তীব্র বাধার মুখে মমতার সৈনিক! বঙ্গধ্বনি প্রচারে বাধা দিল দিল ১৩ শহিদের গ্রাম
প্রচারে গিয়ে তীব্র বাধার মুখে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের অন্যতম প্রচারের মুখ ছত্রধর মাহাত (chatradhar mahato)। আওয়াজ ওঠে খুনি ছত্রধর দূর হটো। যা নিয়ে অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। খবর পেয়েই ঝাড়গ্রামের বাঁকশোল গ্রামে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও ছত্রধর মাহাত দাবি করেছেন, তিনি প্রচার সেরেই গ্রাম থেকে বেরিয়েছেন।

একগ্রামেই ১৩ শহিদ
বাম শাসনের শেষের দিকে জঙ্গলমহলে দাপিয়ে বেরিয়েছে মাওবাদীরা। তৎকালীন রাজ্যের শাসকদল করা কিংবা তাদের সঙ্গে সংযোগ রাখার অভিযোগে খুন করা হয়েছে একের পর এক ছাত্র, যুব, শিক্ষককে। ঝাড়গ্রামের একগ্রামেই ১৩ শহিদ। ২০০৯ সালের শীতের সকালে জাতীয় সড়কের ওপরে অভিজিৎ মাহাত, নীলাদ্রি মাহাতর লাশ দেখেছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও সময়ে সময়ে হত্যা করা হয়েছে কানাই রায়, বাবলু মাহাত, অমিল মাহাত, গুরুচরণ মাহাত, টোটন পাড়িয়ারি, কেশব মাহাতদের। প্রায় সব খুনেই অভিযুক্ত উমাকান্ত মাহাত। এক সময়ে এলাকায় ডাকাত বলে পরিচিত থাকলেও, সেই সময় মাওবাদীদের দলে নাম লিখিয়েছিল সে, তারপরেই হত্যাকাণ্ড। তার নাম জড়িয়েছিল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাতেও।

তীব্র বাধার মুখে ছত্রধর
বঙ্গধ্বনি-র প্রচারে বেরিয়েছিলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাত। ঘন জঙ্গল বেষ্টিত পাটাশিমুলে যাচ্ছিলেন তিনি। হাওড়া-মুম্বই জাতীয় সড়ক ঘেঁষা এই গ্রামে ঢুকতেই স্থানীয় বাসিন্দারা পথ আটকায়। রাস্তায় বসে পড়েন মহিলা, পুরুষরা। তাঁদের হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড, খুনি ছত্রধর দূর হটো। এই কর্মসূচিতে ছত্রধরের সঙ্গে থাকা ঝাড়গ্রাম তৃণমূলের ব্লকের সাংগঠনিক সভাপতি নরেন মাহাত, ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাপতি রেখা সোরেন এবং বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু-সহ অনেকেই গ্রামে ঢুকতে বাধা পান। খবর পেয়েই এলাকায় যায় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ
স্থানীয় বাসিন্দা তথা পাটাশিমূলের গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁরা আগে থেকেই খবর পেয়েছিলেন মাওবাদীদের সাগরেদ জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাত প্রচারে আসবেন। সেইমতো তাঁরা তৈরি ছিলেন। সেখানে ছত্রধর যাওয়া মাত্রাই পথ আটকান তাঁরা। ছত্রধর মাহাতকে গ্রামে ছুকতে দেওয়া হয়নি বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। প্রায় একঘন্টা আটকে থাকার পর ছত্রধর মাহাত ফিরে যান বহলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। ভবিষ্যতে তাঁকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তবে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন প্রশাসনের সঙ্গে তাঁদের কোনও বিরোধ নেই।
গ্রামবাসীরা বলেছেন, একটা সময়ে রাজ্য সরকার বলেছিল, মাওবাদীদের হাতে নিহত পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। কিন্তু ছত্রধরের পরিবারে এতগুলি চাকরি কেন, প্রশ্ন করেন তাঁরা।

ছত্রধরের দাবি
যদিও ছত্রধর মাহাত দাবি করেছেন, তিনি গ্রামে ঢুকে মিটিং করেছেন। তাঁর আরও দাবি, বিজেপির লোকেরাই সেখানে গণ্ডগোল পাকিয়েছে। যদিও বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, মাওবাদীরা সবাই লালঝাণ্ডার তলায় ছিলেন, এখনও তারা সেখানেই আছেন।