মুকুলকে ‘দরকার’ মমতার! ‘স্লিপ অফ টাং’-এর পরও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তায় দিলেন পরামর্শ
মুকুলকে ‘দরকার’ মমতার! ‘স্লিপ অফ টাং’-এর পরও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তায় পরামর্শ মমতার
মুকুল রায় সম্প্রতি মুখ ফসকে তুলকালাম-কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। তাঁর একটা স্লিপ অফ টাং নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলে ফিরেও এসেও সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর বেমালুম বিজেপির হয়ে সওয়াল যে তাঁর অসুস্থতার বহিঃপ্রকাশ তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন দলের সুপ্রি্মো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুকুলকে নিয়ে জল্পনায় জল ঢাললেন মমতা
সম্প্রতি মুকুল রায়ের ঝাড়গ্রেম সফরে যাওয়ার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু মুকুল রায়ের বেফাঁস মন্তব্য তাঁর যাত্রাপথে ব্যাঘাত ঘটিয়ে দেয়। বাতিল হয়ে যায় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঝাড়গ্রাম সফর। এই অবস্থায় যখন জল্পনার পারদ চড়তে চলেছে তৃণমূলে মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে, তখনই জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানবিক দিক দিয়েই দেখছেন মমতা
কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা এলাকায় সাংগঠনিক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভুলে বিজেপির হয়ে যে সওয়াল করে বসেছিলেন মুকুল রায়, তা মানবিক দিক দিয়েই দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুকুল রায়কে পরামর্শ দিয়েছেন ওই ঘটনার পর। তাঁর সাফ কথা, আমার মুকুল রায়কে দরকার। তাই ভালো করে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন তিনি।
দলনেত্রী মমতা পাশেই দাঁড়ালেন মুকুলের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মনে করেন, মুকুল রায় মানসিক বিকার থেকেই ওই কথা বলে ফেলেছেন মুকুল রায়। দলনেত্রী তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন। মুকুল রায়ের উপর দিয়ে সম্প্রতি ঝড় বয়ে গিয়েছে। তাঁর পত্নীবিয়োগের ঘটনা ভালোভাবে নিতে পারেননি মুকুল। রাজনৈাতিক টানাপোড়েন পর স্ত্রীকে হারানোর আঘাত কাটিয়ে উঠতে না পেরে তিনি মাঝেমধ্যেই অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে ফেলছেন।
মুকুলকে আমার দরকার, বার্তা মমতার
তেমনই ঘটনার বহিঃপ্রকাশ হল নিজের বিধানসভাক্ষেত্র কৃষ্ণনগরে। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়ের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়ে বরাভয় দিলেন, খুব ভালোভাবে চিকিৎসা করাও, মুকুলকে আমার দরকার। মমতার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ফরে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন, তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাঁকে আগলে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুকুলের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মুকুল রায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন, তা আগেও শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। মুকুল রায় সাড়ে তিন বছর বিজেপিতে কাটিয়ে যখন তৃণমূলে ফিরলেন তখন মৃত্যুশয্যায় তাঁর স্ত্রী। মুকুল রায় নিজেও করোনামুক্ত হয়েছেন কয়েকদিন আগে। তখনই মুকুল রায়কে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, মুকুলের স্বাস্থ্য খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে।
দিল্লি এইমসে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ
তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে দিল্লি এইমসে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চিকিৎসা করাননি। কিন্তু তাঁর মধ্যে অসংলগ্নতা বাড়ছিল ক্রমশই। মুকুল রায় নিজে স্বীকার না করলেও, কৃষ্ণনগরে তাঁর অসংলগ্নতা প্রকাশ্যে চলে আসে। তিনি বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন।
মুকুলের অসংলগ্ন কথা, পাশে শুভ্রাংশু
তারপর মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু বাবার পাশে দাঁড়ান। শুভ্রাংশু বলেন, বাবাকে কেউ ভুল বুঝবেন না। বাবা এখন মায়ের চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারেননি। তাই মাঝেমধ্যেই স্মৃতিভ্রষ্ট হচ্ছেন। আবার পরক্ষণেই তা মনে পড়ে গেলেও কথাবার্তার মধ্যে ফুটে উঠছে, তাঁর অসংলগ্নতা। তাই তাঁর কথাবার্তাকে সেভাবে তুলে না ধরার পরামর্শ দেন শুভ্রাংশু।
পুরনো মুকুল রায়কে চান মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝেছেন, মুকুলের মানসিক অবস্থা। তাই তাঁকে ফের পুরনো মেজাজে, পুরনো ফর্মে পেতে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শের পর চটজলদি বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনা করেছেন ঘনিষ্ঠজনরা। এদিনই মুকুল রায়ের এমআরআই রিপোর্ট এসেছে।
মুকুলের চিকিৎসা দরকার, জোর চর্চা
এখনই সময় নষ্ট না করে তাঁর চিকিৎসা দরকার। এদিন মুকুল রায় বিধানসভায় এসেছিলেন স্বল্প সময়ের জন্য ফিনান্স কমিটির মিটিংয়ে যোগ দিয়ে সইসাবুদ করে কিছুক্ষণ পরেই তিনি বেরিয়ে যান। এরপর তাঁর বিধানসভায় আসার কথা ১৩ অগাস্ট। ওইদিন পিএসি কমিটির মিটিং রয়েছে। ওই দিন তিনি উপস্থিত হন কি না, তা দেখার।
মুকুল নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি
পিএসি নিয়ে বিতর্ক আর তাঁর বিধায়ক পদ নিয়ে তরজার মধ্যে চিকিৎসার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তোড়জোড়। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, রাজনৈতিক মহল সেদিকেই তাকিয়ে। উল্লেখ্য, ১২ অগাস্টে মুকুলের পিএসি চেয়ারম্যান পদে বসানো নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলার শুনানি রয়েছে। তাই মুকুল নিয়ে সরগরম থাকছে রাজ্য রাজনীতি।
{quiz_673}