মুকুলকে রুখতে নয়া কৌশল, প্রশাসনিক বৈঠকের ‘বরাত’ দিয়ে মমতার নজর পঞ্চায়েতে
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্যে এবার নয়া কৌশল নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন প্ল্যান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন জেলায় জেলায়।
জেলায় থাকবেন, অথচ প্রশসানিক বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশসানিক বৈঠকের দায়িত্ব মুখ্যসচিবকে বরাত দিয়ে নিজে মন দেবেন জনসভায়। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্যে এমনই কৌশল নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন প্ল্যান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন জেলায়। বর্ধমান, পুরুলিয়ার পর তিনি বাঁকুড়া সফর করবেন আগামী তিনদিন। ওই তিনদিনেই জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক সারবেন মুখ্যসচিব মলয় দে।
২০১১ সালে রাজ্যের দায়িত্বে আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় মহাকরণ তুলে নিয়ে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করেছিলেন। সাড়া পেয়েছিলেন জেলায় জেলায়। কখনও তিনি ধমক দিয়েছেন, কখনও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। আর তাতে কাজও হচ্ছিল বেশ। কিন্তু মুকুল রায়কে হারিয়ে তিনি এবার কৌশল বদল করছেন। এই প্রথম তিনি কোনও প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জেলায় থেকেও তিনি প্রশসানিক বৈঠক করবেন না। কারণ তিনি বুঝে গিয়েছেন এবার তাঁকে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে হবে 'ভোট ম্যানেজার' হিসেবে। তিনি বরাবরই প্রচারের মুখ থেকেছেন। কিন্তু আড়ালে থেকে ভোট-অঙ্ক সামলেছেন মুকুল রায়। এবার তিনি নেই। মুকুলের মতো ভরসা করার লোকও তাঁর হাতে নেই। তাই নিজেই সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন মমতা।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, মমতার এই সিদ্ধান্তের পিছনে নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে। যেমন তিনি মনে করেছেন, এই মুহূর্তে তাঁর উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলি মানুষের সামনে তুলে ধরা বেশি জরুরি। বিগত সাত বছরে তিনি কী কী কাজ করেছেন মানুষের কল্যাণে, সেগুলি তুলে ধরা দরকার। মানুষকে মনে করিয়ে দিতে চান, তার থেকে বেশি মানুষের ভালো কেউ করবে না। তাই কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। তাঁর উপর ভরসা রাখার আবেদন জানাবেন মমতা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিব যখন পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যস্ত থাকবেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন জনসভা করবেন যথাক্রমে বর্ধমানের কাঁকসা, পুরুলিয়ার ঝালদা ও বাঁকুড়ার ইঁদপুরে। তাঁর এই নয়া কৌশল কতখানি ফলপ্রসূ হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।