কংগ্রেস বিধায়কের উপরই ভরসা মমতার! পছন্দের সভাপতিকে সরিয়ে দায়িত্ব প্রদান
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সংকট তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। যাঁদের উপর ভরসা করেছিলেন, তাঁরা একটা আসনও এনে দিতে পারেননি। তাই উত্তরবঙ্গে শোচনীয় ফল হয়েছে তৃণমূলের। পায়ের তলার মাটিও সরে গিয়েছে।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সংকট তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। যাঁদের উপর ভরসা করেছিলেন, তাঁরা একটা আসনও এনে দিতে পারেননি। তাই উত্তরবঙ্গে শোচনীয় ফল হয়েছে তৃণমূলের। পায়ের তলার মাটিও সরে গিয়েছে। ২০২১-এর আগে তাই পুরোপুরি গেম চেঞ্জ করে দিলেন মমতা। পছন্দের সভাপতিকে সরিয়ে আনলেন কংগ্রেস বিধায়ককে।
দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলে ভাঙন
জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর। এই জেলায় তৃণমূলকে নাস্তানাবুদ করে জিতেছে বিজেপি। তারপর ভাঙন ধরিয়ে তছনছ করে দিয়েছে তৃণমূলকে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে লোকসভায় হেরে যাওয়া সাংসদ পদপ্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়ার পরই ভাঙন ধরে তৃণমূলে। বিপ্লব মিত্র নাম লেখান গেরুয়া শিবিরে। সঙ্গে অনুগামীরাও।
জেলা পরিষদও হাতছাড়া হয় তৃণমূলের
এর ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদও হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। যদিও পরে তা ফের ফিরে আসে তৃণমূলে হাতে। অর্পিতা ঘোষ দক্ষতা দেখিয়ে ভাঙন রুখতে সমর্থ হয়। আর বিপ্লব মিত্রও বিজেপিতে গিয়ে আর তৃণমূলকে ভাঙতে বেশি সচেষ্ট হননি। কেননা বিজেপিতে গিয়েও তিনি বিশেষ সুখী নন বলে সম্প্রতি জানা গিয়েছে।
'কংগ্রেস বিধায়ক' তৃণমূলের জেলা সভাপতি
জেলায় যখন বিপ্লব মিত্রকে ফের তৃণমূলে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হচ্ছে, তখনই অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে গৌতম দাসকে জেলা সভাপতি করা হল। গৌতম দাস গঙ্গারামপুরের বিধায়ক। কংগ্রেসের টিকিটে তিনি নির্বাচনে জিতেছিলেন। তারপর যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। খাতায় কলমে এখনও তিনি কংগ্রেসেরই বিধায়ক। সেই তিনিই এখন জেলা তৃণমূলের শীর্ষপদে।
ভার্চুয়াল বৈঠকেই কড়া পদক্ষেপ নেন মমতা
সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোরের রিপোর্ট পাওয়ার পর ২০২১-এর ভোটের আগে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে তৃণমূল কংগ্রেস কিছু রদবদল করে। তার মধ্যে অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরেই এই জেলা নিয়ে অনেক রিপোর্ট পাচ্ছিলেন মমতা। এর আগে ভার্চুয়াল বৈঠকেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা।
শুধু স্বচ্ছতা এবং তারুণ্যের প্রশ্নেই কি পরিবর্তন
অর্পিতা ঘোষ ঘনিষ্ঠ কার্যনির্বাহী সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে বিধায়ক গৌতম দাসকে কার্যনির্বাহী সভাপতি করেছিলেন। এবার অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে দিয়ে সেই গৌতম দাসকেই জেলা সভাপতি পদে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই সিদ্ধান্ত কি শুধু স্বচ্ছতা এবং তারুণ্যের প্রশ্নে। নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে।
তৃণমূল কি ফের বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে?
প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল কি ফের বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে? ২০২১ নির্বাচনের আগে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে গেলে এমন একজনকে সভাপতি বসানো হবে, যাঁর সঙ্গে ইগোর লড়াই থাকবে না। অর্পিতা ঘোষের সঙ্গে ইগোর লড়াই এই জেলায় বিপ্লবকে সরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল থেকে। কিন্তু মমতার সৈনিক বলে পরিচিত বিপ্লব বিজেপিতে গিয়ে খুব সুখে নেই। তাই তিনি ফিরতে পারেন বলে জল্পনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই।