মুকুলকে রেয়াত নয়, জঙ্গলমহলে সংগঠন অটুট রাখতে মমতার বাজি স্রেফ একটি শব্দ
কেননা জঙ্গলমহলে মুকুলের প্রভাব-প্রতিপত্তি দুই ছিল। নিজে হাতে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সংগঠন সাজিয়ে ছিলেন। জঙ্গলমহলকে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। সেখানেই আতঙ্ক তৃণমূলের।
উন্নয়নের প্রশ্নে কোনও সমাঝোতা নয়। মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, উন্নয়ন দিয়েই তিনি মানুষের মন জয় করে নিতে পারবেন। দলের সমস্ত দুর্বলতা ঢেকে দেওয়া সম্ভব ওই একটি শব্দেই। কারও জন্যে কিছু আটকাবে না। তাঁর এবং তাঁর সরকারের উন্নয়নে সদিচ্ছা রয়েছে। সেই উন্নয়নই হবে সংগঠন অটুট রাখার দাওয়াই।
মুকুল রায় দল ছাড়ার পরই, জঙ্গলমহল নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তৃণমূলে। কেননা জঙ্গলমহলে মুকুলের প্রভাব যথেষ্ট। মুকুল রায় নিজে হাতে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সংগঠন সাজিয়ে ছিলেন। জঙ্গলমহলকে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। শুধু তাই নয়, জঙ্গলমহলে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও অনেক বেশি।
তাই তৃণমূলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, মমতার শিবির ছেড়ে অনেকেই মুকুলের শিবিরে যোগ দিতে পারেন। আর সেই ভাবনা যে একেবারে অমূলক নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং মমতা। তিনি ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে দুই মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো ও শান্তিরাম মাহাতোকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেন। তাঁদের কাজের চূড়ান্ত সমালোচনা করেন। এমনকী চূড়ামণি মাহাতোকে সরিয়ে দেওয়া হয় জেলা সভাপতির পদ থেকে।
মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই চূড়ামণি ও শান্তিরাম মাহাতোকে মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়তে হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা। তাঁদের শুধু ধমক দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এক মন্ত্রীর একটি বিশেষ পদও কেড়ে নিয়েছেন। সেইসঙ্গে বুঝিয়ে দিয়েছেন, উন্নয়নের প্রশ্নে তিনি কোনও কিছুকেই রেয়াত করবেন না।
মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাস করেন, দুষ্ট গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভালো। নিজেকে শুধরে নেওয়ার সময় দেবেন তিনি, যদি কেউ না শোধরান, তো তাঁকে পত্রপাঠ রাস্তা দেখতে বলতে তিনি দ্বিধা করবেন না। তিনি মনে করেন, উন্নয়নের পথে থাকলে, মানুষ তাঁর সঙ্গে থাকবেন। আর মানুষই হল আসল শক্তি। সকলের মনে রাখা উচিত, মানুষই নেতা বানায়। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে কেনও নেতারই কোন গুরুত্ব থাকবে না।
সেই সার সত্য মেনেই উন্নয়নে জোর দিয়েছেন তিনি। একগুচ্ছ প্রকল্পের ডালি সাজিয়ে তিনি জঙ্গলমহলে হাজির হয়েছেন। এদিন ৪৫টিরও বেশি নয়া প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। ৫০টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন জঙ্গলমহলে। এছাড়া ৪০টি পরিষেবা প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত কাজই দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।