বিশ্বভারতীকে নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত মমতার, কাচমন্দিরের সামনে থাকা রাস্তা ফেরত নিল PWD, সংঘাত তুঙ্গে
কাচঘরের সামনে রাস্তার অধিকার আর বিশ্বভারতীর রইল না। বিশ্বভারতীকে দেওয়া অধিকার ফেরত নিল পিডব্লুডি বা পূর্ত দফতর। বোলপুরে আসার আগেই ফাইলে সই করে এসেছিলেন। গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশ্রমিকদের লাগাতার অভিযোগ পেয়েই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বভারতীকে রাস্তার অধিকার দেওয়ার পর তাতে সাধারণ মানুষের চলাচলের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রাস্তা। তার জেরে সমস্যায় পড়তে হত সেই এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণ আশ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে। তাই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন আশ্রমিকরা। সেই চিিঠ পড়ে শুনিয়েই রাস্তা ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


রাস্তা ফেরত নিলেন মমতা
বিশ্বভারতীকে দেওযআ পূর্ত দফতরের রাস্তা ফেরত নিল রাজ্য সরকার। সোমবার গীতাঞ্জলিতে প্রশাসনিক সভার মাঝেই এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বোলপুরে আসার আগেই সেই ফাইলে তিনি সই করে এসেছেন বলে জানান। কেন এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে আশ্রমিকদের লেখা অভিযোগ পত্র পড়ে শোনান মমতা। তাতে বলা হয়েছে কাচ ঘরের সামনে দিয়ে যে রাস্তা গেছে সেই রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যার জেরে প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে আশ্রমিকদের। সেকারণেই বিশ্বভারতীকে দেওয়া পূর্ত দফতরের রাস্তার অধিকার আবার ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত।

রাস্তা সংকট
২০১৮ সালে কাচ ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়া কালীসায়র পর্যন্ত রাস্তা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই রাস্তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। তৎকালীন উপাচার্য রাজ্য সরকারের কাছে এই নিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন কাচঘরে ও শান্তিনিকেতনের সামনে দিয়ে সেই রাস্তা যাওয়ায় ভারী যান চলাচলে ঐতিহ্যবাহী প্রাঙ্গনের ক্ষতি হচ্ছে। বিশ্বভারতীর সেই অনুরোধে সম্মতি জানিয়ে রাস্তাটি নিয়ন্ত্রণের এক্তিয়ার দেওয়া হয়েছিল আশ্রম কর্তৃপক্ষকে। কিন্ত পরে গত কয়েক মাসে সেই রাস্তা নিয়ে তীব্র কড়া কড়ি শুরু করেন উপাচার্য। তিনি সেই রাস্তা দিয়ে আশ্রমিকদের যাতাযাত বন্ধ করে দেন। বলা বিকল্প রাস্তা শ্যামবাটি থেকে কালীসায়র পর্যন্ত যে রাস্তা গিয়েছে সেই রাস্তা গিয়ে যাতায়াত করুন আশ্রমিকরা। তাতে প্রবল সমস্যায় পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন আশ্রমিকরা।

বিশ্বভারতী বিতর্ক
শতবর্ষের অনুষ্ঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এই নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। বিশ্বভারতীতে বিজেপি অনুষ্ঠান করেছে বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা। পরে বিজেপির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণের চিঠি প্রকাশ করে দাবি করা হয় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কিন্তু মমতা রাজনীতি করবেন বলে জান নি। গত কয়েক মাসে বিশ্বভারতীয় বিভিন্ন অংশে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল অশান্তি হয়েছে বিশ্বভারতীতে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে সরব হয়েছেন আশ্রমিকরা।

বাংলার সংস্কৃতি ভুলিয়ে দেওয়ার েচষ্টা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরসরি বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছেন বাংলার সংস্কৃতি ভুলিয়ে দেএয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। বাংলার মণীষিদের অপমান করা হচ্ছে। বহিরাগত শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে নয় বহিরাগত সংস্কৃতিকে নিয়ে। যা বাংলার পক্ষে ক্ষতিকর বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন প্রকাশ্য দাবি করেছেন মুম্বই যদি ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হতে পারে তাহলে বাংলা ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। তার অপমান করছে বিজেপি।