কংগ্রেসের জি-২৩-এর মতোই তৃণমূলে জি-৫! ঘাসফুল শিবিরে বড় বিভাজন সামনে
একদিকে যখন আইপ্যাকের (IPAC) প্রশংসা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) সমর্থনের জেরে সৌগত রায়কে সতর্ক করেছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক সেই সময়েই ফিরহাদ হাকিমকে স
একদিকে যখন আইপ্যাকের (IPAC) প্রশংসা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) সমর্থনের জেরে সৌগত রায়কে সতর্ক করেছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক সেই সময়েই ফিরহাদ হাকিমকে সমর্থন করেছেন দলের অপর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলে বিভাজন রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আইপ্যাকের কাজের প্রশংসা করেছিলেন সৌগত রায়
গত মঙ্গলবার এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে সৌগত রায় বলেছিলেন, আইপ্যাক তাঁর কাছে তালিকায় চাওয়ায় তিনি তা দিয়েছিলেন। ভারতের রাজনীতিতে আইপ্যাকের অবদান নিয়েও প্রশংসা করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, গত ৬০ বছরে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে এমন কাজ তিনি দেখেননি। পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনে আইপ্যাকের যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল, সেকথাও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। দমদমের তৃণমূল সাংসদ বলেছিলেন, আইপ্যাকে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে আইআইটি, আইআইএম-এর পাস আউটরা রয়েছেন। তিনি আরও বলেছিলেন, আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে গেলে অসুবিধা হবে। পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে একব্যক্তি এক পদ এবং ষাট বছরের ওপরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অবসর নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন সৌগত রায়।
সৌগত রায়কে মুখ না খুলতে নির্দেশ
গত বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, তৃণমূলের লোকসভা নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সৌগত রায়কে মুখ খুলতে বারণ করেছেন। যদিও দলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি সৌগত রায়। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থনকারী অন্যতম নেতা মদন মিত্র বলেছেন, তাঁকে বের করে দিলে তিনি সিনেমায় নেমে যাবেন।
সাংসদদের ভিন্ন মত
সৌগত রায়ের মন্তব্য নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে তৃণমূলের সংসদীয় দলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংসদের প্রশ্ন ৭৫ বছর বয়সে এসে কেন এই মন্তব্য? তিনি তো ৬০ বছরে কলেজ থেকে অবসর নেওয়ার পরে রাজনীতি করছেন, সংসদে গিয়েছেন কয়েকবার। বিধায়ক, সাংসদ হওয়ার পরে তাঁর এই মন্তব্য কেন, প্রশ্ন করেছেন ওই সাংসদ।
মমতাকে অনুসরণ না করে দ্রুত এগনোর চেষ্টা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংসদ বলেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ধীরে ধীরে না এগিয়ে, দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, সেই কারণেই এই পরিস্থিতি। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি আরও বলেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূলের ভবিষ্যত হিসেবেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকে এগোচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে আপত্তি করেননি, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে যুক্ত থাকা নেতারা।
অভিষেকের দাবিতে সহমত নন ফিরহাদ
গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃণমূলে এক ব্যক্তি এক পদের নীতিতে জোর দেওয়া হয়েছিল। তবে তা মানা সম্ভব হয়নি মন্ত্রিসভার সদস্যদের ক্ষেত্রে কিংবা পরবর্তী সময়ে কলকাতার পুরসভার নির্বাচনের সময়েও। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ফের মাথা চাড়া দিয়েছে। যদিও কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হামিক বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় একব্যক্তি একপদের যে নীতি প্রচার করা হচ্ছে, তাতে তৃণমূলের অনুমোদন নেই। তাঁর এই মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদিত বলেও দাবি করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম।
কংগ্রেসের অবস্থার সঙ্গে তুলনা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কংগ্রেসে যেমন সনিয়া গান্ধী রাহুল গান্ধীকে এগিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরনো নেতারা বিক্ষুব্ধ, ঠিক তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। যা তৃণমূলে এর আগে দেখা যায়নি। তৃণমূলের অভ্যন্তীরণ দ্বন্দ্বে অর্থাৎ অভিষেকের উত্থানে পাঁচ নেতার সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাঁরা দলের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মদন মিত্রের কথাতেই তাঁদের কারও কারও নাম উঠে আসছে।