তৃণমূলের তিন মহিলা সাংসদ ভালো শুরু করলেন; ১৭তম লোকসভায় কি দলটি গুণগতভাবে আগের চেয়ে ভালো?
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রর লোকসভাতে রাখা প্রথম বক্তৃতার ভূয়সী প্রসঙ্গ করা হাসিয়েছে প্রায় সব মহলেই। তিনি যেভাবে সমকালীন সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তব অবস্থার কথা তুলে ধরে জোরালো বক্তব্যটি রেখেছেন সংসদের নিম্নকক্ষে, তাতে তাঁর কোনও প্রশংসাই কম নয়। মহুয়ার বক্তব্যের পরের দিনই বক্তব্য রাখলেন আরও দুই নবাগতা সাংসদ নুসরত জাহান এবং মিমি চক্রবর্তী। যথাক্রমে বসিরহাট এবং যাদবপুরের এই দুই তৃণমূল সাংসদও তাঁদের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে ভালোই বক্তব্য রাখেন নিজেদের কেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে। সবচেয়ে যেটা ভালো লাগছে দেখে যে এক ঝাঁক কমবয়সী সাংসদ বাংলার প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে মসৃন ইংরেজিতে নিজেদের বক্তব্য রাখছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষেত্রে যেটি বিশেষ নজরে পড়ত না এতকাল।

মহুয়া, নুসরত, মিমি ভালো শুরু করেছেন
ইংরেজি ভাষায় বলছেন দলের সাংসদরা, সেটি সবচেয়ে বড় ঘটনা নয় নিশ্চই। কথার সারবত্তা তার চেয়ে বড় অবশ্যই। কিন্তু এই তিন মহিলা সাংসদ যেভাবে তাঁদের নিজেদের অবস্থানে দাঁড়িয়ে রুচিসম্মতভাবে বক্তব্য পেশ করলেন ভারতের গণতন্ত্রের পীঠস্থানে, তা দেখে মনে আশা জাগে বৈকি। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের একটি বদনাম হয়ে গিয়েছিল যে তাঁরা দিল্লি যান গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে ধর্ণা দিতে। নানা সময়ে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন এমনকি নানা নাটুকেপনার মধ্যে দিয়েও তাঁদের প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে অতীতে। কিন্তু এবারের ২২ জনের দলের মধ্যে অন্তত তিনজন বেশ ভালো শুরু করেছেন এবং আশা করা যায় যে তাঁরা তাঁদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন; সংসদের মধ্যে থেকে সুচারু ভঙ্গিমায়, অযথা হৈ-হট্টগোল করে ভবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে নয়। বাকি ১৯ জনও তাঁদের সহকর্মীদের দেখে উজ্জীবিত হয়ে ভালো কাজ করবেন।
ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রের প্রশ্নে কি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব নমনীয় হবেন?
নুসরত এবং মিমি নতুন শুরু করেছেন; তাঁদের কাছে দলের প্রতি বদ্ধমূল আনুগত্য দেখা যাবে এখন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মহুয়া যেরকম ঝোড়ো ব্যাটিং দিয়ে শুরু করলেন, তাতে আশা করব যে অদূর ভবিষ্যতে তাঁর এবং তাঁর দলের রাস্তা একই দিকে এবং এক সঙ্গে এগোবে। তৃনমূল কংগ্রেস দলটি ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রের জন্যে পরিচিত তা তাদের অতিবড় সমর্থকও বলবে না।অতীতে আমরা দেখেছি ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রের অবস্থান নিতে গিয়ে দলের প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর কী অবস্থা করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বই। মহুয়া প্রথম দিন যা বলেছেন তাতে তাঁর শীর্ষ নেতৃত্বের খুশি হওয়ারই কথা। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি এমন সময় উপস্থিত হয় যেখানে মহুয়ার নিজের অবস্থান তাঁর দলের সঙ্গে না মেলে, তাহলে সেই পরিস্থিতি মুখরা এই নেত্রী কীভাবে সামলান সেটাই এখন দেখার।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় কাটমানি বিতর্ক! মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় সাংবাদিকরাও]
[আরও পড়ুন:শুধু অন্ধ্রই নয়, তেলাঙ্গানা থেকেও বিজেপিতে যোগ টিডিপি মুখপাত্রের]