বামেদের প্রধান শত্রু কারা? মমতার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা
বামেদের প্রধান শত্রু কারা? মমতার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে কি বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতৃত্বে মানবে বামেরা? লাখ টাকার সেই প্রশ্ন নিয়ে সিপিএম দ্বিধাবিভক্ত। একপক্ষ জানিয়েছে বিজেপি বিরোধিতায় যে কোনও মঞ্চে যেতে তারা প্রস্তুত। অন্যপক্ষ বলছে, একেবারেই অবান্তর এই প্রশ্ন। কেননা তৃণমূলের বিজেপি বিরোধিতার কোনও ভিত্তি নেই। এ প্রসঙ্গেই সিপিএমের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের বিজেপি-বিরোধিতা অবান্তর সিপিএমের কাছে
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের পর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন, বিজেপি বিরোধিতায় তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেও রাজি। কিন্তু সুজন চক্রবর্তীর সাফল কথা, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল কবে লড়াই করল? বিজেপির সঙ্গে তো সরকার গড়েছে ওরা। এখন মুখে বিজেপি বিরোধিতার কতা বললেও, কবে যে আবার সেটিং হয়ে যাবে, তাই তৃণমূলের বিজেপি-বিরোধিতা অবান্তর তাঁর কাছে।
Recommended Video
যদি মনে হয় এই মুহূর্তে বিজেপি সবথেকে বড় শত্রু
বামেদের এই দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার প্রশ্নেই মমতার বার্তা, বামেরা ঠিক করুক তাদের প্রধান শত্রু কারা। যদি মনে হয়, তৃণমূল তাঁদের প্রধান শত্রু, তবে তাঁদের সঙ্গে আসার দরকার নেই। আর যদি মনে হয় এই মুহূর্তে বিজেপি সবথেকে বড় শত্রু, তবে সবাই আসুন আমরা এক হয়ে এই লড়াই লড়ব।
বিজেপি-বিরোধিতায় সবাইকে এক করার পরিকল্পনায় মমতা
একুশের নির্বাচনে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বিজেপির পর্যুদস্ত হয়েছে। তারপর স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় রাজনীতিতে অন্যতম প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে উঠেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বিরোধী দলগুলিকে বিজেপি-বিরোধিতায় এক করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে তিনি দিল্লি পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছেন।
বিজেপি বিরোধিতায় সবাই যখন এক মঞ্চে, বামেরা পৃথকে
শুধু জাতীয় কংগ্রেস নয়, প্রদেশ কংগ্রেসও তৃণমূলের প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখানো শুরু করে দিয়েছে। ২০২৪-এর লক্ষ্যে তাঁরা হাইকম্যান্ডের উপর ভরসা রাখতে শুরু করে দিয়েছে জোট নিয়ে। এই অবস্থায় বামেরা পড়েছেন ধন্দে। বিজেপি বিরোধিতায় সবাই যখন এক মঞ্চে আসার তোড়জোড় শুরু করেছে, তখন বামেরা একঘরে হয়ে যাচ্ছে।
মমতার বিজেপি বিরোধী মুখ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন বামেদের
সিপিএমের একাংশ এখনও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাংলায় বিজেপিকে জামাই আদর করে ডেকে আনার অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত। অভিযোগ, তৃণমূলের আমলে বিজেপি ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। অর্থাৎ সিপিএম ঘুরিয়ে বলতে চাইছে, জাতীয় প্রেক্ষাপটে মমতার বিজেপি বিরোধী মুখ হতে চাওয়া আদৌও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এবং তা গ্রহণযোগ্যও নয়।
সিপিএম মমতার বিরোধিতায় একই জায়গায়
সিপিএমের ওই অংশ মনে করছে, কেরলে সিপিএম প্রধান শক্তি, সেখানে বিজেপির জামানত জব্দ হয়েছে। অথচ এ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপি রেকর্ড ফলাফল করেছে। অর্থাৎ সিপিএম মমতার বিরোধিতায় একই জায়গায় থাকতে চাইছে। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরোধিতা তারা করতে চাইছে সমদূরত্বে থেকে।
কংগ্রেস আর তৃণমূল কাছাকাছি এলেও বামেরা চিন্তায়
এমতাবস্থায় তৃণমূলের সঙ্গে বামেরা এক হবে কি না প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কংগ্রেস আর তৃণমূল অনেক কাছাকাছি এসে গিয়েছে। একুশে বিরোধী ঐক্যের ডাক দেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে গিয়েছেন। সেখানে তিনি অ-বিজেপি দলগুলিকে এক করার চেষ্টা করছেন। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও আলাদা করে তিনি বৈঠক করেন। কংগ্রেস আর তৃণমূল কাছাকাছি এলেও বামেরা চিন্তায় তাঁরা কোন অবস্থান নেবেন।
বামেরা বিজেপি বিরোধী ঐক্যে সামিল হবে, উত্তর মেলেনি সেই প্রশ্নের
এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী ঐক্যের প্রধান মুখ হতে পারেন বলেই রাজনৈতিক মহলের বেশিরভাগ অংশ মনে করছে। সেক্ষেত্রে কী হবে বামেদের অবস্থান। বামেরা কি তৃণমূল সুপ্রিমোর নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধী ঐক্যে সামিল হতে পারবে। নাকি তারা আলাদা থেকেই বিজেপি বিরোধিতা করে যাবে। উত্তর মেলেনি সেই প্রশ্নের