২০১৯ লোকসভা ভোটের ফল কি মমতার আশঙ্কাকেই সত্যি করল! জল্পনা আরটিআই রিপোর্টে
২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলে কি মমতার আশঙ্কাই সত্যি, আরটিআই রিপোর্টে জল্পনা
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ইভিএম কারচুপি নিয়ে সরব ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যৌথ কমিটিও গঠন করেছিলেন। ২০১৯ ভোট ফলাফ প্রকাশের পরও তিনি একই দাবিতে অনড় থেকেছেন। তিনি সরব হয়েছিলেন ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের গণনা মেলানো নিয়েও। তাঁর অভিযোগের পর আর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এখন সামনে এসেছে।
২ শতাংশ ভিভিপ্যাট গণনা, বাকি ৯৮ শতাংশ কি সঠিক
মমতা অভিযোগ করেছিলেন, মাত্র দুই শতাংশ ভিভিপ্যাট গণনা করা হয়েছে। বাকি ৯৮ শতাংশ যে সঠিক আছে, তা কে বলতে পারে। আবার খারাপ মেশিনগুলি পাল্টা হল, সেগুলি আদৌ কি চেক করা, আদৌ কি সেখানে মক পোল করা হয়েছিল? তা যে প্রোগ্রামিং করা ছিল না, তা জানা যাবে কী করে।
সরকারিভাবে ভোটের ফলাফলের রিপোর্ট পাননি মমতা
এরপর মমতা চাঞ্চল্যর অভিযোগ তোলেন, তিনি সরকারিভাবে ভোটের ফলাফলের রিপোর্ট পাননি। নির্বাচনী ফলের পর ছ-মাসাবধিকাল কেটে যাওয়া সত্ত্বেও হাতে আসেনি ভোটের ফল। আর এরপরই দুই সংস্থার চাঞ্চল্যকর আর্জি সামনে এল। দুই এনজিও সোমবার সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছে যে, এক বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন ভিভিপ্যাটের ডেটা নষ্ট করে দিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কাকে ফের একবার তুলে ধরেছে
দুই এনজিওর এই অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কাকে ফের একবার তুলে ধরেছে। ইভিএমে আদৌ জনমত পাওয়া গিয়েছে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ প্রকট হয়েছে এবার। তা না হলে তড়িঘড়ি ভিভিপ্যাট নষ্ট করে দেওয়া হল কেন? কেন এক বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করে রাখা হল না।
এক বছরের মেয়াদ শেষের আগেই ভিভিপ্যাট বিনষ্ট
ভিভিপ্যাট বা ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেলের ডেটা সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এই সংরক্ষণের মেয়াদ থাকে এক বছর। কিন্তু ২০১৯-এর ভোটের পর এখনও এক বছর হয়নি। তার আগেই সমস্ত ডেটা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কেন ভিভিপ্যাটের সমস্ত ডেটা বিনষ্ট করা হল, তার তদন্ত দাবি করেছে সংস্থাদ্বয়। একইসঙ্গে নির্বাচন বিধিরও অভিযোগ এনেছে তারা।
ইসির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ দুই এনজিও সংস্থা
বিচারপতি বি আর গাভাই এবং সূর্যকান্তের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছিল, আমরা এখনও বিষয়টি খতিয়ে দেখিনি। এনজিওদের পক্ষে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, একটি আরটিআইয়ের জবাবে যে ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে তা দেখে এবং শুনে হতবাক হয়ে যেতে হয়। এর পিছনে গূঢ় কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। সেই জন্যই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
মোট ভোটার আর প্রদত্ত ভোটে বিস্তর গরমিল
বেঞ্চ এর আগে পিআইএল-এর পোল প্যানেলের কাছে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা এবং ৩৪৭টি আসনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা নিয়ে এক অভিযোগের তদন্তে নোটিশ জারি করেছিল। ইসি এই আবেদনে তার প্রতিক্রিয়া দেয়নি, চার সপ্তাহ পরে এর শুনানি হবে। এনজিওগুলি তাদের আর্জিতে ইসির কাছে ভবিষ্যতের সমস্ত নির্বাচনে শক্তিশালী পদ্ধতি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে।
২০১৯ ভোটের ফলে বৈষম্য প্রকট অভিযোগে
বিশেষজ্ঞদের একটি দলের গবেষণামূলক তথ্য উদ্ধৃত করে এডিআর বলেছে যে, বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ভোটার সংখ্যার সঙ্গে প্রদত্ত ভোটের তথ্যো মারাত্মক ভিন্নতা ছিল। ইসি দ্বারা প্রাপ্ত ভোটারদের ভোটদানের তথ্য এবং গণনা করা ভোটের সংখ্যার মধ্যে ফারাক নজরে আসে। এই গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী ৫৪২টি নির্বাচনী এলাকার ভোটের ফলে বৈষম্য প্রকট হয়।