কল্যাণ কামনা করে রাজ্যবাসীর নামে 'এক গোত্রে' পুজো মুখ্যমন্ত্রীর
সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে কোচবিহার গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক সেরে দলীয় কর্মিসভাতেও বক্তৃতা রাখেন তিনি। আর এই কর্মব্যস্ততার মাঝেও কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি শুধু নিজের জন্য পুজো দেননি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দরুণ রাজ্যবাসীর কল্যাণ কামনা করেও আলাদা পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যবাসীর নামে মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো
নিজের নামে পুজো দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর নামে পুজো দেওয়ার কথা বলেন পুরোহিতকে। তবে গোল বাধে সেখানে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের পুজো শান্ডিল্য গোত্রে দেন। তবে রাজ্যবাসীর পুজো দিতে হলে কী সব গোত্রে পুজো? উপায় বাতলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এবং সেই নিদান মতোই মা-মাটি-মানুষ গোত্রে রাজ্যবাসীর নামে পুজো দেন পুরোহিত। এদিকে পুজো সেরে মুখ্যমন্ত্রী পা বাড়ান রাসমেলার দিকে।

পুজোর কটাক্ষ বিরোধীদের, পাল্টা জবাব মুখ্যমন্ত্রীর
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর নামে পুজো দিয়ে জানান, যে তিনি যেখানেই যান, সবার নামে পুজো দেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাদের পাল্টা অভিযোগ, রাজনৈতিক ফআয়দা তুলতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই পুজো দেওয়া। তবে মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়ে দেন তাঁর কোনও পুজো বা মন্দিরে কম যাওয়ার পিছনের আসল কারণ। তিনি বলেন, "আমি কোনও মেলাতেই যাই না। কারণ আমাকে দেখতে মেলায় লোকেরা হুড়মুড়িয়ে পড়লে ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে যেতে পারে।"

শুরু উত্তরবঙ্গে জমি ফিরে পাওয়ার তোড়জোড়
এদিকে সোমবার কর্মিসভা থেকেই বিধানসভা নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। চলতি বছরে শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ তৃণমূলকে খালি হাতে ফিরিয়েছে। উত্তরবঙ্গের ৮টি আসনের মধ্যে ৭টি পায় বিজেপি, একটি কংগ্রেস। তবে রাজ্যে ক্ষমতি ধরে রাখতে হলে সেই চিত্র বদলাতে হবে দলকে। আর সেই কারণে দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দেন মমতা।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে হুঁশিয়ারি
মমতা উত্তরবঙ্গে দলীয় কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে হুঁশিয়ারি দেন। মমতা এদিন বুঝিয়ে দেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই হার মানতে হয়েছে বিজেপির কাছে। কোনওভাবেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে বরদাস্ত করা হবে না। তৃণমূলে একটাই গোষ্ঠী রয়েছে। একটাই নেতা আছে, তা হল জোড়াফুল। এর বাইরো কেনও গোষ্ঠী নেই। তাই ঝগড়া করবে না। তিনি বলেন, "তোমরা ভাষণ দেবে, আর পার্টি বিষ গিলবে, তা মানা হবে না।" তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়েই পুরপ্রধানের নাম করে 'দুষ্টুমি' করতে মানা করেন। তিনি বলেন, "তোমাকে পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা ভালোভাবে পালন কর। রবি বা অন্যদের কাজে নাক গলাবে না।"

ভালো কাজে সুযোগের কথা বলেন মমতা
পাশাপাশি বর্তমানে দল উত্তরবঙ্গে ভালো কাজ করছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রসংশার সঙ্গে তাঁর গলায় আক্ষেপের সুরও ছিল। তিনি বলেন, "এখন যে কাজটা করছেন, সেটা ছ-মাস আগে করলে বিজেপি কোনওদিন জিততে পারত না।" সোমবার কোচবিহারে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আফশোস, আজ যে ছবিটা দেখছি, এটা যদি লোকসভা ভোটের আগে থাকত, তাহলে হারতে হত না তৃণমূলকে। পাশাপাশি তিনি বলেন, "যারা ভআলো কাজ করছে, তাদের আমরা নজরে রাখছি। তাদেরকে দল সুযোগ দেবে।"
ভিন রাজ্যের সহমর্মীদের ফাঁদে পা দেবেন না, নাম না করে ওয়েইসিকে আক্রমণ মমতার