মোদী সরকারকে ‘বাংলা-মডেলে’র তোপ, উন্নয়ন শিখতে ‘সু-পরামর্শ’ মমতার
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সু-পরামর্শ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরামর্শ দিলেন, 'বাংলাকে মডেল করুক কেন্দ্রের সরকার।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সু-পরামর্শ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরামর্শ দিলেন, 'বাংলাকে মডেল করুক কেন্দ্রের সরকার। তীব্র আক্রমণে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সোমবার মুর্শিদাবাদের মঞ্চ থেকে বুঝিয়ে দিলেন দেশের সরকারে থেকে যা করতে পারে না বিজেপি, একটা রাজ্যের সরকারে থেকে তা করে দেখিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, কেন্দ্রের উচিত বাংলার সরকারকে মডেল করা।
[আরও পড়ুন: নোটবন্দির এক বছর আগেই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ছক! মোদীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মমতা ]
রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা রাজ্যের মানুষকে বিনা পয়সায় পরিষেবা দিয়ে আসছি। জন্ম থেকে মৃত্যু সমস্ত পরিষেবা নিয়ে হাজির আমাদের সরকার। শিক্ষা-স্বাস্থ্য সর্ব ক্ষেত্রেই আমরা পরিষেবা তুলে দিই রাজ্যের মানুষের হাতে। আগে সারা ভারতের মানুষকে বিনা পয়সাও পরিষেবা দিয়ে দেখাক বিজেপ, তবেই বুঝব ওরা কিছু করার চেষ্টা করছে।'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি বিজেপির সরকার, তোমরা এসব পারবে না। কারণ তোমরা কাজ করতেই জানো না। আমাদের দেশের দুর্ভাগ্য যে, এ দেশে বিজেপির মতো একটা দল ক্ষমতায় রয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আমাদের সরকার যা করে, তা আর কেউ করতে পারবে না।। তাই বাংলাই একমাত্র দেশের মডেল হতে পারে। বাংলা জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নেবে একদিন।'
[আরও পড়ুন: মমতার 'স্ফূর্তিবাজ'-তোপে বিদ্ধ মোদী! প্রতারকদের মাথায় 'ছাতাধরা'দের তোপ ]
তিনি বলেন, 'কন্যাশ্রী বিশ্বসভা থেকে বিশ্বশ্রীর পুরস্কার নিয়ে এসেছে। এবার বাংলার সব দিক থেকে এক নম্বর হবে। সেরার সেরা শিরোপো নিয়ে আসবে।' এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কেন্দ্র আমাদের দেখাদেখি 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' প্রজেক্ট নিয়ে এসেছে। ওটা আসলে 'বেটি বাঁচাও' নয়, ওটি হল 'বেটি তাড়াও' প্রকল্প।' দুই প্রকল্পের বরাদ্দের তুলনা টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র কটাক্ষ করেন কেন্দ্রকে। এবং বলেন, 'এপ্রিল মাস থেকে কন্যাশ্রীদের বর্ধিত ভাতা দেওয়া হবে। ১ লক্ষ মানুষকে এই সরকারি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।'
এদিন মমতা বলেন, 'অস্থায়ী কর্মচারীদের চাকরি সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬০ বছর পর্যন্ত সমস্ত কর্মীরা চাকরি করতে পারবেন। যারা কন্ট্রাকচুয়াল ছিলেন, তাঁদের জন্য এই সুরক্ষা ব্যবস্থা করেছে তাঁর সরকার। তারপর পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এই সমস্ত পরিষেবা পাবেন আশা প্রকল্পের কর্মীরা, পাবেন সিভিক ভলেন্টিয়াররাও।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের জানান, 'সব খাজনা মকুব করেছে তাঁর সরকার। মিউটেশনের খরচও মকুব করে দিয়েছেন তিনি। সংখ্যালঘুদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ওবিসিদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে ওবিসিদের জন্য আলাদা সিট বাড়িয়েছি।' জেনারেল কাস্টদের সিটে হাত দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
[আরও পড়ুন:পঞ্চায়েতে কারা হবেন প্রার্থী, কাদের টিকিট মিলবে না, গাইডলাইন তৈরি বিজেপির]
এছাড়া রাজ্যে ২৫ লক্ষ বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আরও পাঁচ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। সেইসঙ্গে ২৩ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে। এবং ১৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজও চলছে। নদিয়ার সভামঞ্চ থেকে এক দিনে এই রাজের সূচনা করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, 'অনেক রাজনীতি হয়েছে মুর্শিদাবাদ নিয়ে। কিন্তু মানুষকে আপন করে নেয়নি। মানুষের কাছে থেকে নেওয়া হয়েছে শুধু, দেওয়া হয়নি কিছুই। তাঁর সরকার মানুষকে দেওয়ার চেষ্টা করছে, নেওয়ার বদলে।' পূর্বতন সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কাজ তাঁর সরকার ফের শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।
[আরও পড়ুন:মোদীর মামার সংস্থায় ১৫ কোটির সোনা-হিরে বাজেয়াপ্ত! ২০০ ভুয়ো সংস্থার হদিশ ইডি-র]