বুস্টার ডোজ তাহেরপুর, সোশ্যাল মাধ্যমে দূরন্ত প্রচার বামেদের
বুস্টার ডোজ তাহেরপুর, সোশ্যাল মাধ্যমে দূরন্ত প্রচার বামেদের
পুরসভা নির্বাচনে তারা ঘুরে দাঁড়াল সিপিআইএম। নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভা দখলও করে নিল তারা। বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষিতে এই ফল আশাব্যাঞ্জক বলে ব্যাখ্যা বাম-শিবিরের।২,২৭৪ ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ আসনে জয় হয়েছে বামেদের। তবে বুস্টার ডোজ যেন তাহেরপুর।
রাজ্যে মোট ২২৭৪টি ওয়ার্ডে পুর নির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে সব মিলিয়ে বামেরা জিতেছে ৬৪টি ওয়ার্ড, অর্থাৎ প্রায় ৩ শতাংশ আসনে জয়। এর মধ্যে তাহেরপুর পুরসভা এ বারও দখলে রেখেছে বামেরা। তাহেরপুর- ৮টি ওয়ার্ডে জয়ী। এখানে তারা পুরসভা দখল করেছে। আর সেটাই তাদের এনার্জি বুস্ট আপ করে দিয়েছে।
তাঁরা এখন এই একমাত্র জয় করা পুরসভা নিয়েই প্রচারে নেমে পড়েছেন। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাম। বলছেন একদিনে না হোক একদিন হবেই। সেই একদিনের শুরু এই তাহেরপুর দিয়ে বলে বামেরা বলতে চাইছে। সোশ্যাল মাধ্যমে প্রচারে সেরা বাম। এনিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। মাত্র একটা পুরসভা জয়, তা দিয়ওই এনার্জি এতটাই বেড়েছে যে সোশ্যাল মাধ্যমে তাদের তাহেরপুর জয়ের ডিজিটাল ক্যাম্পেন ভাইরাল হতে শুরু করে দিয়েছে।
ডিজিটাল ক্যাম্পেন বলছে , 'তৃণমূল পারল না, তাহেরপুর হারল না'। অর্থাৎ এই জয়কে বামেরা তাহেরপুরের মানুষের জয় বলতে চাইছেন। মানুষ হারিয়ে দিয়েছে তৃণমূলকে। বলতে চাইছেন ঘাস ফুলকে এখান থেকে ছিন্নমূল করে দিয়েছে জানতা। তাই বাম সমর্থকরা বলতে চাইছেন শত ধমকানি , চমকানির পরেও লাভ হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস হেরে গিয়েছে, তাহেরপুর সিপিএম নয়, মানুষ জিতে গিয়েছে।
কোথায়
কোথায়
কটা
আসন
পেয়েছে
বামেরা?কালনা-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,জঙ্গিপুর-
৩টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,শ্রীরামপুর-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,উত্তরপাড়া-
৩টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,সোনামুখি-
৫টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,বারাসত-
৩টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
রাজপুর-সোনারপুর-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বসিরহাট-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
হাবড়া-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
জয়নগর-মজিলপুর-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
খড়্গপুর-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
ঝাড়গ্রাম-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
তমলুক-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
রামপুরহাট-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বাঁশবেড়িয়া-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী
গোবরডাঙা-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
কোচবিহার-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
নিউব্যারাকপুর-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বাদুড়িয়া-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বেলডাঙা-
৩টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
মধ্যমগ্রাম-
৪টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
ইসলামপুর-১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
গোবরডাঙা-১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বালুরঘাট-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
উলুবেড়িয়া
