বাম-কংগ্রেস-সিদ্দিকির জোটে জট, একুশের নির্বাচন শেষে জুটবে না তো ভোটকাটুয়া তকমা
বাম-কংগ্রেস-সিদ্দিকির জোটে জট, একুশের নির্বাচন শেষে জুটবে না তো ভোটকাটুয়া তকমা
বাংলায় মহাজোট এখনও দুরুহ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দুয়ারে কড়া নাড়ছে, এখনও মহাজোট গহঠন হল না। আসনরফা করতে গিয়েই কেটে গেল মাসাবধি কাল। এই অবস্থায় পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি যে বার্তা বাম-কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে দিয়েছে, শেষে না শুধু ভোটকাটুয়া হয়েই থেকে যেতে হয় তাদের। উল্টে লাভের গুড় খায় বিজেপি।
জোটে জট, বাধ সেধেছে আসনরফা
২০১৬-র নির্বাচনে সে অর্থে জোটের যে প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হয়েছিল, তা কিন্তু হয়নি। আর এবার বাম-কংগ্রেস জোট করেই লড়তে চায়। আবার তাদের জোটে সামিল হতে চায় আব্বাস সিদ্দিকির নতুন দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টও। কিন্তু বাধ সেধেছে আসন রফা। বাম-কংগ্রেস ইতিমধ্যে ১৯৩টি আসনের রফা করে ফেলেছে।
আসনরফায় বিরাট বাধা সিদ্দিকি
বাম-কংগ্রেসের জোটে এখনও ৯১টি আসনে রফাসূত্র খোঁজা বাকি। তার মধ্যে আবার আব্বাস সিদ্দিকির জোট-প্রস্তাবে রফাসূত্র খোঁজার প্রয়াস থমকে যায়। আব্বাস সিদ্দিকি জোট গড়তে উৎসাহী হলেও যে আসন দাবি করেছেন, তা ছেড়ে দেওয়া বাম-কংগ্রেসে পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার তাঁদের মধ্যে আলোচনায় জোট নিয়ে সম্মত হলেও আসনরফায় বিরাট বাধা নেমে আসে।
একা লড়ার হুঁশিয়ারি আব্বাস সিদ্দিকির
প্রথমত বামফ্রন্ট-কংগ্রেস যেসব আসনে শক্তিশালী, সেই সব আসনই দাবি করছেন আব্বাস সিদ্দিকি। আবার তাঁর দাবির সংখ্যাটা আকাশছোঁয়া। ৭২টি আসন দাবি করেছে তারা। এর থেকে সম্মানজনক ৫০টি আসনে তাদের ছাড়তে হবে। তা না হলে একা লড়ার বার্তাও দিয়েছেন আব্বাস সিদ্দিকি। তাই জোট হবে কি না, তা যেমন সংশয়। আবার জোট হলেও তার প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়েও সংশয়।
যে অঙ্কে জট সিদ্দিকির সঙ্গে জোটে
কংগ্রেস ও বামেরা আব্বাসকে ২৫ থেকে ৩০টি আসন ছাড়তে চায়। আবার বামেরা আলাদা করে একটা সূত্র দিয়েছে, কংগ্রেস ১৫টি ছাড়লে আমরা ৩০টি ছাড়তে রাজি। তাহলে ৪৫টি আসনে লড়তে পারবে আব্বাস সিদ্দিকির দল। উল্লেখ্য, আব্বাস সিদ্দিকিরা প্রথম ৪৪-৪৫টি আসন দাবি করেছিল বলেই খবরে প্রকাশ হয়েছিল। কিন্তু এখন তাঁরা ৭০-৭২টি আসনের দাবিতে অনড়।
দলিত-আদিবাসী ও সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে প্রশ্ন
আব্বাসের দাবি মেনে নিলে রাজ্যজুড়ে দলিত-আদিবাসী ও সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে আরও ধস নামবে বাম-কংগ্রেসের। ফলে বাম-কংগ্রেস আরও সাইনবোর্ড হয়ে যাবে। জোট হয়েও বাম-কংগ্রেস জোটের ফয়াদ লুটতে পারবে না। কারণ যে আসনগুলিতে তারা শক্তিশালী, সেই আসনগুলিই আব্বাস সিদ্দিকি দাবি করছেন। ফলে আদতে জোট হয়েও হইবে না জোট।
চার ভাগের একভাগ আসন দাবি সিদ্দিকির
আব্বাস ৭০-৭২টি আসন চেয়েছেন, যা প্রায় মোট আসনের ২৫ শতাংশ। এত আসন বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে দেওয়া সম্ভবও নয়। এখনও এই দল পরীক্ষিত নয়। নতুন দল করেই আব্বাস সিদ্দিকির চার ভাগের একভাগ আসন দাবি করা ভালো চোখে দেখছেন না বাম-কংগ্রেসের নেতারা। এখন যা পরিস্থিতি, জোট যদি না হয় তাহলে মুসলিম ভোট ভাগ হবে কম করে চার ভাগে।
একুশে লাভের গুড় ঘরে তুলবে বিজেপি
জোট হোক বা না হোক পোয়াবারো বিজেপির। তৃণমূল-বামজোট-মিম-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এই চারটি দল ভোট ভাগ করে নেবে। ফলে লাভের গুড় সেই ঘরে তুলবে বিজেপি। বিজেপি চায় সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে তৃণমূলের শক্তি লঘু করতে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের ভোট ভাগ হলে লাভ হবে বিজেপিরই।
দাবি না মানলে একাই লড়ব, আসন নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার আগেই বাম-কংগ্রেসকে বার্তা আব্বাসের