গঙ্গাসাগর হবে সংহতি তীর্থ, মোদীকে বিঁধে সাগর-পর্যটনকে বিশ্বজনীন করার ডাক মমতার
তৃণমূল সরকার আসার পর ভোল বদলে গিয়েছে সাগরমেলার পরিকাঠামোর। গঙ্গাসাগর নিয়ে আরও পরিকল্পনার কথা জানালেন মমতা। বিঁধলেন কেন্দ্রকে।
গঙ্গাসাগরে এসেও কেন্দ্রের বঞ্চনাকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগরকে মানুষের সংহতি তীর্থ ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, 'আমাদের সরকার আসার পর ভোল বদলে গিয়েছে সাগরমেলার পরিকাঠামোর। গঙ্গাসাগর নিয়ে আমার আরও পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য তা বাস্তাবয়িত করতে পারছি না। তবে যা কথা দিয়েছি, তা করে দেখাবই। গঙ্গাসাগর আর একবার নয়, সব তীর্থের মতোই সাগরতীর্থও হবে বারবার।'
বুধবার গঙ্গাসাগরে কৃষিমেলার উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মুড়িগঙ্গার উপর সেতু নির্মাণ হবে অচিরেই। শুধু কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য দেরি হয়েছে এই ব্রিজের বাস্তবায়নে।' তিনি এদিন ফাইল নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন মঞ্চে। সেই ফাইল খুলে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দিলেন- মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য তিনি এবং তাঁর সরকার কী কী করেছিলেন। কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিষয়টি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'মুড়িগঙ্গায় লোহার ব্রিজ নির্মাণের জন্য তিনি কেন্দ্রকে তাজপুর বন্দরের ৭৪ শতাংশ শেয়ারও দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার মুড়িগঙ্গায় সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আদৌ অগ্রসর হয়নি। তবে আমি বসে নেই। গঙ্গাসাগরের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সমস্তরকম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।'
তিনি জানান, 'আমরা গঙ্গাসাগরে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪টি রাস্তার সংস্কার করেছি। জেটি তৈরি হয়েছে। ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়েহাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর উপর সেতু নির্মাণ হয়েছে। এছাড়া আরও ছোট ছোট সেতু নির্মাণ হয়েছে। তৈরি হয়েছে কর্মতীর্থ, মন্দিরেরও সংস্কার করা হয়েছে। বিগত ছ-বছরে আমূল বদলে গিয়েছে গঙ্গাসাগরের চিত্র। রাস্তাঘাট, জল-বিদ্যুৎ সবকিছুর উন্নয়ন হয়েছে। ইলেক্ট্রো ফ্রেন্ডলি কটেজ তৈরি হয়েছে।'
শুধু গঙ্গাসাগর নয়, কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, তারাপীঠ, পুরুলিয়া, ফুরফুরা-সহ সমস্ত তীর্থস্থানকেই আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। সেইমতো উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চলছে। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, 'বিগত বাম সরকার যে দেনার বোঝা আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে, তার জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকা করে কেটে নিয়ে যায় কেন্দ্র। ওই টাকা থাকলে আমরা আরও অনেক উন্নয়ন করতে পারতাম।'
এদিন গঙ্গাসাগরে কৃষিমেলার উদ্বোধনে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে জানিয়ে যান, 'বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত ১২০০ কোটি টাকা সাহায্য দিয়েছে রাজ্য। এর একটি পয়সাও কেন্দ্র পাঠায়নি। এছাড়া কৃষির খাজনা মকুব থেকে শুরু করে, ধান কেনার ব্যবস্থা- সবকিছু করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিল, তাই যা কথা দিয়েছিল, তা করে দেখাচ্ছে। আমরা শুধু কথা বলি না, কাজ করে দেখাই।' এখানেও মুখ্যমন্ত্রীর তির কেন্দ্রের দিকে।