মতুয়ারা তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন, শান্তনু-সুব্রতদেরও ঘরওয়াপসির আহ্বান মমতাবালার
মতুয়া মহলে অসন্তোষের আঁচ পেয়েই পাল্টা চাল দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরের।
বিজেপিতে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। রদবদলের পরই বিজেপির হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন মতুয়া মহলের পাঁচ বিধায়ক। মতুয়া মহলে অসন্তোষের আঁচ পেয়েই পাল্টা চাল দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরকে তৃণমূলে ফিরে আসার বার্তা দিয়েছেন।
পাঁচ বিজেপি বিধায়ক দলের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন
একুশের নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির ভরাডুবি হয়েই চলেছে। তারই জেরে বঙ্গ বিজেপিতে রদবদল করা হচ্ছে। সম্প্রতি নতুন রাজ্য কমিটি গঠন ছাড়াও ৩০ জেলা সভাপতি বদল করা হয়েছে। আর তারপরই মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত পাঁচ বিজেপি বিধায়ক দলের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। এরপরই জয় কাটাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে সময় চেয়েছেন।
সুব্রত-শান্তনুরা ফিরে আসুন তৃণমূলে, আহ্বান মমতাবালার
ঠিক এই সময়েই পাল্টা চালটা দিয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুরনগরের মহাসঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, সুব্রত-শান্তনুরা ফিরে আসুন তৃণমূলে। বিজেপি বিধায়করা বুঝেছেন ওঁদের পাশ থেকে মানুষ সরে যাচ্ছেন। সরে যাচ্ছেন মতুয়ারা। মতুয়ারা বিজেপির সঙ্গে নেই। তাই তিনি শান্তনু ও সুব্রতকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মতুয়াদের জন্য কিছু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই
সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বা বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর বিজেপি ছাড়লে তৃণমূল তাঁদের স্বাগত জানাবে বসলে তিনি জানান। স্বাগত জানাবে মতুয়ারাও। তবে একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, মতুয়াদের জন্য কেউ যদি কিছু করে থাকেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির ছলাকলা মতুয়ারা ধরে ফেলেছেন
মমতাবালা বলেন, বিজেপির ছলাকলা মতুয়ারা ধরে ফেলেছেন। তাঁরা এখন বিজেপি-বিমুখ হতে শুরু করেছেন। অনেকেই আমাকে বলেছেন, আমরা ভুল করে ফেলেছি। আমরা আবার তৃণমূলে ফিরতে চাই। আমি তাঁদের বলেছি, আপনারা আবেদন করুন, দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চয় আপনাদের নিরাশ করবেন না।
মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি এখন রাজনৈতিকভাবে আড়াআড়ি বিভক্ত
তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ওঁদের দলে ফেরান, তা হলে একসঙ্গে আরও ভালো করে কাজ করা যাবে। মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি এখন রাজনৈতিকভাবে আড়াআড়ি বিভক্ত। মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের দুই ছেলে শান্তনু-সুব্রতরা বিজেপি শিবিরে। আর কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর তৃণমূলে। একটা সময়ে মঞ্জুলকৃষ্ণও তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু বর্তমান বিভাজনে দু-ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে গাইঘাটার ঠাকুরবাড়ি।
তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন বলে দাবি করেন মমতাবালা
মতুয়াভোটও বিভাজিত হয়ে পড়েছে ঠাকুরবাড়ির দু-তরফের বিভাজনের ফলে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন ও ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিই ফায়দা তুলেছে। কিন্তু মতুয়ারা বিনিময়ে কিছুই পাননি। তাই তাঁরা বিজেপির ছলাকলা বুঝতে পেরে এবার তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন বলে দাবি করেন মমতাবালা ঠাকুর।