ক্ষতিপূরণ ঘোষণায় ভাঙড়ের ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর প্রয়াস মমতার, ধমক রেজ্জাক-আরাবুলদের
ভাঙড়ের ক্ষতে প্রলেপ লাগাতে ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করলেন মমতা। যে সমস্ত জমির উপর দিয়ে ভাঙড়ের বিদ্যুৎ প্রকল্প গিয়েছে, সেই জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার।
ভাঙড়কে শান্ত করতে ফের ময়দানে নামতে হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেইসঙ্গে ভাঙড়ের ক্ষতে প্রলেপ লাগাতে ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করলেন তিনি। যে সমস্ত জমির উপর দিয়ে ভাঙড়ের বিদ্যুৎ প্রকল্প গিয়েছে, সেই জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। শুক্রবার নবান্নে মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা ও তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামদের ডেকে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দুই নেতাকেই নবান্নে ডেকে ধমক দেন। তাঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি কোনওভাবেই গোষ্ঠীকোন্দল বরদাস্ত করবেন না। ভাঙড়ের শান্তি ফেরাতে সমস্তরকম ব্যবস্থা নিতে হবে মিলেমিশে। গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে সবাইকে একযোগে ময়দানে নামতে হবে। নবান্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, শনিবার ভাঙড়ে তৃণমূল শান্তি মিছিল করবে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ভাঙড়ে বিক্ষোভের আঁচ কমেনি। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, কেন এতদিন মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন না, তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি হত না, রক্ত ঝরত না।
শুক্রবার দুপুরে মন্ত্রী তথা সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা, ভাঙড়ের দাপুটে নেতা আরাবুল ইসলামকে নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। ভাঙড়ে নতুন করে এই অশান্তির আঁচ ছড়ানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কড়া ভাষায় ধমকও দেন দুই নেতাকে। আর অবিলম্বে সমস্ত দ্বন্দ্ব মিটিয়ে একযোগে শান্তি মিছিল বের করার বার্তা দেন। সেইসঙ্গে প্রশাসনিক ও দলীয় স্তরে নজরদারি চালানোরও নির্দেশ দেন এই উত্তেজনার কারণ অনুসন্ধানে।
ভাঙড়ের আন্দোলন একেবারেই থিতিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ করেই আগুনে ঘি পড়েছে। ফলে পুলিশি টহল উপেক্ষা করেই ভাঙড় ফের পুড়তে শুরু করেছে। ফের দাবি উঠেছে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প বন্ধ করার। শুক্রবার সকালে তাজা বোমাও উদ্ধার হয়েছে এলাকা থেকে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো রয়েছে। তবু তা উপেক্ষা করেই ধিকিধিকি জ্বলছে অশান্তির আগুন।
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষতিপূরণের বার্তা দিয়ে অশান্তির আগুন নেভাতে চেয়েছেন। এখন দেখার রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাবের পর পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে আসে কি না। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান থেকে শুরু করে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনার জন্য রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছে।