একুশের ভোটে টিকিট পেতে এবার ‘মানদণ্ড’ কী, পিকের রিপোর্ট কার্ডে চোখ মমতার
একুশের ভোটে টিকিট পেতে এবার ‘মানদণ্ড’ কী, পিকের রিপোর্ট কার্ডে চোখ মমতার
২০২১-এর নির্বাচন তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। লোকসভার ধাক্কা সামলে বিধানসভা দখলে রাখতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। এবার তাই কোনওরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে না গিয়ে প্রশান্ত কিশোরের রিপোর্ট কার্ডের উপর ভিত্তি করেই বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী স্থির করতে চাইছে তৃণমূল। এবার প্রার্থী নির্বাচনে তাই বেশ কিছু মানদণ্ড খাঁড়া করা হয়েছে।
পিকের রিপোর্ট কার্ড দেখেই টিকিট দেবেন মমতা
২০১৯-এ নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পরই জনসংযোগে জোর দিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট বিতরণে এবার নির্ধারক হয়ে উঠবেন তিনিই। তাঁর রিপোর্ট কার্ডের উপর নির্ভর করছে অনেকের ভাগ্য। তাঁর রিপোর্ট কার্ডের উপর ভিত্তি করেই মমতা চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবেন।
যে মানদণ্ড এবার নির্ধারণ করবে তৃণমূলের প্রার্থী
সাজাচ্ছেন দলীয় সূত্র জানিয়েছে, প্রশান্ত কিশোরের টিম রিপোর্ট তৈরি করছে, কতকগুলি নির্ধারিত কারণের উপর ভিত্তি করে। বর্তমান বিধায়ক বা প্রস্তাবিত প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, বিগত পাঁচ বছরে তাঁর কার্যকারিতা, দলীয় কর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা, স্থানীয় ইউনিটের মধ্যে সবাইকে মানিয় চলার ক্ষমতা এবং সর্বোপরি বিশুদ্ধ ভাবমূর্তি- এই কারণগুলির উপরই রিপোর্ট কার্ড সাজাচ্ছেন প্রশান্ত।
পি্কের আই-প্যাকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রার্থী বাছাইয়ে
এবার উপযুক্ত মানদণ্ড, যথাযথ মানদণ্ড বিচার করেই তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট দেওয়া হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করতে তাই আই-প্যাকের ভূমিকা হবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর দল বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে ইনপুট সরবরাহ করবে। জনগণের মধ্যে প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা, দলের পদমর্যাদা, প্রোফাইল সম্পর্কে অনুসন্ধান করবে।
সমীক্ষা রিপোর্ট মেনেই মমতাকে রিপোর্ট দেবেন পিকে
সম্প্রতি একটি সমীক্ষাও চালানো হচ্ছে। টিকিট বিতরণ করার সময় প্রশান্ত কিশোরের ইনপুটকে দলীয় নেতৃত্ব গুরুত্ব দেবে। এবং দলের প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোট কথা এবার একেবারে মেপে পা ফেলতে চাইছে তৃণমূল। কোনওরকম ভুলভ্রান্তি এবার বুমেরাং হতে পারে।
টিকিট বিলিতে 'দিদিকে বলো'র পারফরম্যান্সও বিবেচনা
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, 'দিদিকে বলো' প্রচার পরিকল্পনার সময় বিধায়কদের পারফরম্যান্স সম্পর্কিত রিপোর্টও টিকিটের বরাদ্দের জন্য বিবেচিত হবে। সূত্র জানিয়েছে, "এমন কিছু খবর পাওয়া গেছে যে কিছু বিধায়ক এই প্রোগ্রামটি গুরুত্বের সাথে পরিচালনা করেননি। এই বিষয়টিকেও বিবেচনা করা হবে বিধানসভার টিকিট বিতরণের আঙ্গিকে।
২০১৯-এর ধাক্কার পর তৃণমূলের কাছে কড়া চ্যালেঞ্জ একুশে
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৮টি জিতে বিজেপি কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। তৃণমূলকে ৩৪ থেকে ২২-এ ঠেলে দিয়ে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল বিজেপি। এরপরই পশ্চিমবঙ্গ আসন্ন এপ্রিল-মে মাসে বিধানসভা ভোটকে টার্গেট করেছে বিজেপি। তাই তৃণমূলের কাছে এবার কড়া চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ দৃঢ় হাতেই মোকাবিলা করতে প্রস্তুত তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রশান্ত কিশোরের টিমের পরামর্শ মেনেই চলবেন মমতা
সূত্রের খবর, "২০১৬ সালে তৃণমূল অপেক্ষাকৃত সহজ লড়াইয়ের মুখোমুখ হয়েছিল। সুতরাং টিকিট বিতরণ করার সময় তৃণমূলের কাছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বিলাসিতা ছিল। তবে এবার বিষয়গুলি ভিন্ন। এবার কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গা নেই। প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর আই-প্যাকের পরামর্শ তাই আবশ্যক হয়ে উঠেছে।
তৃণমূলের রদবদলের নেপথ্যেও পিকের রিপোর্ট কার্ড
গত সপ্তাহে তৃণমূলে বি্রাট রদবদল হয়েছে। এই রদবলের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর রিপোর্টের উপরই ভিত্তি করে সংগঠন সাজিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দেখা গিয়েছে যুব নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ে আসতে। আবার আদি নেতাদেরও অবজ্ঞা করা হয়নি। একপ্রকার আদি-নব্য মিশেলেই তৈরি হয়েছে তৃণমূলের ‘রণ-বাহিনী'।
প্রশান্ত কিশোরের হাতে 'টিকি বাঁধা’ তৃণমূল বিধায়কদের! একুশের ভোটে জল্পনা তুঙ্গে