মমতার মুখের ওপর কথা, কার এত সাহস! সভাসদদের সামনেই ধমক প্রাক্তন মন্ত্রীকে
বৈঠক চলাকালীন সভাসদদের সামনে কার্যত ধমকের সুরে প্রাক্তন মন্ত্রীকে বসিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফাই দিতে গিয়ে একেবারে নাস্তানাবুদ অবস্থা হল প্রাক্তন মন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষানলে পড়লেন দলেরই প্রাক্তন মন্ত্রী-বিধায়ক। বৈঠক চলাকালীন সভাসদদের সামনে কার্যত ধমকের সুরে প্রাক্তন মন্ত্রীকে বসিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফাই দিতে গিয়ে একেবারে নাস্তানাবুদ অবস্থা হল প্রাক্তন মন্ত্রীর। তাঁকে কোন কথাই বলতে দিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন তাঁর উপর আদৌ সন্তুষ্ট নন তিনি।
মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক চলছিল মঙ্গলবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে বলতে ওঠেন দলের প্রাক্তনমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে থামতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাবিত্রী মিত্রকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এটা প্রশাসনিক বৈঠক। এটা সকলের বলার জায়গা নয়। যাঁকে জিজ্ঞাসা করছি তিনিই উত্তর দেবেন। তাঁর উত্তরই শুধু শোনা হবে।'
মুখ্যমন্ত্রীর এই নিষেধ সত্ত্বেও সাবিত্রী মিত্র বলতে শুরু করে দেন। তিনি বলেন, 'ম্যাডাম, আপনি অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু আমার উপর চাপ রয়েছে। তখনই ধমক দিয়ে ওঠেন মমতা।' তিনি বলেন, 'আপনি এখন বিধায়ক নন। আপনার উপর কোনও চাপই নেই। চুপ করে বসুন। আমি আপনার কোনও কথাই শুনব না।'
কিন্তু সাবিত্রী মিত্রের প্রতি তিনি কেন এত রুষ্ট? রাজ্যে পরিবর্তনের সরকার প্রতিষ্ঠার পর মন্ত্রী হয়েছিলেন সাবিত্রীদেবী। শুরুটা মন্দ হয়নি। কিন্তু তারপরই পড়েন বিপাকে। নিজের জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার হয়ে তাঁর ভালো কাটেনি একেবারেই। বারবার তিনি জড়িয়ে পড়েছেন বিরোধে। বিশেষত জেলারই আর এক মন্ত্রী তথা বিধায়ক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বিরোধী লেগেই ছিল। সেই বিরোধ আজও সর্বজনবিদিত। এতদিনেও মালদহ তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের করাল ছায়া থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলা সত্ত্বেও তৎকালীন দুই মন্ত্রী নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন। সেই অবস্থার জন্যই দুই মন্ত্রীই আজও মমতার কু-নজরে পড়ে রয়েছেন। সাবিত্রী মিত্র বহু চেষ্টা করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরবারে পুরনো আসন ফিরে পাননি। এদিন মালদহ জেলার প্রশাসনিক বৈঠক সেই পুরনো ক্ষতে ফের একবার আঘাত করে গেল। ফের মালদহ তৃণমূলের বিভাজন প্রকাশ্যে চলে এল এদিন।