বিচারপতি চন্দের এজলাস থেকে সরানো হোক মামলা! প্রধান বিচারপতিকে চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী
বিচারপতি চন্দের এজলাস থেকে সরানো হোক মামলা! প্রধান বিচারপতিকে চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী
হাইকোর্টেও এবার উত্তাপ চড়াচ্ছে নন্দীগ্রাম ইস্যু। ইতিমধ্যে ভোটে এবং গণনাতে কারচুপির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। আর তাতেই বিপত্তি! তৃণমূলের অভিযোগ, বিচারপতি চন্দ বিজেপির সক্রিয় সদস্য। আর সেখানে এই মামলার নিরপেক্ষ শুনানি হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব। শুহদু তাই নয়, বেঞ্চ বদলেরও আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রধান বিচারপতিকে চিঠি আইনজীবী
বিচারপতি চন্দের এজলাসে এই মামলার শুনানি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ, নন্দীগ্রাম মামলাটি বেশ স্পর্শকাতর মামলা। সেখানে এই বেঞ্চে মামলা হলে এই মামলার নিরপেক্ষতা হারাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই দাবিতে এবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। মামলাটি অন্য বিচারপতির এজলাসে পাঠানো হোক এই দাবি জানানো হয়েছে প্রধান বিচারপতির কাছে। যে চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধান বিচারপতির কাছে সেখানে প্রথমেই বলা হয়েছে যে, এক সময়ে বিচারপতি চন্দ বিজেপির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সেখানে এই মামলার নিরপেক্ষ শুনানি কখনই হতে পারে না বলে দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
কোন এজলাসে মামলা?
আদালতের নিয়ম অনুযায়ী কোন মামলা কোন বিচারপতি শুনবেন টা ঠিক করেন প্রধান বিচারপতি কিংবা ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি। প্রথমে এই মামলা বিচারপতি সব্যসাচীর এজলাসে দেওয়া হয়েছিল। এরপর সেখান থেকে বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে এই মামলাটি পাঠানো হয়। কিন্তু যে অভিযোগ উঠছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে এখন মামলাটি কার এজলাসে দেওয়া হবে নাকি কৌশিক চন্দের এজলাসেই চলবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
আদালতের মধ্যেই বিক্ষোভ
অবিলম্বে এই বেঞ্চ বদলের দাবি জানানো হয়েছে আইনজীবীদের একাংশের তরফে। আর এরপরেই কার্যত নজিরবিহীন ভাবে আদালতের মধ্যেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আইনজীবীদের একাংশ। হাই কোর্ট চত্বরের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে এই বিক্ষোভ। মুখে কালো মাস্ক এবং হাতে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আইনজীবীরা। যদিও এদিন শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে এদিন আইনজীবীরা যে পোস্টার ব্যবহার করেছেন তাতে লেখা, 'বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না'। তবে আইনজীবীদের অন্য অংশ জানিয়েছে, পেশার তাগিদে মক্কেলের হয়ে মামলা লড়তেই পারেন। এতে অন্যায় কিছু নেই।
নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের
মামলার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও। টুইট করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। টুইট করেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনও। কুণাল ঘোষ বিচারপতি চন্দের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। আর সেই ছবি পোস্ট করে কুনালের দাবি, ''বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপিদরদী। নন্দীগ্রাম মামলা তাঁর হাতে নিরপেক্ষ থাকবে কি? অনুরোধ, বিচারপতি চন্দ মামলাটি ছেড়ে দিন।'' শুধু টুইট করাই নয়, কুণাল বলেন, নন্দীগ্রামের মামলাটি যথেষ্ট স্পর্শকাতর মামলা। যাকে বিজেপির লিগ্যাল সেলের অনুষ্ঠানে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে তিনি কীভাবে নিরপেক্ষ ভাবে এই মামলার শুনানি করবেন? প্রশ্ন তৃণমূল নেতার। শুধু তাই নয়, একই প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র, ডেরেক ও ব্রায়েন।