মালদহে এসে মমতা ও মোদী সরকারকে নজিরবিহীন আক্রমণ সোনিয়া গান্ধীর
সুজাপুর (মালদহ), ১৩ এপ্রিল : গান্ধী পরিবারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সখ্যতা নিয়ে বহুসময়ে চর্চা হয়েছে। রাজীব গান্ধীর পর সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও একেবারে প্রথম থেকেই মমতার ঘনিষ্ঠতা থেকেছে। তা সে দুজনে যতই দুটি আলাদা দলের কাণ্ডারী থাকুন না কেন। দিল্লি গেলে একবার সোনিয়াজীর বাড়িতে যাবেনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটাই দস্তুর ছিল।
কিন্তু ব্যক্তিগত স্তরে সখ্যতা আর ভোট রাজনীতি যে এক জিনিস নয়, তা এদিন একেবারে ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ভোটযুদ্ধে বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে আঁতাত হয়েছে। ফলে তৃণমূল কংগ্রেসকে তথা দলনেত্রী মমতাকে একেবারেই রেয়াত করলেন না তিনি। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ও রাজ্যের মমতা সরকারকে একই আসনে বসিয়ে একেবারে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ শানালেন সোনিয়া।
বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে এদিন মালদহের সুজাপুরে সভা করেন সোনিয়া গান্ধী। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী, মৌসম বেনজির নূর, প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই সভাতেই বক্তব্য রাখতে এসে তৃণমূল সুপ্রিমোকে তীব্র আক্রমণ করেন সোনিয়া। বলেন, মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। আমরাও মমতাকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু ক্ষমতায় এসে সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদীজিকে আক্রমণ করে সোনিয়ার বক্তব্য, ইউপিএ সরকারের সময়ে গরিব দলিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মোদী ক্ষমতায় এসে হয় তাতে ঢিলে দিয়েছেন অথবা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কেন্দ্রে ও রাজ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। একসঙ্গে কেন্দ্রে-রাজ্যে মমতা-মোদী সরকার মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে।
এখানেই না থেমে কংগ্রেস সভানেত্রী অভিযোগ করেন, বাংলায় মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সরকার চলছে। অথচ সবচেয়ে বেশি নারীরা এই পশ্চিমবঙ্গেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নারী নির্যাতনে বাংলা একনম্বর স্থানে রয়েছে।
এর পাশাপাশি চিটফান্ড দুর্নীর্তি নিয়েও মোদী-মমতাকে আক্রমণ করেন সোনিয়া গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, মোদী-মমতা আঁতাতের জন্যই বাংলায় আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত সঠিকভাবে হচ্ছে না। কেন্দ্রে মোদী ও রাজ্যে মমতা মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন।
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়েও কটাক্ষ করেন সোনিয়া। তিনি জানান, বাংলায় আইনের শাসন নেই। এখান অবস্থা থেকে বাংলাকে বার করে আনতে হবে। আর সেজন্য কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ের জন্য আবেদন জানান তিনি।