-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
অশোকনগর
-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
মেদিনীপুর
শহর-
৩টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
ইংরেজবাজার-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী
উত্তর
দমদম-
১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী,
বৈদ্যবাটি-
২টি
ওয়ার্ডে
জয়ী
গারুলিয়া
-১টি
ওয়ার্ডে
জয়ী।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল তাহেরপুর পুরসভায় ৫টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। রাজ্যের ১০৮ পুরসভার মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম এই তাহেরপুর। অবশ্য দার্জিলিং পুরসভায় জয়ী হয়েছে হামরো পার্টি। এই পুরসভায় এখন পর্যন্ত পাহাড়ের পার্টিই কর্তৃত্ব করেছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলগুলির মধ্যে একমাত্র সিপিএম তথা বামফ্রন্টই খাতা খুলতে সমর্থ হল।
ঘটনা হল, একুশের নির্বাচনের পর থেকেই বামেরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এককভাবে লড়ে ফের শূন্য থেকে তারা শুরু করছে লড়াই। সেই লড়াই উপনির্বাচনের পর পাঁচ পুরনিগমেও রাস্তা দেখিয়েছে। তৃণমূল জিতলেও বামেরা দূরবর্তী দ্বিতীয় হচ্ছেন। বিজেপি নেমে গিয়েছে তিন নম্বরে। একটি পুরসভা জিতে একমাত্র বিরোধী দল বামেরাই খাতা খুলতে পেরেছে। আবার বেশিরভাগ পুরসভা সিপিএম তথা বামফ্রন্ট দু-নম্বরে রয়েছে। বিজেপির এই পিছু হটা এবং সেই পথ ধরে বামেদের ফিরে আসা বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করতে চলেছে। তবে কংগ্রেসের হাল আগের তুলনায় খারাপ হয়েছে পুরসভা নির্বাচনের নিরিখে। কংগ্রেসও বামেদের মতো বিধানসভায় শূন্য হয়ে গিয়েছিল। বামেরা ফিরে আসার ইঙ্গিত দিলেও কংগ্রেস আরও মুছে যাচ্ছে।
এদিকে বিধানসভা নির্বাচনের পর পুরসভা ভোটেও হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের গড়। বহরমপুত পুরসভায় হেরে গিয়েছে তারা। কিন্তু ফাইটার অধীর কথায় হারতে রাজী নন। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন জয়ী তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কী চ্যালেঞ্জ অধীরের? তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন , '২০০৩ সাল ,তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা শীর্ষে। এদিকে বামেরা জাঁকিয়ে বসে আছে।
\সেই সময়ে কোনও কিছু না করে কঠিন লড়াইয়ে আমি প্রথম জেলা পরিষদ জয় করিয়ে আনি। আজ আপনার এত ক্ষমতা। আমি নিজে বলেছি আপনার দল জিতবে। অত ভালো বিধানসভায় ফল করার পর জয় তো নিশ্চিত। তারপরেও আমাদের প্রার্থীদের ধমকানো, চমকানো, ইলেকশন কমিশনকে দিয়ে প্রার্থী অবৈধ করিয়ে দেওয়া , জোর করে সব কিনে নেওয়া আমাদের লোকেদের আগে থেকেই করছিলেন। এখন এই ভোটেও এগুলো করানোর কোনও দরকার ছিল না। আমি যেটা পেরেছিলাম ক্ষমতায় থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা করতে পারেননি। সেই সাহস নেই তৃণমূল কংগ্রেসের'। এভাবেই তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
লড়াইটা বামেদের সঙ্গেই, খাদে পড়লে আর উঠতে পারবেন না উনি! তাহেরপুর জয়ের পরে প্রতিক্রিয়া সূর্যকান্তের
সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে অধীর গড়! তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কংগ্রেসের দখলে ছিল বহরমপুর পুরসভা। কিন্তু সবুজ ঝড়ে সেই দুর্গের পতন ঘটেছে। তৃণমূলের দাপটের সামনে পারেনি কংগ্রেস প্রার্থীরা। আর এই জয়কে অধীর চৌধুরীর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জয় বলেই দাবি শাসকদল তৃণমূলের। এমনকি বিজেপিও এই পুরসভা থেকে পুরো সাফ হয়ে গিয়েছে। আর এই ফলাফল সামনে আসার পরেই সবুজ আবির খেলায় মেতে উঠলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
Recommended Video