ধূলাগড়ের মতো হিংসা ছড়ালেই বিশেষ 'টনিক' দেবে মমতার প্রশাসন, হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে বার্তা মমতার
কিছুদিন আগেই ধূলাগড় হিংসা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যকে লুকোচ্ছেন বলেও সরব হয়েছিল বিজেপি।
ধূলাগড়কাণ্ডে হিংসার জন্য পুলিশি ব্যবস্থাকেই সর্বাগ্রে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার হাওড়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে ধূলাগড়কাণ্ডের জন্য পুলিশকে তিরস্কার করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রাম্য বিবাদকে ধর্মীয় রং দিয়ে ধূলাগড়ে যা ঘটানো হয়েছে তা আদৌ অভিপ্রেত নয়। ধূলাগড়ে বাইরে থেকে দুষ্কৃতীরা এসে ধর্মের রং মাখিয়ে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এদের মাঝে মাঝে টনিক দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশের দিকে আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পরিস্থিতির উপরে ঠিক করে নজরদারিই করা হয়নি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন যদি ঠিকঠাক নজরদারি করত বা এলাকার মানুষের পাশে থাকত তাহলে ধূলাগড়ের সামান্য একটা গ্রাম্য বিবাদকে কেউ রং-চং মাখিয়ে ধর্মীয় হিংসায় পরিণত করতে পারত না। পুলিশকে সদা সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেন তিনি. ধূলাগড়ের আইসি-কে দাঁড় করিয়ে নির্দেশ দেন এলাকার উপরে কড়া নজর রাখতে। প্রয়োজন টনিক দিতে হলে তাও দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। টনিক মানে যে এখানে মমতা কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নির্দেশ দিয়েছেন তা জলের মতোই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে প্রশাসনের কাছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর জেলা প্রশাসনের কাছে ধূলাগড়ের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চান। জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে, ধূলাগড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মোট আড়াই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী এরপর সমস্ত তথ্য জেলা প্রশাসনকে পেশ করতে বলেন। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম এই সব কথা প্রচার করে না। এই তথ্য সবার জানার দরকার। কেন্দ্রীয় সরকার তো বলেছিল, ধূলাগড়ের জন্য সমস্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কী করেছে? যা করেছে রাজ্য সরকারই। ধূলাগড়ের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয়তা খানিকটা ছিল। সেই কারণে আমরা ওসিকে সরিয়েও দিয়েছি।
ধর্মের নামে একদল বহিরাগত রাজ্যে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করবে বলেও পুলিশকে জানান মমতা। তাই পুলিশকে কড়া হাতে এ ধরনের ধর্মীয় হিংসা দমন করতে নির্দেশ দেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, এলাকার সমস্ত তথ্য যাতে পুলিশের নখদর্পণে থাকে, তার সুচারু ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য নিয়মিত ডায়েরি রাখতে বলেন তিনি। আইসি থেকে শুরু করে বিডিও- সবার কাছে যেন রোড ম্যাপ থাকে তা সুনিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেন তিনি। আইসি-ওসিদের নির্দেশ দেন এলাকার বিডিওদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে। শুধু তাই নয়, এলাকার নজরদারিতে সিভিক ভলেন্টিয়ার, গ্রিন পুলিশদেরও কাজে লাগাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।