শুভেন্দুকেই কি বার্তা দিলেন ঘুরিয়ে, নির্বাচনী প্রচারের ময়দানে যে ইঙ্গিত মমতার
মমতা বাঁকুড়ার সভায় বলেছেন, সারা বাংলায় আমিই অবজার্ভার। কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, তার এ টু জেড খবর আমি রাখি। আমাকে লুকনো যাবে না। আমি জানি অনেকে তৃণমূল করে, আবার এদিকে ওদিকে যোগাযোগ রাখে। আপনারা যতই আড়াল করুন, সব জানি আমি। এই বার্তায় কি তিনি ঘুরিয়ে শুভেন্দুকেই বিঁধলেন! শুরু হয়েছে চর্চা।


গোটা রাজ্যে আমিই অবজার্ভার, বললেন মমতা
মমতা বলেন, রাত দেড়টা দুটোয় কার বাড়ি কে যাচ্ছে, কে ফোনে কথা বলছে। সব খবর আছে আমার কাছে। কাজের চাপ ছিল তাই একটু দেরিতে শুরু করলাম। এই বাঁকুড়ার মাটি থেকে কড়া হাতে রাশ ধরেই তিনি বলেন, গোটা রাজ্য আমিই অবজার্ভার। কে কোথায় কার সঙ্গে দেখা করছে সব আমি জানি।

মমতা অবজার্ভার শব্দটি ব্যবহার করলেন কেন
এখন প্রশ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাৎ অবজার্ভার কথাটি ব্যবহার করলেন কেন, কেনই বা তিনি বললেন, কে কোথায় কার সঙ্গে দেখা করছে, সব আমি জানি। এই দুটি কথা দিয়ে কি তিনি শুভেন্দুকেই ইঙ্গিত করলেন? শুভেন্দু বেশ কয়েটি জেলায় অবজার্ভার ছিলেন। তাঁর সঙ্গে বিবাদ অবজার্ভার পদ তুলে নেওয়া থেকেই। তারপর সম্প্রতি তাঁর বিজেপি যোগের খবর রটেছে।

শুভেন্দুকে নিয়ে আগ বাড়িয়ে কেন বলতে যাবেন মমতা
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা অংশের বক্তব্য, কেন হঠাৎ শুভেন্দুকে নিয়ে আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই তো চাইছেন শুভেন্দুকে ফের তৃণমূলে সক্রিয় করতে। তাই পিকেকে তিনি শুভেন্দুর বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। আবার সৌগত ও সুদিপকে দায়িত্ব দিয়েছেন শুভেন্দুকে সঠিক লাইনে আনতে।

শুভেন্দুকে নিশানা করে বালখিল্য করবেন, ভাবা বৃথা
দুদিন আগে শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সৌগত রায়ের। সেই বৈঠককে সফল বলা না গেলেও ব্যর্থ বলা যায় না। সৌগত নিজে বার্তা দিয়েছেন এখনও জট কাটেনি। ফের বৈঠকের সম্ভাবনাও তিনি উড়িয়ে দেননি। তাই এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে নিশানা করে বালখিল্য করবেন, এমনটা ভাবা বৃথা।

তৃণমূলের অনেক নেতা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন
রাজনৈতিক মহলের বড় একটা অংশ মনে করছেন, তৃণমূলের অনেক নেতা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। আবার উল্টোটাও হতে পারে বিজেপি অনেক তৃণমূল নেতাকে টোপ দিয়ে রেখেছেন। ফলে রাতের অন্ধকারে অনেক কিছুই ঘটছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বার্তা দিতে পারেন বাঁকুড়ার মঞ্চ থেকে। শুধুমাত্র শুভেন্দুকে নিশানা করে তিনি কিছু বলেননি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের রাশ কড়া হাতে ধরছেন
সাম্প্রতিককালে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছে। কোথাও কোথাও দলের পুরনো নেতাদের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিভেদ বাড়ছে নতুন-পুনরনো নেতাদের মনে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি সচেষ্ট তৃণমূলকে ভাঙতে। এই কঠিন আবহে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের রাশ কড়া হাতে ধরতেই এমন বিবৃতি দিয়েছেন।

সারা ভারতে পারলেও বাংলাটা পারলাম না, বলতে হবে বিজেপিকে
মমতা বলেন, যাঁরা ভাবছেন বাইচান্স বিজেপি ক্ষমতায় চলে আসতে পারে। তাই তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁদের জন্য বলছি, বিজেপি বাংলায় কোনওদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নির্বাচন শেষে বিজেপিকে বলতে হবে- সারা ভারতে পারলেও বাংলাটা পারলাম না। বাংলায় ওরা কোনওদিন ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। বাংলার মানুষ ওদের এন্ট্রি দেবে না।

এবার আমিই দল দেখব, দলের নজরও রাখব আমিই
মমতা দলের উদ্দেশ্যে, আরও বলেন, কোথায় কে দল দেখবে, তা ভাবার দরকার নেই। কর্মী হিসেবে আমি সারা বাংলায় অবজার্ভার। কাজের চাপ ছিল বসে কিছু আলগা দিয়েছিলাম। তবে নির্বাচন আসছে, এবার আমিই দল দেখব। সরকারি কাজকর্মের যেমন নজর রাখি, দলের নজরও এবার রাখব আমিই। দলের নিচুতলার কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, আপনারাও লক্ষ্য রাখুন, কারা দল ভাঙাতে আসছে রাতের অন্ধকারে।
সিপিএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপির হার্মাদে পরিণত হয়েছে, বাঁকুড়ায় হুঙ্কার মমতার