পেগাসাস ইস্যুতে সংসদের ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ, অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাখ্যা দিলেন সুনীল মণ্ডল
পেগাসাস (pegasus) ইস্যুতে কার্যত অচল সংসদ। এদিনও লোকসভায় বিরোধী সদস্যরা লোকসভায় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভে এদিন যোগ দেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে (bjp) যোগ দেওয়া বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল (trinamool congress) সাংসদ সুনীল মণ্ডল (sunil mondal) । তিনি দাবি করেন, তৃণমূলেই ছিলেন, তৃণমূলেই থাকবেন।


তৃণমূলেই আছেন
এদিন পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল দাবি করেন তিনি তৃণমূলে ছিলেন, তৃণমূলেই থাকবেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই কাজ করছেন। তিনি তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করেননি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিজেপির কোনও সদস্যপদ নেননি। তৃণমূলের সঙ্গে থেকেই কাজ করছেন তিনি প্রসঙ্গত এদিন সুনীল মণ্ডল সংসদে দলের অন্য সাংসদদের সঙ্গে সংসদের ওয়েলে নেমে পেগাসাস নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ফোন হ্যাকিং ব্যাক্তিগত সত্তায় আঘাত করেছে। এটা চরমতম অন্যায় বলে দাবি করেন তিনি।

তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে চিরকাল
এদিন সুনীল মণ্ডল দাবি করেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে চিরকাল রয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সুনীল মণ্ডল তৎকালীন বর্ধমান জেলার গলসির ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন বাম জমানায়। পরবর্তী সময়ে তিনি মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৪ এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান থেকে তিনি তৃণমূলের টিকিটে লোকসভায় নির্বাচন হন। ১৯ ডিসেম্বর তিনি অমিত শাহের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন সুনীল
সেই সময় তিনি বলেছিলেন তৃণমূলে দম বন্ধ হয়ে আসছে। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার অংশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিলেন। তবে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হারার পরে তাঁকে আর বিজেপির হয়ে দেখা যায়নি। বরং বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, যাঁরা তৃণমূল থেকে এসেছে, তাঁদের বিজেপি মানতে পারছে না, বিজেপি তাদেরকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তিনি ভেবেছিলেন বিজেপি সাংগঠনিকভাবে বড় দল। কিন্তু তা তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে বুঝতে পারেননি। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি বলেছিলেন, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা মানেননি। তাই তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে কথা বলতে চান না।

অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করা মানেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া নয়
এদিন সুনীল মণ্ডল বলেন, অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করা মানেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া হয়। একজন সাংসদ এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। তাই বলে বিজেপিতে যাচ্ছেন ধরে নেওয়াটা ভুল বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুনীল মণ্ডল দাবি করেন, তিনি বিজেপির কোনও সদস্যপদও নেননি। তবে তিনি বলেছেন, একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।
প্রসঙ্গত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের সময় সুনীল মণ্ডল ধুতির কোঁচা চাপা দিয়ে মুকুল রায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রায় ১৫ মিনিট কথা হয়। তবে সেই সময় মুকুল রায়ের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল তা কেউই বলতে চাননি।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পরেই তৃণমূলের তরফে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংসদপদ খারিজের জন্য লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির কাছেও এব্যাপারে আবেদন জানায় তৃণমূল। লোকসভার সচিবালয়ের থেকে তাঁর কাছে নোটিশও পাঠানো হয়। যা নিয়ে এদিন সুনীল মণ্ডল বলেন, তিনি ঠিক কোন দলে রয়েছেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তা তিনি তো তৃণমূলেই রয়েছেন।

বিজেপি ছাড়ার কারণ জানাননি সুনীল
তৃণমূলে রয়েছেন, জানালেও, বিজেপি ছাড়ার কারণ তিনি জানাননি। জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটের পর থেকেই যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে যাওয়া সেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, তিনি ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, নিশীথ প্রামাণিককে মন্ত্রী করা হলেও, তাঁকে করা হয়নি। যদিও তিনি যোগ্য। সুনীল মণ্ডলের বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বলেছে, তাঁর দলে ফেরার বিষয়টি ঠিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, এব্যাপারে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভুল বুঝিয়ে তাঁকে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এব্যাপারে তিনি শুভএন্দু অধিকারীকে নিশানা করেন। তিনি এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তবে দলের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পেগাসাসে অচল সংসদ, 'মক পার্লামেন্টে'র পরিকল্পনায় বিরোধীদের বৈঠক ডাকলেন রাহুল