মুকুলের জায়গায় শুভেন্দুই পয়লা নম্বর বাজি! নয়া চালে মাত দিতে বদ্ধপরিকর মমতা
২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে সম্প্রতি দল ছেড়েছেন মুকুল রায়। তাঁর দলত্যাগে তৃণমূল সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে জঙ্গলমহলে।
সম্প্রতি মুকুল রায়ের মুখে শুভেন্দু অধিকারীর গুণগান শোনা গিয়েছিল। বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ছিলেন বেশ গদগদ। সেই শুভেন্দুকেই 'অশ্বমেধের ঘোড়া' বানাচ্ছেন মমতা। মুকুল রায়কে হারিয়ে জঙ্গলমহলের সংগঠনের ভার তিনি তুলে দিতে চান দলের তরুণ তুর্কি নেতার হাতেই।
পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনেই। ঠিক তখনই তৃণমূলের সামনে মুকুল রায়ের চ্যালেঞ্জ। ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে সম্প্রতি দল ছেড়েছেন মুকুল রায়। তাঁর দলত্যাগে তৃণমূল সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে জঙ্গলমহলে। জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সংগঠন নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন মুকুল রায়। প্রতিটি ক্ষেত্র তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। স্বভাবতই জঙ্গলমহলে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা নেহাত কম নয়।
তাই মুকুল রায়ের অনুপস্থিতিতে দলের সংগঠনের কী হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুলের প্রস্থানের পরই তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনিই সংগঠনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেবেন এমনটাই মনে করেছিলেন রাজনৈতিক মহল। কিন্তু জঙ্গলমহলে গিয়ে তিনি স্পষ্ট করে দিলেন জঙ্গলমহলের সংগঠন এখন থেকে দেখবেন শুভেন্দু অধিকারী।
এর আগে শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি মুর্শিদাবাদ ও মালদহের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দুই দায়িত্বই শুভেন্দু পালন করেছেন সাফল্যের সঙ্গে। এবার জঙ্গলমহলের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে বর্তেছে। রাজনৈতিকমহল মনে করছে, মুকুলের দলত্যাগের পর শুভেন্দু অধিকারী টার্গেট হয়ে গিয়েছেন। মুকুল রায় থেকে শুরু করে দিলীপ ঘোষ শুভেন্দুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় শুভেন্দুর গুরুত্ব বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুঝিয়ে দিলেন মুকুল রায়ের পর তিনি দক্ষ সংগঠক হিসেবে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেন শুভেন্দুকেই। এর আগে শুভেন্দু অধিকারীকে যুব সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বদলে অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন পদ দিয়েছিলেন তাঁকে। তাঁর জায়গায় পরবর্তী সময়ে যুব-র দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ভাইপো অভিষেকের হাতে।
পরবর্তী সময়ে মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। দুই জেলাতেই তৃণমূলের বিস্তারলাভে সাফল্য এনে দেন দলকে। এরই ফাঁকে তিনি পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্বও পান। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরে শুভেন্দু ছিলেন মধ্যমণি। এর আগে জঙ্গমহলের কোনও সভাতেই শুভেন্দুকে সেভাবে দেখা যায়নি।
এর আগে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন দলের দায়িত্বে। তাঁর উপরই আস্থা রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবারও সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের জঙ্গলমহলের দায়িত্ব হাতে উঠে এল শুভেন্দুর। এখন তিনি জঙ্গলমহলের সংগঠনকে অটুট রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারেন কি না, তাই দেখার। সেইসঙ্গে শুভেন্দুকে এই দায়িত্ব দিয়ে মমতা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলেন।