বিজেপি-তৃণমূলের মুখের গ্রাস কি ছিনিয়ে আনতে পারবে বাম-কংগ্রেস! ঘোর দ্বন্দ্বে নজর একুশে
বিজেপি-তৃণমূলের মুখের গ্রাস কি ছিনিয়ে আনতে পারবে বাম-কংগ্রেস! ঘোর দ্বন্দ্বে নজর একুশে
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি বা তৃণমূলের মতো বাম কংগ্রেসও পাখির চোকে করেছে ২০২১-কে। তাঁরা এই ভোটকে পাখির চোখ করেই বাংলায় আবার প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে চাইছে। সেই কারণেই প্রশ্ন বিজেপি বা তৃণমূলে এখন আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে, তখন তারা কি পারবে বিজেপি-তৃণমূলের মুখে গ্রাস ছিনিয়ে নিতে।
তৃণমূলের রোগ ছেয়েছে বিজেপিতে
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দলে বিরোধী নেতাদের কলেবর বাড়ার পর থেকেই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব বেশি করে মাথাচাড়া দেয়। ২০১৯ নির্বাচনের আগে তা চরম আকার নে। সেই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়েই বিজেপি বাংলায় ১৮টি আসনে জয় হাসিল করেছিল। এখন তৃণমূলের সেই রোগ ছেয়েছে বিজেপিতে।
বিজেপি পারলে বাম-কংগ্রেস কেন পারবে না!
সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূলের দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি যদি মাত্র দেড়-দু বছরে রাজ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তাহলে সিপিএম এতদিনের সংগঠিত একটি পার্টি, কংগ্রেস প্রচীনতম পার্টি, তাঁরা কেন পারবে না প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে। কেন তারা তৃণমূল বা বিজেপির মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে পারবে না!
নতুন কমিটি গঠনের পরই দ্বন্দ্ব তীব্র বিজেপিতে
সম্প্রতি বিজেপিকে নতুন রাজ্য কমিটি গঠনের পরই দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে। আদি-নব্য দ্বন্দ্বে ফাটল তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিতে। তৃণমূলের মতো আদি-নব্য দ্বন্দ্বে জেরবার তারাও। তৃণমূল এবং সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আদি নেতারা।
একুশে যদি বুমেরাং হয় বিজেপির, কার ফায়দা
বিজেপির পুরনোদের অভিযোগ, বেশ কয়েকজন নতুন নেতাকে বিভিন্ন মোর্চার দায়িত্বে আনা হয়েছে। এবং বিজেপির রাজ্য কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেওয়া হয়েছে দলে নতুন আসা অনেককে। এর ফলে পুরনোদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সেই অসন্তুষ্টি বুমেরাং হতে পারে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে। তবে কার ফায়দা হবে, প্রশ্ন রয়েই যায়।
দলত্যাগীদের গুরুত্ব দলের জন্য ত্যাগীদের নয়!
অভিযোগ, যাঁরা আজ বিজেপির পদাধিকারী তাঁরা মূলত বাইরের লোক। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়ে তাঁরা মাথায় এসে বসেছেন। রাজ্য নেতৃত্ব বিজেপির পুরনো নেতাদের কথা ভাবেননি। দলের প্রতি তাঁদের উৎসর্গ বা ত্যাগকে উপেক্ষা করেছে তাঁরা। এতদিন তাঁরা যে দলটা করে এসেছেন, সমর্থন জানিয়ে এসেছেন বিজেপির কাজকর্মের, তাঁর কোনও দাম নেই রাজ্যের নেতৃত্বের কাছে।
বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চরমে একুশের আগে
তাঁদের আরও অভিযোগ, নতুন নেতারা হলেন সুবিধাবাদী, যাঁরা তাদের প্রাক্তন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দলকে বিপদে ফেলে নির্বাচনের আগে বিরোধী দলে যোগ দিয়েছিলেন। আবার তাঁরা বেগতিক বুঝলেই এই দলকেও বিপদে ফেলে দিতে পারেন। যাঁরা এতদিন দলের সেবায় নিয়োজিত ছিল, তাঁদের কথা দলের মনে পড়ল না। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক প্রবীণ নেতা এমনই ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
মুখের গ্রাস কি কাড়তে পারবে বাম-কংগ্রেস?
তৃণমূলে এতদিন যে সমস্যা ছিল সেই আদি-নব্য দ্বন্দ্বের বীজ এবার ছড়িয়েছে বিজেপিতেও। ফলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার ২০২১-এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলই। এই অবস্থায় বাম ও কংগ্রেসের কাছে মহা সুযোগ নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব বাড়িয়ে তোলার। তাই তৃণমূল-বিজেপির দ্বন্দ্ব কাজে লাগিয়ে বাম-কংগ্রেস কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তার দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
বিজেপিতে কি মুকুল গুরুত্ব হারাচ্ছেন, তৃণমূলের প্রশ্নে জল্পনা ফের তুঙ্গে