বিজেপিকে ‘শিক্ষা’ দিতে শুভেন্দুকে আসরে নামাচ্ছেন মমতা! 'অদ্ভুত' রণকৌশল একুশের আগে
তৃণমূলের হাতে এসেও হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে লাল-দুর্গ। দক্ষিণ দিনাজপুরে লাল-পার্টি গরিমা হারালেও বর্তমানে তাদের স্থান নিয়েছে গেরুয়া শিবির। জেলায় প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পড়ে তৃণমূলের হাঁসফাঁস অবস্থা।
তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে এসেও হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে লাল-দুর্গ। দক্ষিণ দিনাজপুরে লাল-পার্টি গরিমা হারালেও বর্তমানে তাদের স্থান নিয়েছে গেরুয়া শিবির। জেলায় প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পড়ে তৃণমূলের হাঁসফাঁস অবস্থা। এবার একুশের নির্বাচনের আগে সেই ফাঁস কেটে বেরোতে চাইছেন মমতা। লক্ষ্য বিজেপিকে 'উচিত শিক্ষা' দেওয়া।
মমতার তূণ থেকে এবার বেরোবে অমোঘ বাণ
২০১৯-এ বিজেপির কাছে হার মেনে গড় পুনর্দখল করাই এখন তৃণমূল সুপ্রিমোর মূল লক্ষ্য। তাই তাঁর তূণ থেকে এবার অমোঘ বাণ ব্যবহার করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অমোঘ অস্ত্র হল শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য-রাজনীতিতে এখন জোর জল্পনা চলছে তাঁকে নিয়ে। মমতা শুভেন্দুকে দায়িত্ব দিতে চলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের।
বিজেপির কাছে হার মানার পর...
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আসনটি বিজেপির কাছে হার মানতে হয়েছিল তৃণমূলকে। সাংসদ অর্পিতা ঘোষ তাঁর আসনটি ধরে রাখতে পারেননি। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা তৃণমূলের সর্বময় কর্তা বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে সভাপতি করে দেন পরাজিত সাংসদ অর্পিতা ঘোষকে। তার জেরে বিপ্লব মিত্র এখন বিজেপিতে।
ঘর গুছিয়েছেন অর্পিতা, তবু প্রশ্ন উঠছে
তবে অর্পিতা ঘোষ ভোটে হার মানলেও সংগঠনের হাল ফেরানোর চেষ্টা করেছেন। এই এক বছরে তিনি ভাঙন রুখে দলকে একটা ধারায় আনার চেষ্টা করেছেন। তবে এরই মধ্যে অর্পিতা ঘোষ রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সাংসদ জেলা সভাপতি হিসেবে কতটা সময় দিয়ে সংগঠন সামলাতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
তৃণমূলের ডুবে যাওয়া তরী ভাসাবেন কে?
এখন প্রশ্ন অর্পিতা ঘোষের জায়গায় কে আসবেন, কে দায়িত্ব নেবেন তৃণমূলের ডুবে যাওয়া তরীকে পাড়ে তোলার। এই অবস্থায় বর্ষীয়ান শঙ্কর চক্রবর্তীকে একাংশ চাইলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্য পরিকল্পনা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবছেন ২০২১-এর আগে একটা মাস্টারস্ট্রোক দিতে।
বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তে
মমতা চাইছেন বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিয়ে বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে আনতে। তৃণমূলের কাছে খভর আছে বিজেপিতে গিয়ে খুশিতে নেই বিপ্লববাবু। এখনও তিনি পদহীন। তাঁর অনুগামীরাও খুশি নন বিজেপির সিদ্ধান্তে। তাই প্রবীণ শঙ্কর চক্রবর্তীকে মুখ করে যদি বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে আনা যায়, তার চেষ্টা চলছে।
যদি তৃণমূলে সম্মানজনক পুনর্বাসন পান...
বিপ্লববাবুর অনুগামীরা কানাকানি করতে শুরু করেছেন, যদি তৃণমূলে সম্মানজনক পুনর্বাসন পান, তবে তিনি ফিরে যেতে পারেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন, জেলার তিন হেভিওয়েটকে মেলাবার ভর কে নেবেন? এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর ডাক পড়তে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তিনিই এখন মুশকিল আসানের ভূমিকা নেন কি না, সেটাই দেখার।
ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে মাস্টারস্ট্রোক
শুধু মমতা নন, শুভেন্দুকে জেলার পর্যবেক্ষক হিসেবে চাইছেন জেলার বৃহদাংশের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। অর্পিতা ঘোষ অনেকটাই ঘর গুছোতে পেরেছেন। তারপর বর্ষীয়ান শঙ্কর চক্রবর্তী যদি বাকি কাজটা সারতে পারেন। আর ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে যদি মাস্টারস্ট্রোক দেওয়া যায়, তবে একুশের আগে ফের তৃণমূল স্বমহিমায় ফিরতে পারবে।