ষ স্বল্প মূল্যের বাড়ি হবে বাংলা আবাস যোজনার আওতায়। কাঁচা বাড়ির সংখ্যা ১ শতাংশেরও কম করার পরিকল্পনা।
ঘরে ঘরে আলো-জল
প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ, সড়ক, জলের বন্দোবস্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আরও ৪৭ লক্ষ পরিবারকে নলযুক্ত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হবে। ২৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০০ শতাংশ পরিষেবা সুনিশ্চিত করাই লক্ষ্য। সাত দিন ২৪ ঘণ্টা সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ প্রতিটি বাড়িতে দেওয়া হবে, প্রতিটি গ্রামীণ আবাসের জন্য মজবুত রাস্তা, উন্নত জল নিকাশি ব্যবস্থা এবং নলযুক্ত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করার পরিকল্পনা মমতার সরকারের।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েও শিকে ছিঁড়ল না! প্রার্থী হতে পারলেন না যাঁরা
{quiz_541}