গান্ধীবাদ-সুভাষবাদ মিলিয়ে দিলেন মমতা, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে তৈরি হল নয়া মিথ
গান্ধীবাদ-সুভাষবাদ মিলিয়ে দিলেন মমতা, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে তৈরি হল নয়া মিথ
মেলালেন তিনি মেলালেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও মহাত্মা করমচাঁদ গান্ধীজিকে তিনি মিলিয়েই দিলেন। নেতাজির ১২৬তম জন্মজয়ন্তীতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিলিয়ে দিলেন গান্ধীবাদ আর সুভাষবাদকে। এমনকী তিনি জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে জয়ধ্বনি দিলেন গান্ধীবাদ আর সুভাষবাদকে একীভূত করে।
রবিবার ধর্মতলা ময়দানে রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী তথা ১২৬ জন্মদিবস পালন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিতির ছিলেন বাংলার বিভিন্ন জঘতের গুণীজনেরা। ছিলেন নেতাজি পরিবারের প্রায় সকলেই। সুগত বসু, সুমন্ত বসু থেকে শুরু করে চন্দ্র বসুও উপস্থিত ছিলেন নেতাজি-জয়ন্তীকৃর অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে গান্ধীজি-নেতাজিকে মিলিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নেতাজি-গান্ধীজিকে মিলিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের দেশে এক অভূতপূর্ব কারণে স্বদেশি আন্দোলনকারী নেতাদের মধ্যে লড়িয়ে দেওয়ার এক প্রবণতা আদি কংগ্রেস ও বামপন্থীদের কাছে রাজনৈতিক অস্ত্র ছিল। কংগ্রেসিরা গান্ধীজিকে আদর্শ ও নেতাজিকে অবজ্ঞা করার একটি মিথ তৈরি করে ফেলেছিলেন। এবং তা ছিল স্বাধীনতার পর থেকেই।
তেমনই বামপন্থীরা, বিশেষ করে কমিউনিস্টরা গান্ধীজিকে ঘৃণা করতেন এবং নেতাজিকে বামপন্থী বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এদিন নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসী ও বামপন্থীদের সেই মিথ ভেঙে দিলেন। তিনি গান্ধীজি ও নেতাজিকে মিলিয়ে দিয়ে নতুন এক মিথ তৈরি করলেন।
মমতা বলেন, গান্ধীজি ও নেতাজির মিলিত লড়াইয়ে ভারতকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এঁরা দেশনায়ক। তিনি বারবার গান্ধীজি ও নেতাজির নাম একসঙ্গে নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন উভয়েই ছিলেন সমান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি নেতাজি প্রতি গান্ধীজির ভালোবাসা এবং গান্ধীজির প্রতি নেতাজির শ্রদ্ধার কথা তুলে ধরেছেন। মমতা বলেন, উভয়ের মধ্যে মতভেদ ছিল ঠিকই, কিন্তু নেতাজি চিরকাল গান্ধীজিকে আদর্শ মেনেছেন।
মোদীর 'দেখনদারি’কে কটাক্ষ মমতার, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতেও বাদ গেল না রাজনীতি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন গান্ধীজির নেতাজি-প্রীতি এবং বাংলাকে কেন্দ্র করে তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রাম গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেছেন। আবার গান্ধীজির প্রতি নেতাজির শ্রদ্ধার কথাও তুলে ধরেছেন উল্লেখযোগ্য উদাহারণ দিয়ে। তিনি বলেন নেতাজি তাঁর সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের নাম রেখেছিলেন গান্ধীজির নামে। আবার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে গান্ধীজি বারবার সুভাষকে স্মরণ করেছেন।
আর দুই দেশনায়ককে মিলিয়ে দিয়ে এই সরকারের সমালোচনাও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কেন্দ্রের সরকার এই পরিস্থিতিতে অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে দিচ্ছেন, নেতাজির ট্যাবলো বাতিল করেছেন। আবার সেই কুকীর্তি ঢাকতে নেতাজি মূর্তি গড়ার ঘোষণা করছেন। শহিদ-সেনানির স্মরণে অমর জওয়ান জ্যোতি এতদিন জ্বলছিল। তা নিভিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রের সরকার।