ভাষা দিবসে মাইকে ‘শক’ খেলেন মমতা! তবু অব্যর্থ বাণ হানলেন বিজেপির উদ্দেশ্যে
‘মাইক্রোফোনে হাত দিলেই বৈদ্যুতিক শক খেতে হচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এই কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লেন সভার আয়োজকরা। কী কারণে এই সমস্যা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়লেন প্রত্যেকে।
ভাষা দিবসের মঞ্চে মাইক্রোফোনে হাত দিয়েই পোডিয়াম থেকে সরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। 'মাইক্রোফোনে হাত দিলেই কারেন্ট শক মারছে।' মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এই কথা শুনেই সঙ্গে সঙ্গে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লেন সভার আয়োজকরা। কোথায় মাইকম্যান? কী কারণে এই সমস্যা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়লেন প্রত্যেকে। উত্তেজনা ছড়াল দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যেও। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে কর্ডলেস মাইক্রোফোন তুলে নিয়ে শুরু করলেন ভাষা দিবসের বক্তৃতা। আশ্বস্ত হলেন উপস্থিত সদস্য-সমর্থকরা।
এদিন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের সরকারি জনসভার মঞ্চ থেকেই ভাষা দিবস পালেনর ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপলক্ষেই মঞ্চের সামনেই করা হয়েছিল ভাষা শহিদ বেদি। সেই বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, 'এশিয়ায় বাংলা ভাষার স্থান দ্বিতীয়, আমাদের মাতৃভাষা বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। আমরা আমাদের এই গর্বের ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষাকেও স্বীকৃতি দিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে সব ভাষাই সমান মর্যাদা পায় এই জন্যই যে, সব ভাষাই কারও না কারও মাতৃভাষা। আমাদের কাছে আমাদের মাতৃভাষায় যেমন কদর রয়েছে, অন্যের কাছে তাঁর মাতৃভাষার কদর। সেই কারণেই কোনও ভাষাকেই আমরা অবহেলা করি না, অসম্মান করি না। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।' তিনি এদিন ওপার বাংলার মানুষকেও শ্রদ্ধা জানান। তাঁদের ভালো থাকার কথা বলেন। তাঁদের আন্দোলনকে অভিবাদন জানান এপার বাংলার ভাষা দিবসের মঞ্চ থেকে।
এদিন সরকারি জনসভা থেকে তিনি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের পরিষেবা তুলে দেন উপভোক্তাদের হাতে। সেইসঙ্গে ১৩১টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, আর ৩১টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। আর এই মঞ্চ থেকে তিনি একযোগে সমালোচনা করেন সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির। তিনি বলেন, এই বিরোধী দলগুলের টিভিতে বসে ভাষণা দেওয়া ছাড়া কোনও কাজ নেই। বাড়ির বউও এঁদের পছন্দ করেন না বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপিকে জমিজার-জোতদারদের পার্টি বলেও আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'এই পার্টি হল জমিদার ও জোতদারদের দালাল। আজ দিল্লি বলছে, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করবে। সবই ধাপ্পা। সরকারে এসেছে ধাপ্পা দিয়ে আর যাওয়ার সময়ও ধাপ্পা দিয়ে যাচ্ছে এই সরকার। টাকা নেই তবু বলছে আয় দ্বিগুণ করবে।'
তিনি বলেন, 'এদিকে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে সব- কাউকে গ্রেফতার করতে পারছে না। যারা টাকা লুঠ করছে, ব্যাঙ্ক লুঠ করছে, তাদের পাশে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে। সব কিছুর উপরে ট্যাক্স বসিয়ে গরিবের টাকা লুঠ করে নিচ্ছে ধাপ্পাবাজির সরকার।'