দু’বছরেই কারখানা, বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে জঙ্গলমহলবাসীকে কৃতিত্ব মমতার
রাজ্যে শিল্প হচ্ছে না বলে আওয়াজ তুলেছে বিরোধীরা। তার মধ্যে মাত্র দু-বছরের মধ্যে জঙ্গলমহলের বুকে শিল্প স্থাপন করে দেখিয়ে দিল রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
রাজ্যে শিল্প হচ্ছে না বলে আওয়াজ তুলেছে বিরোধীরা। তার মধ্যে মাত্র দু-বছরের মধ্যে জঙ্গলমহলের বুকে শিল্প স্থাপন করে দেখিয়ে দিল রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে দু বছরেরও কম সময়ে জিন্দল গোষ্ঠী সিমেন্ট কারখানা চালু করে দিল। সোমবার সেই সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন:দু'বছরেই কারখানা, বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে জঙ্গলমহলবাসীকে কৃতিত্ব মমতার]
মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরে এই সিমেন্ট কারখানার পথ চলার দিনই জিন্দল গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, ইতিমধ্যেই ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সিমেন্ট কারখানায়। খুব শীঘ্রই আরও ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। ২৪ লক্ষ টন করে সিমেন্ট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। এই কারখানার ফলে ৮০০ কর্মসংস্থানও হবে। এছাড়া বিদ্যুৎ শিল্পেও লগ্নি করার আশ্বাস দিয়েছেন জিন্দলরা।
২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। প্রথম ইস্পাত কারখানা করা হবে বলে মনস্থ করলেও, পরে সিমেন্ট কারখানা দিয়েই রাজ্যে পথ চলা শুরু করার কথা জানান জিন্দলরা। সেইমতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি মেনে মাত্র দু-বছরেই কারখানা গড়ে ফেললেন এই শিল্পগোষ্ঠী।
মাত্র দুবছরের মধ্যেই এই কারখানা চালুতে এলাকাবাসী বেজায় খুশি। তাঁরা চান এবার ইস্পাত কারখানাও গড়া হোক। রাজ্য সরকার এই দিকেও এবার নজর দিক। বাম আমলে এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল। কিন্তু তারপর সে অর্থে কিছুই এগোয়নি। রাজ্যে পরিবর্তনের সরকার এসে ইস্পাত কারখানার পরিবর্তে প্রথমে সিমেন্ট কারখানার দিকে ঝোঁকে।
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা মতোই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই জঙ্গলমহলে সিমেন্ট কারখানা গড়ে বিরোধীদের বার্তা দিল। মমতার সরকার জানিয়ে দিল, বিরোধীরা যতই কুৎসা করুক, তিনি উন্নয়নের মধ্যমেই সব প্রশ্নের জবাব দেবেন। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগের দিন এই শালবনির মঞ্চ থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পে লগ্নির আশ্বাসও পেয়ে গেলেন তিনি।
[আরও পড়ুন:বাংলায় ভারী শিল্প আনতে 'ব্লু-প্রিন্ট' তৈরি মমতার, সজ্জা সারা বাণিজ্য সম্মেলনের]
এদিন শালবনিতে কারখানার উদ্বোধন ঘিরে ছিল সাজো সাজো রব। আগেই সপরিবারে পৌঁছে যান শিল্পপতি সজ্জল জিন্দল। শুধু কারখানা করেই ক্ষান্ত নন জিন্দল গোষ্ঠী। এলাকার উন্নয়নে বিদ্যুৎ শিল্পেও বিনিয়োগ করার বার্তা দিয়েছেন জিন্দলরা। পাল্টা এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন, এবার ইস্পাত কারখানাও গড়ে তোলা হোক।
রাজ্যে উন্নয়নের লক্ষ্যেই ২০০৮-এ জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল। তারপর মাওবাদী ক্রিয়াকলাপের জেরে বন্ধ হয়ে য়ায় প্রকল্প। ২০১১-য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রতিষ্ঠার রক জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরে। তারপর মুখ্যমন্ত্রী ফের জিন্দলদের শালবনিমুখী করতে সমর্থ হন। এবং মাত্র দুবছরে শিল্পস্থাপন হয়।
মুখ্যমন্ত্রী সেদিনের প্রতিকূলতার কথা তুলে ধরে সাধারণের উদ্দেশে বলেন, আপনারা না সহযোগিতা করলে এই কারখানা হত না। এত তাড়াতাড়ি কারখানা চালুও করা যেত না। যাঁরা জমি দিয়েছেন তাঁদের বিশেষ ধন্যবাদ দেন। মমতা বলেন জিন্দল পরিবারের ঘোষণা বেঙ্গল সা্মিটের আগে বড় প্রাপ্তি। গরিবের জন্য ভালো কাজ করছে জিন্দল পরিবার। শালবনির এই কারখানা জেরে আরও অনেক কর্মসংস্থান হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন:তৃণমূল ভয় পায় বিজেপিকে! এফআইআর-এর জবাব নলেন গুড়ের সন্দেশে দিলেন দিলীপ]